Bartaman Patrika
সাপ্তাহিক বর্তমান
 

আয়ু বাড়ানোর ডায়েট
শতভিষা বসু

খাদ্যের সঙ্গে কি দীর্ঘায়ু হওয়ার কোনও যোগ আছে?
প্রতিটি জাতির আলাদা আলাদা গড় আয়ু আছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আয়ুষ্কাল মোটামুটি ৭০ বছর। ২৫ বছর আগে যা ছিল ৬২! আবার একজন মার্কিনির আয়ু প্রায় ৮০ বছর! ভারত বা বিদেশ— এতখানি আয়ুবৃদ্ধির পিছনে চিকিত্‍সাশাস্ত্রের উন্নতির যথেষ্ট হাত রয়েছে। তাহলে আয়ুবৃদ্ধি মানে যদি শুধু বেঁচে থাকা হয় সেক্ষেত্রে একজন গত একযুগ ধরে শয্যাশায়ী শতায়ু রোগীও দীর্ঘায়ু হতে পারেন! আবার ডাম্বেল-বারবেল নিয়ে এক্সারসাইজ করেন এমন নবতিপরও দীর্ঘায়ু! তাহলে প্রশ্নটা হওয়া উচিত খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে কি সুস্থ সবলভাবে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা সম্ভব?

তাহলে ডায়েট দিয়ে কী করা সম্ভব? অসুখ-বিসুখ দূরে রাখা যায়?
নিশ্চিতভাবে দূরে রাখা যায়। ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল, অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস, ইউরিক অ্যাসিড— এমন নানা মেটাবলিক ডিজঅর্ডারের সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস ও ক্রনিক অসুখের যোগ আছে। তাই প্রতিদিন নিয়ম মেনে যতটুকু দরকার ততটা খাবার খাওয়া প্রয়োজন। খেতে হবে সুষম খাবার। অর্থাত্‍ প্রতিদিনের ডায়েটে থাকতে হবে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, খনিজ ইত্যাদি। তাহলেই আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ স্বাভাবিক থাকবে ও অসুখও হবে না। আরও কিছু অসুখের কথা আলাদা করে বলা দরকার। যেমন লিভারের সমস্যা। আমরা যদি নিয়মিত ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড খেতে থাকি তাহলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা তৈরি হবে। আমাদের লিভার নষ্ট হতে থাকবে। কিংবা সঠিক সময়ে যদি আমরা খাবার না খাই তাহলে লিভার থেকে যে এনজাইম বেরয় তা খাদ্য হজম করতে না পেরে বরং লিভারের কোষগুলিকেই ধ্বংস করতে শুরু করে। সেখান থেকে লিভার সিরোসিস হওয়ার আশঙ্কা এড়ানো যায় না। আবার কেউ কেউ শুধু কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খান। তাতে কার্বোহাইড্রেট বেশি খাওয়ার অভ্যেস তৈরি হয় যা আবার একসময় ডেকে আনে ডায়বেটিস, ফ্যাটি লিভারের আশঙ্কা। আবার কিছু ব্যক্তি কার্বোহাইড্রেট খুব কম খান। শুধু প্রোটিন খান। তাতে আবার কিডনির উপর খুবই চাপ পড়ে। কিডনির কার্যকারিতা কমতে থাকে। সুতরাং ব্যালেন্স ডায়েট চালিয়ে যেতে পারলে সেক্ষেত্রে যেসব অসুখ আমরা নিজেদের কুঅভ্যেসের কারণে ডেকে আনি, সেসব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারব।

সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা প্রচলিত কথা আছে। তা হল, শরীরেরও ক্ষয় হয়। ক্ষয় হয় বলেই মানুষ একসময় মারা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, এই ক্ষয় কি কোনওভাবে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি?
পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা মুশকিল তবে ক্ষয়ের গতি মন্থর করা যেতে পারে। ক্ষয় কোথায় হয়? হাড়ের ক্ষয় হয়, ক্ষয় হয় পেশিতে। শরীরের অন্য অঙ্গগুলিতেও ক্ষয় দেখা দেয়। তাহলে পেশির ক্ষয় রোধ করতে হলে সঠিক মাত্রায় খেতে হবে প্রোটিন। হাড় ঠিক রাখার জন্য দরকার প্রচুর মাত্রায় ক্যালশিয়াম। তার সঙ্গে খেতে হবে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট। হার্ট ও কিডনির সমস্যা দূরে রাখতে হলে ক্যালোরি মেপে খেতে হবে। নুন, তেল বেশি আছে এমন খাদ্য খাওয়া যতদূর সম্ভব কমাতে হবে। কারণ আগেই বলেছি ওই খাদ্যগুলি শরীরের নানা অঙ্গে কুপ্রভাব ফেলে।

