কর্ম নিয়ে স্থানান্তর গমনে সাফল্যের যোগ। কর্মে স্থানগত বা সংস্থাগত পরিবর্তন অসম্ভব নয়। পারিবারিক ক্ষেত্রে ... বিশদ
২৯০০ ফুট উচ্চতায় হিমালয়ের সিঞ্চুলা রেঞ্জের বক্সা পাহাড়ের দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম আদমা। সেখানেই বাড়ি। রাজাভাতখাওয়া পঞ্চায়েত অফিস থেকে যার দূরত্ব ৪৫ কিমি। এর মধ্যে সমতল সান্তালাবাড়ি থেকে ছয় কিমি পাহড়ের পাকদণ্ডি বেয়ে আদমায় পৌঁছতে হয়।
পাহাড়ি গ্রামে থেকে গোটা গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষের ভালো-মন্দ দেখা সম্ভব নয়। তাই মানুষের ও প্রধান হিসেবে সকলের কাজ করবেন বলে রাজাভাতখাওয়ায় বাড়ি ভাড়া করে থাকছেন। জেলার প্রথম ডুকপা সম্প্রদায় থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হওয়া এই পাহাড়িকন্যা সোনম।
জেলার একেবারে শেষপ্রান্তে বক্সা পাহাড়ের আদমা গ্রামের বাড়িতে এখন থাকেন শুধু সোনমের মা ও বাবা। বাবা মেষ পালক। তিন দাদার মধ্যে এক দাদা কাজ করেন ভুটানে। বাকি দুই দাদার মধ্যে একজন সামসি ও অন্যজন জয়গাঁতে কাজ করেন। দাদারাই সোনমের পড়াশোনার খরচ চালান।
২০১৮ সালে প্রথম পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েত সদস্য হন সোনম। তখনও তাঁর পড়াশোনা চলছিল। এরপর ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটেও সোনমকে টিকিট দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। এবার ভোটে জিতে সরাসরি প্রধান হন।
বক্সা পাহাড়ের ১৩টি পাহাড়ি জনপদের মানুষকে পঞ্চায়েত অফিসে আসতে হয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের ভিতর দিয়ে। সেই পথে পদে পদে বন্যপ্রাণীর ভয়। ফলে বক্সাবাসী প্রয়োজনের সময় যখন তখন পঞ্চায়েত অফিসে আসতে পারেন না। তাঁদের অসুবিধার কথা ভেবে সোনম সান্তালাবাড়িতে সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতের সাব অফিস চালু করে সেখানে সপ্তাহের মঙ্গলবার করে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সোনম বলেন, জনপ্রতিনিধির পদ চলে গেলে মানুষের জন্য আর কাজ করা যাবে না। তাই ভবিষ্যতে আমলা হতে চাই। আমলা হলে মানুষের জন্য আরও বেশি করে কাজ করার সুযোগ থাকবে।
তৃণমূলের রাজাভাতখাওয়া অঞ্চল সভাপতি গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য বলেন, সোনমকে প্রধান পেয়ে আমরা গর্বিত। মুখ্যমন্ত্রী সবসময় রাজ্যের জনজাতিদের উন্নয়নের কথা বলেন। তাই আমরা সোনমকে এবার পঞ্চায়েতের প্রধান করেছি। সোনম জংমো ডুকপা। - নিজস্ব চিত্র।