কাজকর্মে উন্নতি। ব্যবসায় গতি বৃদ্ধি। ব্যবসা ক্ষেত্রে লগ্নিবৃদ্ধির প্রচেষ্টায় সাফল্য। সন্তান বিষয়ে কোনও সুখবর পেতে ... বিশদ
কৃষ্ণনগরের সদরের মহকুমাশাসক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় বাংলার বাড়ি নিয়ে সমীক্ষা করেছি। যাতে প্রকৃত যোগ্যরা কোনওভাবেই বঞ্চিত না হয়।’ সৃষ্টিধরবাবু বাংলার বাড়ি প্রকল্পে উপযুক্ত উপভোক্তা বলেই ছাড়পত্র দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুরু থেকেই বাংলার বাড়ি প্রকল্পে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরও সমীক্ষার সময় রাজনৈতিক স্বজন-পোষণের অভিযোগ তুলে বাজার গরম করছিল গেরুয়া শিবির। বেছে বেছে তৃণমূল সমর্থকদের ঘর দেওয়া হবে বলে দাবি করছিলেন বিজেপির তাবড় নেতারা। কিন্তু বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যে রাজনীতির রং দেখা হয়নি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ভীমপুর পঞ্চায়েতের পাকুরগাছি এলাকার বিজেপি সদস্য সৃষ্টধরবাবু।
কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা এলাকা গেরুয়া শিবিরের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে এই বিধানসভা এলাকায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে। ভীমপুর পঞ্চায়েত তার ব্যতিক্রম নয়। সেই পঞ্চায়েতের পাকুরগাছির ৮৭ নম্বর বুথ থেকে গতবছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ান আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত সৃষ্টিধর রায়। ভালো ভোটেই জেতেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের পঞ্চায়েত সদস্য হয়েও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি।
ভীমপুর বাজার থেকে মথুরাপুর যাওয়ার রাস্তার ধারে সরু গলির ভিতরেই তাঁর কাঁচাবাড়ি। পাটকাঠি দিয়ে ঘেরা রান্নাঘর। মাথার উপরে টালির ছাদ। বর্ষায় দিনে ঘরের মধ্যে জলে পড়ে। ঝড় ঘর ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। সেই ঘরেই পরিবারের আট সদস্যের বাস। স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই বউমা, এক নাতি-নাতনি সকলেই কোনওরকমে মাথা গুঁজে থাকেন। বাড়িতে মেয়ে জামাই এলে জায়গার সমস্যা আরও বাড়ে। মাঠে খেটে সংসার চালান সৃষ্টিধরবাবু।
এদিন তিনি আক্ষেপের সুরে বলছিলেন, ‘আমি ভীমপুর পঞ্চায়েতের বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্য। অনেক আগে বাড়ির জন্য আবেদন করেও ঘর পাইনি। খুব কষ্ট করে কাঁচাবাড়িতে ছিলাম। এবার রাজ্য সরকারের অনুদানে পাকাবাড়ি তৈরি করব। সম্প্রতি টাকাও ঢুকেছে। আমারখুব সুবিধা হল। এবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালোভাবে থাকতে পারব। রাজ্য সরকার আমাকে ঘর দিয়েছে, তাকে তো ভালো বলতেই হবে।’ তাঁর স্ত্রী রেখা রায় বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে ছাদ থেকে জল পড়ে। তখন রান্না করাও যায় না। পাকাবাড়ি হয়ে গেলে সেই কষ্ট আর হবে না।
এলাকার তৃণমূল নেতা তথা নদীয়া উত্তর তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি সুশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘তৃণমূল সরকার রাজনৈতিক পরিচয় দেখে পরিষেবা দেয় না। এটা বিজেপির কালচার। ভীমপুরের বিজেপি সদস্য যোগ্য প্রাপক বলেই ওঁকে রাজ্য সরকার থেকে ঘর দিচ্ছে। এটা একটা বড় উদাহরণ।’
বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদার বলেন, ‘তৃণমূল টাকা চুরি করেছে বলেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পাঠানো আপাতত বন্ধ। কেন্দ্রের টাকাই ঘুরিয়ে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে।’