ফ্রি র‌্যাডিক্যালস নিয়ে প্রচুর কথা হয়। ফ্রি র‌্যাডিক্যালস বাড়লে নাকি শরীর অসুখ হয়? ফ্রি র‌্যাডিক্যালস কী? কীভাবে শরীর খারাপ করে? ফ্রি র‌্যাডিক্যালস-এর মাত্রা কীভাবে কমানো যেতে পারে?
আমাদের শরীর অসংখ্য কোষ দিয়ে তৈরি। কোষগুলি অবিরাম কাজ করে চলেছে। কাজ করছে বলেই আমরা প্রতিদিন হেঁটে চলে বেড়াতে পারছি, হাত-পা নাড়াতে পারছি। কোষগুলি যেন এক একটা কারখানা। ফলে কারখানায় যেমন বর্জ্য তৈর হয়, তেমনই কোষগুলিও এক ধরনের আয়ন তৈরি করে। এই আয়নগুলি দেহ থেকে বেরিয়ে না গেলে তখন শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে, রক্তে জমতে থাকে। এই আয়নগুলিই ফ্রি র‌্যাডিক্যালস। এই ফ্রি র‌্যাডিক্যালস-এর মাত্রা বাড়লে হতে পারে হার্টের অসুখ, কারণ হার্টের মাধ্যমেই সারা শরীরে রক্ত প্রবাহিত হয়। এছাড়া প্রভাব ফেলতে পারে আমাদের স্নায়ু তন্ত্রে। এর ফলে অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়ার মতো উপসর্গ দেখা যেতে পারে। আর রক্ত যেহেতু সারা শরীরে প্রতিটি অঙ্গে পৌঁছয়, তাই চোখেও পড়ে প্রভাব। বেড়ে যায় ছানি পড়ার আশঙ্কা। সবথেকে প্রভাব পড়ে অটোইমিউন সিস্টেমে। এর ফলে দেখা দিতে পারে অটোইমিউন ডিজিজ। ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেড়ে যায় ডব্লিউ বিসি কাউন্ট, কমে যায় রেড ব্লাড সেল প্রোডাকশন, উদাহরণ হিসেবে থ্রম্বসাইটোপিনিয়া, 

খাদ্যের সঙ্গে কি ফ্রি র‌্যাডিক্যালস-এর বৃদ্ধি বা হ্রাসের কোনও সম্পর্ক আছে?
অবশ্যই আছে। একাধিক এমন খাদ্য আছে যা খেলে শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালস-এর মাত্রা বেড়ে যায়। এমনই একটি খাদ্য হল ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড ইত্যাদি। প্রসেসড ফুড নিয়ে আগে কথা বলা উচিত। ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর এই ধরনের খাদ্য। বাজার চলতি চিপস, রেডি টু ইট ফুড-এ থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রিজারভেটিভ। এই প্রিজারভেটিভ খাদ্যকে দ্রুত পচনের হাত থেকে রক্ষা করে যেমন, সেই একই প্রিজারভেটিভ শরীরে বেশি মাত্রায় প্রবেশ করার পর বাড়িয়ে দেয় ফ্রি র‌্যাডিক্যালস-এর মাত্রা। আবার স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন ডালডা, ঘি বেশি খেলেও শরীরে বাড়ে ফ্রি র‌্যাডিক্যালস-এর মাত্রা। এমনকী একই তেল বারাবার রান্না করার জন্য বা ভাজাভুজির জন্য ব্যবহার করলেও শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরি হয়। এই কারণেই প্রসেসড ফুড, ক্যান ফুড পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে বলা হয়। এছাড়া রান্নায় কেমন তেল ব্যবহার করছেন তার উপরেও নির্ভর করে শরীরে কতখানি ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরি হবে সেই বিষয়টিও। আবার বেশি তেল খাওয়াও আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মোনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড যদি সমান সমান মাত্রায় ব্যবহার করা যায় তাহলে শরীরে সেভাবে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। 

