সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রুর মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
‘কোন চিন্তা, কোন বাক্য বা কোন কার্যই আমার বন্ধন উৎপন্ন করতে পারে না। আমি ইন্দ্রিয়াতীত, আমি চিদানন্দস্বরূপ।’
‘অস্তি নাস্তি’ কিছুই নেই, সবই আত্ম-স্বরূপ। সবই আপেক্ষিক ভাব। সমুদয় দ্বন্দ্ব দূর করে দাও, সব কুসংস্কার ঝেড়ে ফেলো, জাতি ফুল দেবতা—আর যা কিছু সব চলে যাক। ব্রহ্ম হওয়া বা হয়ে যাওয়া—এ সবের কথা কেন বলো? দ্বৈত বা অদ্বৈত বাদের কথাও ছেড়ে দাও। তুমি দুই ছিলে কবে যে, দুই ও একের কথা বলছ? এই জগৎপ্রপঞ্চ সেই নিত্যশুদ্ধ ব্রহ্মমাত্র, তিনি ছাড়া আর কিছু নয়। যোগের দ্বারা শুদ্ধ হবো—এ কথা বলো না, তুমি স্বয়ং যে শুদ্ধ-স্বভাব। কেউ তোমায় শিক্ষা দিতে পারে না।
যিনি এই গীতা লিখেছেন, তাঁর মতো লোকেরাই ধর্মটাকে জীবন্ত রেখেছেন। তাঁরা বাস্তবিকই সেই ব্রহ্মস্বরূপ উপলব্ধি করেছেন। তাঁরা কোন কিছু গ্রাহ্য করেন না, শরীরের সুখদুঃখ গ্রাহ্য করেন না, শীত-উষ্ণ বা বিপদ-আপদ বা অন্য কিছু—মোটেই গ্রাহ্য করেন না। জলন্ত অঙ্গার তাঁদের দেহকে দগ্ধ করতে থাকলেও তাঁরা স্থির হয়ে বসে আত্মানন্দ সম্ভোগ করেন, গা যে পুড়ছে, তা তাঁরা টের পান না। ‘জ্ঞাতা-জ্ঞান ও জ্ঞেয়-রূপ ত্রিবিধ বন্ধন দূর হয়ে যায়, তখনই আত্ম-স্বরূপের প্রকাশ হয়।’
‘যখন বন্ধন ও মুক্তি-রূপ ভ্রম চলে যায়, তখনই আত্মস্বরূপের প্রকাশ হয়।’ ‘মনঃসংযম করে থাকো তাতেই বা কি, না করে থাকো তাতেই বা কি? তোমার অর্থ থাকে তাতেই বা কি, না থাকে তাতেই বা কি? তুমি নিত্যশুদ্ধ আত্মা। বলো: আমি আত্মা, কোন বন্ধন কখনও আমার কাছে ঘেঁষতে পারে নি। আমি অপরিণামী নির্মল আকাশ-স্বরূপ; নানাবিধ বিশ্বাস বা ধারণারূপ মেঘ আমার উপর দিয়ে চলে যেতে পারে, কিন্তু আমাকে তারা স্পর্শই করতে পারে না।’ ‘ধর্মাধর্ম’—পাপপূণ্য উভয়কেই দগ্ধ করে ফেলো। মুক্তি ছেলেমানুষি কথামাত্র। আমি সেই জ্ঞান-স্বরূপ, আমি সেই পবিত্রতা-স্বরূপ।’ ‘কেউ কখন বদ্ধ হয়নি, কেউ কখন মুক্তও হয়নি। আমি ছাড়া কেউ নেই। আমি অনন্তস্বরূপ, নিত্যমুক্ত স্বভাব। আমাকে আর শেখাতে এসো না—আমি চিদঘন্স্বভাব, কিসে আমার এই স্বভাব বদলাতে পারে? কাকেই বা শেখানো যেতে পারে? কে শেখাতে পারে?’
তর্কযুক্তি, জ্ঞানবিচার ছুঁড়ে আঁস্তাকুড়ে ফেলে দাও। বদ্ধস্বভাব লোকই অপরকে বদ্ধ দেখে, ভ্রান্ত ব্যক্তিই অপরকে ভ্রান্ত মনে করে, যে অপবিত্র সেই অপবিত্রতা দেখে থাকে।’ দেশ-কাল-নিমিত্ত—এ-সবই ভ্রম। তুমি যে মনে করছ তুমি বদ্ধ আছ মুক্ত হবে—এটাই তোমার রোগ। তুমি অপরিণামী সত্তা। কথা বন্ধ কর, চুপ করে বসে থাকো—সব জিনিস তোমার সামনে থেকে উড়ে যাক—ওগুলি স্বপ্নমাত্র। পার্থক্য বা ভেদ বলে কোন কিছু নেই, ও-সব কুসংস্কার মাত্র। অতএব, মৌনভাব অবলম্বন কর, আর নিজের স্বরূপ অবগত হও। ‘আমি আনন্দ-স্বরূপ।’ কোন আদর্শের অনুসরণ করবার দরকার নেই—তুমি ছাড়া আর কি আছে? কিছুতে ভয় পেও না।