কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
নেতাই গ্ৰামে শ্রদ্ধার সঙ্গে শহিদ দিবস পালন করা হয়। ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শহিদ বেদিতে তৃণমূল নেতারা একে একে মাল্যদান করেন। শহিদ পরিবারের সদস্যদেরও আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। এদিন মঞ্চে বক্তাদের ভাষণে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বার বার উঠে আসে। গণহত্যার পর ১৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তরা একে একে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। এলাকায় ফিরে এসে অনেকেই আবার সক্রিয় রাজনীতি করছেন। যা নেতাই গ্ৰামবাসীদের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। জেলা নেতৃত্বের গলাতেও এদিন ক্ষোভ ফুটে উঠেছে। গণহত্যার মামলার তদন্ত প্রথমে সিআইডি শুরু করে। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার যায়। সিপিএমের তৎকালীন বিনপুর জোনাল সম্পাদক অনুজ পান্ডে সহ ২০ জন সিপিএম নেতাকর্মীকে গ্ৰেপ্তার করা হয়। যদিও গণহত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুজ পান্ডে তপন দে, ডালিম পান্ডেরা জামিন পেয়ে যান। এরপরেই প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়, রাজনৈতিক মামলার ঘটনায় সিবিআইয়ের যে অতি তৎপরতা চোখে পড়ে, নেতাই মামলার ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না কেন। শহিদ তর্পণের অনুষ্ঠানে এসে তৃণমূল নেতা জয় প্রকাশ মজুমদার বলেন, নেতাই গণহত্যার পরের দিন সিপিএমের পুলিস বাহিনী রাস্তা আটকে দিয়েছিল। হার্মাদ বাহিনীরা লালগড় এলাকা ঘিরে রেখেছিল। অকুতোভয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার পরের দিন শহিদ পরিবারের সদস্যদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি কোনওদিন নেতাইকে ভুলে যাননি। প্রতিটি একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশে নেতাই পরিবারকে কাছে ডেকে নিয়েছেন। সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে চার্জশিট পেশ হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একজনেরও সাজা হয়নি। সিবিআইকে তার কৈফিয়ত দিতে হবে। যাদের হাত রক্তে লাল তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালে নির্দেশ দিয়েছিল দুই বছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। কোন অজ্ঞাত কারণে সিবিআই নিষ্ক্রিয় সেটা জানতে চাই। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গলাতেও শোনা যায় একই সুর। তিনি বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, এলাকার মানুষের রক্তাক্ত হওয়ার কথা। সেদিনের কথা স্মরণ রেখে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। গ্ৰামবাসী অঞ্জু ঘোড়াই বলেন, স্বামীকে হারানোর যন্ত্রণা বয়ে চলেছি। সেদিন যারা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল, আজও তাদের বিচার হয়নি। বছরের পর বছর ধরে বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছি। তুষার ঘোড়াই বলেন, তখন ছোট ছিলাম। গুলিতে মায়ের মাথার খুলি উড়ে গিয়েছিল। অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক এটাই চাই।-নিজস্ব চিত্র