রান্নার কি কোনও পদ্ধতি রয়েছে যা মেনে চলা দরকার?
হ্যাঁ, উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে তেলের ফ্যাটি অ্যাসিডের চেনগুলি ভাঙতে থাকে। তৈরি হয় শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর উপাদান। এছাড়া কোনও রান্নাই উচ্চ তাপমাত্রায় করা উচিত নয়। মাঝারি আঁচে রান্না করা উচিত। মোট কথা খেয়াল রাখতে হবে, তেল যেন পুড়ে না যায়।

যে কোনও রান্নাই মাঝারি আঁচে করা উচিত। তাতে খাদ্যের পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।
খাদ্যের মাধ্যমে কি ফ্রি র‌্যাডিক্যালস কমানো যেতে পারে? ফ্রি র‌্যাডিক্যালস কমানোর সবচাইতে বড় উপায় হল খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ানো। কারণ কোষ একধরনের ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরি করে যার মাত্রা কমানো সম্ভব নয়। তবে খাবারের মাধ্যমে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ানো যেতেই পারে। আর তার জন্য রান্নার পদ্ধতিকে অবশ্যই ঠিক রাখতে হবে।

ভারতীয় সংস্কৃতিতে বাসি খাবার খেতেও নিষেধ করা হয়। কারণ মনে করা হয়, বাসি খাবার শরীরে রোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। অনেকেই বাড়িতে তিন থেকে চারদিনের রান্না করে রাখেন ও ফ্রিজে স্টোর করেন। এই অভ্যেস কতটা ক্ষতিকারক?
প্রসেসড ফুড বা সংরক্ষিত খাদ্য নিয়ে আগেই বলা হয়েছে। সংরক্ষিত খাদ্য মানে আখেরে সেই বাসি খাদ্যই। বর বউ অফিসেই বেশিরভাগ সময় কাটান। রান্না করার সময় থাকে না। এমন ক্ষেত্রে খানিকটা রান্না আগে থেকে করে স্টোর করে রাখতে হতেই পারে।

প্রশ্ন হল কত সময় ধরে সেই রান্না স্টোর করা যেতে পারে? দেখা যাক।
এমনিতে প্রত্যেকটি আলাদা খাদ্যের নিজস্ব আয়ুষ্কাল রয়েছে। যেমন ধরুন মাছ এবং মাংস— মোটামুটি ১ দিন অবধি সংরক্ষণ করা যায়। অর্থাত্‍ আজ সকালে রান্না করা খাবার পরের দিন সকাল অবধি খাওয়া যায়। তাতে পুষ্টিগুণের বিরাট হেরফের হয় না। তবে তার চাইতে বেশি সময় ধরে খাদ্য সংরক্ষণ করতে থাকলে খাদ্যের আয়ুষ্কাল শেষ হওয়ার কারণে পুষ্টিগুণও ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সুতরাং শরীর যদি সঠিক মাত্রায় পুষ্টিই না পায় তাহলে শরীর কাজ করবেই বা কীভাবে। 

বারবার খাবার গরম করা কতটা ক্ষতিকর?
আমরা যে খাবারটা রান্না করি তখন একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তা তৈরি করা হয়। রান্না করার সময়েও খানিকটা খাদ্যগুণ নষ্ট হয়। এরপর ফের তাকে গরম করলে তার মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে থাকে। সুতরাং যত বেশিবার খাদ্য গরম করা হবে, ততই খাদ্যগুণ নষ্ট হতে থাকবে। 

