শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
করোনা সংক্রমণের সময় থেকেই দুঃস্থ, করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে বাড়িতে ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া সহ বিভিন্ন পরিষেবা দিয়ে আসছেন তাঁরা। এর পাশাপাশি যে সমস্ত উপার্জনহীন মানুষ রয়েছেন তাঁদের খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। শান্তিনিকেতনের রতনপল্লি, পূর্বপল্লি, দিগন্তপল্লি, রথীন্দ্রপল্লি ক্যানাল পাড়, প্রান্তিক, ভুবনডাঙ্গা এই বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রতিদিন নিয়মমাফিক দুপুরবেলা তিনজন নিরলসভাবে শ্রমদান করে চলেছেন দরিদ্রের সেবায়।
এই ত্রয়ীর ‘অমর’ অর্থাৎ অভিষেক কুমার বিশ্বভারতীর তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র। বাড়ি ঝাড়খণ্ড সীমানার রাজগ্রামে। তিনি বলেন, বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে সময় কাটতে চায় না, তাই শান্তিনিকেতন ফিরে এসে সমাজসেবামূলক এই কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেছি। দুঃস্থ মানুষদের খাবার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি শিশুদের দেওয়া হচ্ছে পুষ্টিকর খাদ্য ও দুধ। রোজ তাঁদের মধ্যে পৌঁছনোর ফলে আমাদের গাড়ির হর্নের আওয়াজ পেলেই শিশুরা যেভাবে আমাদের দেখে ছুটে আসে এতে আনন্দে মন ভরে ওঠে।
এদের সবার থেকে বড় ‘আকবর’ মানে শেখ সাবির আলি বিশ্বভারতীর জাপানিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ছাত্র। বাড়ি নানুরের থুপসাড়া পঞ্চায়েতে। তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় একশো গরিব দুঃস্থদের মধ্যে খাবার পৌঁছে একটা আত্মতৃপ্তি তৈরি হলেও আর্থিক বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই কাজের ফাঁকে শান্তিনিকেতনের বিশিষ্ট মানুষদের কাছে পৌঁছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করছি।
এদের মধ্যে সবথেকে ছোট কিন্তু কর্মযজ্ঞে সবথেকে অভিজ্ঞ লেসলি ফস্টার যাকে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সদস্যরা ‘অ্যান্টনি’ বলে ডাকে সে শান্তিনিকেতনের একটি বেসরকারি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কবে হবে জানা নেই। তাই ঘরে বসে সময় নষ্ট করতে বিন্দুমাত্র ইচ্ছুক নয় সে। তাঁর বক্তব্য, সদিচ্ছা থাকলে যে কোনও কাজে সম্ভব। দিনে সমাজসেবার কাজে ব্যস্ত থাকলেও রাতে পড়াশোনার জন্য সময় বরাদ্দ করা আছে। বাবা-মাও এই তার সমাজসেবার বিষয়টিকে উৎসাহ দেন। তার কাজ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দুঃস্থদের একটি তালিকা তৈরি করার পাশাপাশি শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য ও দুধ তুলে দেওয়া।বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের শান্তিনিকেতন শাখার কর্ণধার মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অমর, আকবর, অ্যান্টনি যেভাবে নিরলস সমাজসেবা করছেন তাতে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। খাবার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি, করোনা রোগীর বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া, রান্নার কাজে হাত বাড়ানো সবেতেই স্বতঃস্ফূর্ত ওঁরা।