নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নতুন বছরের শুরুতেই অনুপ্রবেশকারী বিরোধী অভিযান তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্যগুলিকে বলেছে, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতিমধ্যেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। মুম্বইতে বিগত তিনদিনে ১৯জন বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দিল্লিতে দু’দিন ধরে চলছে অভিযান। বৃহস্পতিবারও গুরুগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে অবৈধ নাগরিকরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর, ভুয়ো আধার কার্ড, জাল ভোটার কার্ড অথবা প্যান কার্ড ধরা পড়লেই গ্রেপ্তার করা হবে। এমনকী ওইসব নথির সপক্ষে বৈধ নথি দেখাতে না পারলে ওই তাবৎ পরিচয়পত্র বাতিল হবে। ধরে নেওয়া হবে জাল নথি দেখিয়ে আধার ভোটার প্যান কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। আর এসব ক্ষেত্রে সরাসরি সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে মামলা রুজু করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বক্তব্য, হিন্দু অথবা মুসলিম পরিচয়ে এই অভিযানের কোনও হেরফের হবে না। অভিযানে ধরা পড়লে অভিযুক্তরা যে ধর্মেরই হোক, একইভাবে সন্ত্রাসবাদী সন্দেহের মামলা রুজু করা হবে। দেশজুড়ে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে বাংলাভাষীদের বিরুদ্ধে অভিযানে যাতে প্রকৃত কোনও ভারতীয় নাগরিককে জেলে পাঠানো অথবা বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠানো না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ সেল তৈরি করা হয়েছে দিল্লি পুলিশে। ওই সেলের সদস্যরা প্রয়োজন হলে নিজেরাই সংশ্লিষ্ট রাজ্যে গিয়ে অভিযুক্তদের দেওয়া ঠিকানায় খোঁজখবর করবে। এদিকে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার বারংবার অনুপ্রবেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের দিকে আঙুল তুলেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ সাফ জানিয়েছে, তারা যাদের গ্রেপ্তার করেছে তারা জেরায় স্বীকার করছে পলাতক হিসেবে প্রত্যেকেই অসমের বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রবেশ করেছে। অথবা উত্তর পূর্ব ভারতের কয়েকটি সীমান্ত থেকে প্রবেশ করে অসমে এসে সেখান থেকে ট্রেনে চেপে দিল্লিতে এসেছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী যতই দাবি করুন যে অসম বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের করিডর নয়, দিল্লি পুলিশের বক্তব্য কিন্তু তার সঙ্গে মিলছে না।
অন্যদিকে মুম্বই, নান্দেড়, নাসিক, সম্ভাজীনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৯ জনকে। এই ১৯ জন জাল নথি দেখিয়ে ভারতের নানাবিধ পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছে। জঙ্গি দমন শাখা এই অভিযান চালিয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট ছাড়াও সন্ত্রাসের মামলাও রুজু করার কথা ভেবেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই নির্দেশিকাও রাজ্যে রাজ্যে দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে রবিবার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। নতুন বছরে কেন্দ্র কঠোর বার্তা দিতে চাইছে যে, আধার প্যান ভোটার কার্ড থাকলেই নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না। প্রমাণ করতে হবে যে, সেইসব পরিচয়পত্রের সপক্ষে গ্রহণযোগ্য নথিও আছে।