ঢাকা: বাংলাদেশে ফের মৌলবাদীদের দাপাদাপি! কয়েকদিন আগেই ‘অমর একুশে’ বইমেলায় হামলা চালিয়ে তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ভাঙচুর চালানো হয় স্টলেও। শুক্রবার ঢাকার উত্তরায় বসন্ত উত্সব করতে দেওয়া হয়নি। এবার মৌলবাদীদের রোষে স্থগিত হয়ে গেল ঢাকা মহানগর নাট্য উত্সব। শনিবার এই উত্সব শুরুর কথা ছিল। মৌলবাদীদের চাপের কথা সরাসরি না বললেও নাট্য উত্সবের উদ্যোক্তা ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদ জানিয়েছে, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে, সকলের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাধ্য হয়ে নাট্যোৎসব আপাতত স্থগিত ঘোষণা করা হল।’ এদিকে, বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলতে তত্পরতা আরও বাড়িয়েছে ইউনুস সরকার। এবার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট (বিএস-১)-এর নামও পরিবর্তন করার পথে হাঁটছে তারা। কৃত্রিম উপগ্রহটির নাম বদলে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট করা হচ্ছে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ইউনুস সরকার। শনিবারই ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতয়ী স্টেডিয়ামের নামও বদলে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে শুধু জাতীয় স্টেডিয়াম নামে পরিচিত হবে এই মাঠ। শনিবার বিকেলে ঢাকার মহিলা সমিতি মিলনায়তনে শুরু হওয়ার কথা ছিল এবছরের নাট্য উত্সব। স্থির হয়েছিল প্রথম দিনই মঞ্চস্থ হবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি নাটক। কিন্তু উত্সব বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় চড়াও হয় মৌলবাদীরা। কথা না শুনলে হামলার হুমকিও দেওয়া হয়। নিরাপত্তা চেয়ে রমনা থানার দ্বারস্থ হন আয়োজকরা। এর পরেই কয়েকজন অনুষ্ঠানস্থলে এসে চড়াও হয়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে বরং নাট্য উত্সব বন্ধ রাখার জন্য আয়োজকদের পরামর্শ দেয় পুলিস। এর আগে শুক্রবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং পুলিশের অনুমতি নেওয়ার পরও উত্তরায় বসন্ত উৎসব করতে পারেনি জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ। জানা গিয়েছে, ইমন রহমান ফরহাদ নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা দলবল নিয়ে এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। এর পাশাপাশি ভ্যালেন্টাইন্স দিবসে ফুল বিক্রির ‘অপরাধে’ টাঙ্গাইলের ভুঁইয়াপুরে একটি দোকান ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। শনিবার সেখানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঘুড়ি উৎসবও।
অন্যদিকে, বইমেলায় তসলিমার বই বিক্রি বন্ধ কারার পর এক কবিকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ উঠেছে ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে। সোহেল হাসান গালিব নামে ওই কবির বই যে স্টলে বিক্রি করা হচ্ছিল, সেই স্টলটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, শুক্রবার রাতে পিরোজপুরে এক হিন্দু পরিবারের দোকান ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়। বাধা দেওয়ায় দুষ্কৃতীদের হামলায় আহত হন ১০ জন। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।