ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এদিন জেলা তৃণমূল ভবনে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল ও শ্যামল সাঁতরাকে সঙ্গে নিয়ে দলে ফেরা পঞ্চায়েত সদস্য রবি সোরেন, মামনি লায়েক, সুমন্ত হাঁসদা ও বন্দনা লোহারদের হাতে স্থানীয় বিধায়ক অরূপ খাঁ দলীয় পতাকা তুলে দেন। অরূপবাবু বলেন, পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনিও খুব শীঘ্রই দলে ফিরবেন। আর তা যদি না হয় তাহলে আমরা দলত্যাগ বিরোধী আইনে প্রশাসনের কাছে আবেদন করে সদস্য পদ খারিজ করে নতুন করে প্রধান নির্বাচন করব।
বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই বিজেপি কাউকে মারধরের হুমকি আবার কাউকে মারধর করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ওন্দার কিছু পঞ্চায়েতের প্রধান ও সদস্যকে দলে যেতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু, জোর করে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে তাঁদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ালেও অন্তরে তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিল। তাই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই তাঁরা ফের তৃণমূলে ফিরেছেন। শুধু তাঁরাই নয়, যাঁদের ভয় দেখিয়ে জোর করে বিজেপি নিজেদের দিকে নিয়ে গিয়েছিল, তাঁদের অনেকেই ফের তৃণমূলে ফেরার জন্য যোগাযোগ করছেন।
ফের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর বন্দনা লোহার ও সুমন্ত হাঁসদা বলেন, লোকসভা নির্বাচনের পর আমাদের বাড়িতে গিয়ে বিজেপির লোকজন দল ছাড়ার জন্য হুমকি দিয়েছিল। দল না ছাড়লে বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। তাই প্রাণভয়ে বাধ্য হয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু, ওঁদের ওই কালচার আমরা মন থেকে মানতে পারিনি। তাই পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই মনের জোর নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসেছি।
যদিও তৃণমূল নেতা বা পঞ্চায়েত সদস্যদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজেপি। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার অবজার্ভার পার্থ কুণ্ডু বলেন, বিজেপি কখনও কাউকে ভয় দেখিয়ে দলে আনার চেষ্টা করেনি। আমাদের দল এই ধরনের কালচারে বিশ্বাস করে না। আসলে কিছু স্বার্থলোভী মানুষ লোকসভা নির্বাচনের পর দল বদল করে লুটেপুটে খাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু, বিজেপিতে থেকে তা সম্ভব নয় বুঝতে পেরে তারা ফের তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ভিড়ছে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের অখণ্ড বাঁকুড়া জেলার সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁর ওন্দা বিধানসভা কেন্দ্রে ২৬ হাজার ভোটে শাসক দলের প্রার্থী পরাজিত হয়। তারপরেই রাতারাতি ওন্দা বিধানসভার কাঁটাবাড়ি, নাকাইজুড়ি, রতনপুর, কল্যাণী ও চূড়ামণিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ সদস্য দল বদল করে বিজেপিতে যোগ দেয়। প্রধান ও উপপ্রধান সহ অধিকাংশ সদস্য দল বদল করায় পঞ্চায়েতগুলি রাতারাতি বিজেপির দখলে চলে যায়। তারপরেই জেলা সভাপতির পদ থেকে অরূপ খাঁকে দল সরিয়ে দিয়ে বাঁকুড়াকে লোকসভা ভিত্তিক বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করে দেয়। এরপরেই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জেলা নেতৃত্ব দল পরিবর্তন করা সদস্যদের ফেরানোর জন্য আলোচনা শুরু করে।