কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
মঙ্গলবার সকালে হাতে বাল্যবিবাহ রোধের প্ল্যাকার্ড নিয়ে ছাত্রীদের পদযাত্রায় স্কুলের একাধিক শিক্ষিকা সহ শহরের ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা দলের সদস্যরা অংশ নেন। এদিন স্কুল চত্বর থেকে পুরসভাগামী রোড হয়ে মালদহ থানা চত্বর, মোকাতিপুর, পিরোজপুর সহ বিভিন্ন এলাকা জুড়ে পদযাত্রা হয়। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় অভিভাবকেরা। কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলটি তৈরি হয় ১৮৮০ সালে। শহরের মধ্যে এই বালিকা বিদ্যালয়টি বেশ পুরনো। পড়াশোনা ভালো হওয়ায় অভিভাবকেরা ওই স্কুলে ছাত্রীদের ভর্তি করেন। স্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৬০০ ছাত্রী রয়েছে।
কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু মেয়ে স্কুলছুট হয়ে যাচ্ছে। প্রায় অনুপস্থিত থাকছে। মাঝেমধ্যে দেখা যায় তারা নির্দিষ্ট দিনে রেজিস্ট্রেশন করতেও আসে না। আবার অনেকে পরীক্ষাও দিতে আসছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সেই ছাত্রীদের অনেকের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তারা অনেকেই নিজের ইচ্ছেয় বিয়ে করে নেয়। আবার সম্বন্ধ করে বিয়ে দেওয়ার সংখ্যাও কম নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিভাবকরা দাবি করেন, ভালো ছেলে পেয়েছেন বলে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। সেই প্রবণতা দূর করতে স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী অংশুমিতা দত্তর কথায়, আর নয় বাল্য বিয়ে। আমরা সবাই এগিয়ে যাব স্বপ্ন নিয়ে। পদযাত্রায় এমন সব স্লোগান দিয়ে আমরা বাল্যবিবাহ আটকানোর চেষ্টা করছি।
অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার সেই ধারা বন্ধ করতেই মুলত এই র্যালির ভাবনা। অভিভাবক সহ মেয়েদের সচেতন করলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে মনে করছেন শিক্ষিকারা।
প্রধান শিক্ষিকা সুস্মিতা দাস বলেন, আমরা যতটা পারি বাল্য বিবাহ আটকানোর চেষ্টা করি। এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া উচিত। আমরা মনে করি মেয়েরা সমাজ তৈরি করার কারিগর। মেয়েরা শিক্ষিত না হলে সমাজ কখনও উন্নত হবে না। ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। পদযাত্রার মাধ্যমে সেসব বোঝানো হয়েছে। গম্ভীরা গানেও ছাত্রীদের পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা ছিল। গম্ভীরা শিল্পী অন্নপূর্ণা দাসের কথায়, মানুষকে এমনি কোনও বার্তা দিলে মনোযোগ সহকারে শোনেন না। গম্ভীরা গান ঘিরে শহরের মানুষের অনেক আবেগ। সেজন্য সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্কুলে আমাদের ডাকা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান করেছি। ১৮ বছরের নীচে বিয়ে না দেওয়া নিয়ে সচেতন করেছি।