কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি ছাগল মেরে অর্ধেক খেয়েছিল জিনাত। পেট ভর্তিই ছিল। বনদপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান, খাওয়াদাওয়া সেরে ভাঁড়ারিয়া পাহাড়ের গুহাতেই সে আশ্রয় নিয়েছিল। যদিও বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই জিনাতকে পাকড়াও করতে সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছিলেন বনকর্তারা। জঙ্গলে পাতা হয়েছিল পাঁচটি খাঁচা। এলাকায় টহল শুরু করেছিল হুলা পার্টি। জিনাতকে দেখা মাত্রই ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করতে প্রস্তুত ছিল একাধিক শার্প শ্যুটার। সুন্দরবন স্টাইলে জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছিল জঙ্গল। তবুও কোনও টোপই কাজে এল না বনদপ্তরের কর্তাদের। সকলের চোখে ধুলো দিয়ে ভাঁড়ারিয়ার জঙ্গলকে বিদায় জানাল জিনাত। ফের শুরু করল ‘লংমার্চ’। এক রাতেই প্রায় ২০ কিমি হেঁটে শুক্রবার আশ্রয় নেয় মানবাজারের বোরো থানার ডাঙ্গরডি লাগোয়া ডুংড়িতে। এদিন ডিনারে ছাগলের টোপে পা দেয় সে। তৎক্ষণাৎ ঘুমপাড়ানি বন্দুক চালায় বনদপ্তরের কর্মীরা। কিন্তু, বাগে আনা যায়নি বাঘিনীকে। কারণ, গুলি জিনাতের গায়ে লাগেনি। তখনই বনদপ্তরের জাল টপকে বাইরে বেরিয়ে যায় সে।
বনদপ্তর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকেই লংমার্চ শুরু করে জিনাত। পাহাড়ী জঙ্গল থেকে বেরিয়ে সে নেমে আসে সমতলে। রাতভর হেঁটে ভোরের মধ্যেই প্রবেশ করে বোরো থানার ডাঙ্গরডিতে। চাষের জমির নরম মাটিতে পায়ের ছাপ মিলেছে বাঘিনির। যা নজরে আসতেই আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাস্থলে জাল নিয়ে পৌঁছন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। আধিকারিকদের দাবি, ২৯ হেক্টর জায়গাজুড়ে রয়েছে ডাঙ্গরডির ডুংড়ি। আশেপাশে বোরো, বুরুডি, ধরমপুর, শুশুনিয়া, পাঁড়রা, পাঁইসাগোড়া সহ একাধিক গ্রাম রয়েছে। কোনওভাবে যদি বাঘ সেই এলাকায় ঢুকে যায়, তাহলে বিপদের শেষ থাকবে না। তাই শুক্রবার সকাল থেকে গোটা এলাকা জাল দিয়ে ঘেরা শুরু করেন বনদপ্তরের কর্মীরা।
শুক্রবার সূর্য ডুবতেই বাঘিনিকে বাগে আনার অপারেশন শুরু হয়। গত ছ’দিন ধরে যা যা চেষ্টা করা হচ্ছে, শুক্রবারও তারই পুনরাবৃত্তি! তবে আরও আঁটোসাঁটো ও জোরদারভাবে। এদিন মহিষের খাঁচার পাশেই থাকছে পৃথক একটি খাঁচা। তার ভিতরে ট্র্যাঙ্কুলাইজ করার জন্য থাকছে শার্প শ্যুটার। এতকিছু সত্ত্বেও বাঘিনী ধরা পড়বে কি না, সেব্যাপারে নিশ্চিত নন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাত বলেন, ভাঁড়ারিয়া যতটা দুর্গম ছিল, তার তুলনায় এই এলাকা অপারেশনের জন্য অনেক বেশি সুবিধাজনক। তবে আধিকারিকদের একাংশের আবার বক্তব্য, যে জাল দিয়ে জঙ্গলঘেরা হয়েছে, তা তিন বছর বয়সি তরতাজা জিনাতের কাছে লাফিয়ে পার করা নাকের নস্যি! তাই জাল দিয়ে ঘিরে বাঘিনি ধরার পরিকল্পনা মাঠে মারা যাবে না তো? সারাদিন নজরে রেখেও শেষ রাতে আশঙ্কাই সত্যি হল।