পরিবারের কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির স্বাস্থ্য সমস্যায় বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। পেশাদারি কাজকর্মে হঠাৎ বাধা আসতে পারে। ... বিশদ
২০২৪’এর মে মাসে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে এক নাবালিকাকে উদ্ধার করে আরপিএফ। তাকে স্টেশন সংলগ্ন পার্কিং এরিয়ায় গাড়িতে একা বসে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় আরপিএফের। নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায়, কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে আনা হয়েছে তাকে। আর সে একা নয়, সঙ্গে রয়েছে তার মতো অনেকে। পাচারের ছকটা স্পষ্ট হয়ে যায় আরপিএফের অফিসারদের কাছে। তাকে উদ্ধার করে জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপরই তদন্তভার নেয় সিআইডি। গোয়েন্দারা ওই কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াই তাকে সীমান্ত পার করিয়েছিল ‘ধুর পার্টিরা’। সূত্র হাতড়ে নারী পাচার চক্রের এক দালালকে গ্রেপ্তার করে তারা। তারপরই তদন্ত অন্যদিকে মোড় নেয়। জানা যায়, ১৮ থেকে ২২ বছরের কিশোরী ও তরুণীদের সীমান্তের এপারে আনা হচ্ছে। কেন? এই বয়সিদের ‘চাহিদা’ই সবচেয়ে বেশি। কলকাতা থেকে বিমানে চাপিয়ে তারপর পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বেঙ্গালুরু, দিল্লি, মুম্বই সহ দেশের নানা প্রান্তে। কাউকে এসকর্ট গার্ল হিসেবে কাজ করানো হচ্ছে পাঁচতারা হোটেলে, আবার কাউকে স্পা পার্লারের আড়ালে নামানো হচ্ছে দেহ ব্যবসায়। এমনকী কলকাতা সহ ভিন রাজ্যের বিভিন্ন নিষিদ্ধপল্লিতে অনেককে বিক্রি করা হয়েছে বলেও খবর। একের পর এক সূত্র এভাবে জোড়া লাগিয়েই দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এই চক্রের পান্ডা হল জগদীশ ওরফে জগা। বনগাঁর বাসিন্দা এই কিংপিনের সঙ্গে বাংলাদেশে নারী পাচারের বড় মাথাদের যোগ রয়েছে। পুলিস যাতে তার নাগাল না পায়, সেজন্য প্রতি সপ্তাহে সিম বদল করে জগা। সোর্স কাজে লাগিয়ে জানা যায়, সে ১১ ফেব্রুয়ারি বনগাঁয় আসবে। এরপরই টিম সেখানে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। আদালত সূত্রে খবর, বাংলাদেশের দালালদের থেকে ‘হ্যান্ডওভার’ নেওয়ার পরই জগা আগে ওই কিশোরী-যুবতীদের ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে ফেলত। তারপর কাটত বিমানের টিকিট। তাদের বিমানবন্দরের কাছাকাছি কোনও হোটেলে এনে তুলে দেওয়া হতো ভিন রাজ্যের দালালদের হাতে। অনেক সময় জগা নিজেও মেয়েদের ভিন রাজ্যে নিয়ে গিয়েছে বলে জেনেছে সিআইডি। এমনকী বেশি কিছু কিশোরী ও তরুণীকে সে থাইল্যান্ড সহ অন্য দেশে পাচার করেছে বলেও খবর।