শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
বাবা ছিলেন মৎস্যজীবী। পরে তিনি নাম লেখান দস্যুদলে। বাবার হাত ধরে ছোট থেকেই সুন্দরবনের গভীরে যাতায়াত হাবিবের। শুরুতে সেও মধু সংগ্রহ, মৎস্যজীবীর পেশা বেছে নিয়েছিল। কিন্তু চোরাশিকারের চক্রে জড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। প্রথমে হরিণ মেরে মাংস, চামড়া বিক্রি। তারপর বাঘ। রয়্যাল বেঙ্গল শিকারের দক্ষতাই এই কুখ্যাত চোরাশিকারির নামের আগে জুড়ে দিয়েছিল ‘বাঘ’ শব্দটি। তার এক ছেলে ও জামাইও এই অপরাধচক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে খবর।
বাংলাদেশের অপরাধীদের ক্রমতালিকায় উপরের দিকে রয়েছে ৫০ বছর বয়সি হাবিব তালুকদারের নাম। সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অংশ হাতের তালুর মতো চেনা হওয়ায় পুলিসি অভিযানে প্রতিবারই পালাতে সক্ষম হয়েছে সে। সম্প্রতি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামে রাতের অন্ধকারে সন্তর্পণে হানা দেয় পুলিস। বাড়ির কাছ থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় হাবিবকে। স্থানীয় পুলিস প্রধান সাইদুল রহমান জানিয়েছেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হানা দিয়ে অবশেষে হাবিব তালুকদার ওরফে বাঘ হাবিবকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। বহু বছর ধরে চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।’ পুলিসের অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, বাঘের চামড়া, হাড়, এমনকী মাংসও চীন সহ বিভিন্ন দেশের কালোবাজারে বিক্রি করত হাবিব।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ‘বাঘ হাবিবে’র গ্রেপ্তারির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানান, ‘ধৃতের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী পাচার সহ একাধিক ধারায় মোট ৯টি মামলা রয়েছে। হাবিব খুবই ধূর্ত প্রকৃতির। গত এক বছরে আমরা তাকে ধরতে অন্তত চারবার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাই। কিন্তু প্রতিবার টের পেয়ে আগেই পালিয়ে যেত।’
দীর্ঘ দু’দশক পর কুখ্যাত এই চোরাশিকারি গ্রেপ্তার হওয়ায় খুশি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণ রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। ধৃতের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের একটি অংশের আরও অভিযোগ, পুলিস ও বনদপ্তরের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিকের সহযোগিতায় ‘বাঘ হাবিব’ এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। স্থানীয় এক মধু সংগ্রাহক আব্দুস সালাম বলেন,‘বাঘ হাবিব সম্পর্কে আমাদের মনে ভয় ও সম্ভ্রম, দুটোই একসঙ্গে কাজ করে। ভয়ঙ্কর লোক। জঙ্গলে বাঘের সঙ্গে একাই লড়াই করতে পারত।’ আঞ্চলিক বন সংরক্ষণ আধিকারিক মইনুদ্দিন খান এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এতদিনে হাবিবের গ্রেপ্তারি গোটা সুন্দরবনের কাছে স্বস্তির খবর বয়ে এনেছে।