খাবারের পুষ্টিগুণ অটুট রাখার ক্ষেত্রে খাবারের পাত্র কতখানি গুরুত্ব রাখে?
ফুড কন্টেনারে ফুড গ্রেড লেভেল লেখা থাকে। ফলে কোনও পাত্র তা সে প্লাস্টিকের হোক বা মেলমাইন পাত্র হোক— খাবার রাখার আগে ফুড গ্রেড লেভেল দেখে নিন। তবে ফুড গ্রে়ড লেখা নেই এমন পাত্রে খাবার কিনে খেলে অলিখিতভাবে ধরে নিতে হবে যে সেই খাবারের খাদ্যগুণ খানিকটা নষ্ট হয়েছে।

এখন একটা কনসেপ্ট শুরু হয়েছে, আমাদের যত বয়স বাড়ে, ততই শরীরের অন্দরে আমরা নিজেরা রান্না হতে থাকি। এই কারণে একটু বয়স্কদের মাংসপেশি, হাড়ের রং ক্রমশ বাদামি হতে থাকে। এই পদ্ধতিটিকে খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে কি মন্থর করা সম্ভব?
হ্যাঁ, যত বয়স বাড়তে থাকে, ততই আমাদের মাংসপেশি, হাড়েরও ক্ষয় হতে থাকে। তবে কিছু ব্যক্তির খুব কম বয়স থেকেই পেশির ক্ষয় হতে থাকে। কারও আবার একটু বেশি বয়সে হয়। এই বিষয়টা অনেকখানি জিন বা বংশগতির উপর নির্ভর করে। তবে সার্বিকভাবে এই পেশির ক্ষয় অনেকখানিই মন্থর করা যায়। এই প্রভাবটাকে মন্থর করার জন্য ডায়েট নানাভাবে সাহায্য করতে পারে। খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এই পদ্ধতি মন্থর করা সম্ভব। তার জন্য দরকার সুষম খাদ্য গ্রহণ করা। আর এমন কোনও খাদ্য না খাওয়া যা শরীরের পক্ষে অপকারী।

খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে আরও একটা কনসেপ্ট চালু আছে। আর তা হল, প্রথমেই কার্বোহাইড্রেট নয়। আগে খেতে হবে ফাইবার, তারপর প্রোটিন, এরপর ফ্যাট ও তারপর কার্বোহাইড্রেট। তাতে হঠাত্ হঠাত্ সুগার স্পাইক হওয়া কমবে। এখন প্রশ্ন হল সুগার স্পাইক হওয়া ব্যাপারটা কী? আমরা বাঙালিরা কি সত্যিই এভাবে আগে শাকসব্জি, তারপর মাছ বা মাংস তারপর একটু মাখন আর শেষে সাদা ভাত খেতে পারব?
আচ্ছা। আগে সুগার স্পাইক ব্যাপারটা কী তা বুঝিয়ে বলি। আমরা যে সাদা ভাত খাই, তা আসলে কার্বোহাইট্রেট বা গ্লুকোজ। এই গ্লুকোজ আমাদের রক্তে এসে মেশে। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। এই কারণে হঠাত্‍ যাঁদের সুগার ধরা পড়ে তাঁদের আমরা বলি প্রথমে ফাস্টিং পিপি না করে এইচবিএ১সি করাতে। আসলে ব্লাড গ্লুকোজ লোহিত রক্তকণিকার গায়ে আটকে থাকে। লোহিত কণিকার গড় আয়ুষ্কাল তিন মাস। ফলে এইচবিএ১সি এমন একটি পরীক্ষা যার মাধ্যমে গত তিনমাসে একজন ব্যক্তি কীভাবে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করেছেন তা সহজে বোঝা যায়।
ফলে কোনও একজন ব্যক্তি মাত্রাতিরিক্ত হারে কার্বোহাইড্রেট খেতে থাকেন তখন তা শেষ পর্ষন্ত গ্লুকোজে পরিণত হয়। এই গ্লুকোজের খানিকটা এনার্জি তৈরিতে কাজে আসে আর বাকিটা রক্তপ্রবাহে মিশে যায়। ফলে কবে কখন এইভাবে ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়ছে তা একমাত্র বোঝা যায় এইচবিএ১সি পরীক্ষার মাধ্যমে। এই কারণেই দুমদাম মিষ্টি, বেশি আলু, চিনি, মিষ্টির রস, রসাল ফল খেতে নিষেধ করা হয় ডায়াবেটিসের রোগীকে।
এবার আসি দ্বিতীয় প্রশ্নে। তা হল প্রথমে ফাইবার তারপর, প্রোটিন, ফ্যাট, তারপর কার্বোহাইড্রেট এভাবে খাওয়া যায় না। আমরা বাঙালিরা এভাবে প্রথমে অনেকটা শুধু সব্জি স্যালাড, শুধু মাংসের টুকরো বা শুধু চিজ-এর মতো ফ্যাট খেতে অভ্যস্ত নই। আমরা বরং একসঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে খেতে ভালোবাসি। না হলে তো প্রথমে শুক্তো খেয়ে তারপর মাছ, দই খেয়ে শেষে শুকনো ভাত খেতে হবে! তাহলে আমরা কী করতে পারি?
খুব সহজ একটা কাজ করা যায়। তা হল, খাদ্যে ফাইবারের মাত্রা বাড়ানো। অর্থাত্‍ রোজকার ডায়েটে শাকসব্জি বেশি করে খান। খান পেয়ারা, কমলালেবু, মুসাম্বির মতো খাদ্য। ফলের রস খাবেন না। বরং খান গোটা ফল। এই ধরনের ফাইবার নির্ভর খাদ্য জল ধরে রাখে। ফলে চট করে খিদে পায় না। বাড়তি কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করার প্রবণতাও যায় কমে। তাই সুগার স্পাইক হওয়ার প্রবণতাও কমে যাবে। এখানেই শেষ নয়। এই সব ফল ও শাকসব্জিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ফ্রি র‌্যাডিক্যালসকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
সুগার স্পাইক কমাতে প্রোটিনও খুব ভালো সাহায্য করে। শরীরের মূল এনার্জির উত্‍স হল কার্বোহাইড্রেট। ফলে শরীর যখন এনার্জির জন্য কার্বোহাইড্রেট পায় না তখন প্রোটিন ভেঙে এনার্জি সংগ্রহ করে। প্রোটিনই এমন একটা জিনিস যা পেশি হাড়ের গঠনে সাহায্য করে।

