সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রুর মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
নীলাচল থেকে চৈতন্যদেব গৌড়-রামকেলি হয়ে ঝাড়খণ্ডের মধ্য দিয়ে কাশী, প্রয়াগ হয়ে বৃন্দাবন পরিক্রমায় গিয়েছিলেন। ঝাড়িখণ্ডের পথে আঞ্চলিক আদিবাসীদেরও সৌভাগ্য হয়েছিল চৈতন্যসান্নিধ্যে আসার। তারা মুখর হয়েছিল কৃষ্ণনামগানে। চৈতন্য-চরিতামৃতে কৃষ্ণাদাস কবিরাজের লেখনী থেকে উৎসারিত হয়েছে—
‘‘মথুরা যাবার ছলে আসি ঝাড়িখণ্ড।
ভিল্ল প্রায় লোক তাঁহা পরম পাষণ্ড।।
নামপ্রেম দিয়ে কৈল সভার নিস্তার।
চৈতন্যের গূঢ়লীলা বুঝে শক্তি কার।’’
নামমগ্ন মহাপ্রভুর সংস্পর্শে ব্যাঘ্র, হরিণ প্রভৃতি তির্যক প্রাণীদের মুখেও উচ্চারিত হয়েছিল ভুবনপাবন হরিনাম। বৃন্দাবনযাত্রার পথে ঝাড়িখণ্ডের অরণ্যে—
‘‘কৃষ্ণ কৃষ্ণ কহ করি প্রভু যবে বৈল।
কৃষ্ণ কহি ব্যাঘ্র মৃগ নাচিতে লাগিল।।’’
বৃন্দাবনের লুপ্ততীর্থ উদ্ধার ছিল চৈতন্যজীবনের মহাব্রত। ব্রজধামের উপবন এবং কৃষ্ণলীলাস্থলীগুলি চৈতন্যদেবই চিহ্নিত করে যান।
তাঁরও আগে সর্বপ্রথম মাধবেন্দ্র পুরী বৃন্দাবনে এসে এই ধামের মাহাত্ম্য প্রচার করেন এবং বৃন্দাবনে গোপালমূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন।
বৃন্দাবন পরিক্রমা কালে চৈতন্যদেব কতকাল বৃন্দাবনে ছিলেন তা জানা যায় না। তবে তিনি তাঁর বহু ভক্তকে স্থায়ীভাবে বসবাস করবার জন্য ব্রজধামে প্রেরণ করেন। লোকনাথ গোস্বামী, ভূগর্ভ মিশ্র এবং একে একে ষড় গোস্বামীকে মহাপ্রভু বৃন্দাবনে পাঠিয়েছিলেন। শ্রীরূপ-সনাতন-রঘুনাথ ভট্ট-রঘুনাথ দাস, গোপাল ভট্ট এবং শ্রীজীব প্রমুখ ছয় গোস্বামী বৃন্দাবনে বিভিন্ন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। সনাতন গোস্বামী এবং রূপ গোস্বামী যথাক্রমে মদনমোহন মন্দির ও গোবিন্দজীর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। গোপাল ভট্ট এবং শ্রীজীব গোস্বামী প্রতিষ্ঠা করেন যথাক্রমে রাধারমণজীর মন্দির এবং রাধাদামোদরজীর মন্দির। লোকনাথ গোস্বামী এবং শ্যামানন্দ গোস্বামী যথাক্রমে গোকুলানন্দজীর এবং শ্যামসুন্দরজীর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। হরিদাস গোস্বামী প্রতিষ্ঠা করেন বৃন্দাবনের বঙ্কুবিহারীজীর মন্দির। গোবিন্দ-গোপীনাথজীর শ্রীমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজ মানসিংহ। মহাপ্রভুর প্রত্যক্ষ প্রেরণা এবং ঐকান্তিক প্রযত্নেই পুণ্যতীর্থ বৃন্দাবন ধামের নব উজ্জীবন।