আমরা ছোট থেকে শুনেছি মানুষ খেয়ে মরে। না খেয়ে মরে না। ব্যাপারটা কী?
এই বাগধারার বিস্তৃতি বিশাল। ব্যাপারটা এমন নয় যে পেটে কিল মেরে থাকলেই মানুষ বেঁচে থাকবে। আসলে যা বলতে চাওয়া হয়েছে তা হল, সুষম খাদ্য খান। লোভ করবেন না। কারণ আমরা কিন্তু একটা বয়সের পরে সকলেই জেনে যাই, কোন খাবার আমার শরীরের পক্ষে উপকারী, কোন খাবার নয়। ফলে একবার প্রয়োজনের খাবার খেয়ে ফেলার পর ফের লোভের বশে মুখরোচক খাবার খাওয়া উচিত নয়। তাতে শরীরের হানি হয়। শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধে। মোট কথা পরিমিত খান ভালো থাকুন।

আমাদের সমগ্র দেশের মধ্যে কোন প্রদেশের খাদ্যাভ্যাস বেশি ভালো?
বিভিন্ন জনজাতির মানুষ তার আশপাশের পরিবেশে যে সব ধরনের খাদ্য পাওয়া যায় সেই ধরনের খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শরীর সেই অবস্থার সঙ্গে মানিয়েও নেয়। তবে একটা কথা সবসময়েই সত্যি যে, খাদ্যবস্তুতে পর্যাপ্ত মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন থাকা দরকার। কোনওটাই খুব বেশি বা কম থাকা উচিত নয়। তাতেই সমস্যা হয়। আবার যাঁরা শুধু নিরামিষ খান তাঁদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ভিটামিনের অভাব থাকে। বিশেষ করে নিরামিষাশীদের মধ্যে ভিটামিন বি১২-এর অভাব থাকে। অথচ এই ভিটামিন শরীরের সংক্রমণকে রোধ করে, নার্ভাস সিস্টেমকে রক্ষা করে। আবার পেশিগঠনকারী সবকটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে প্রাণিজ প্রোটিনে যার অনেকগুলিই অনুপস্থিত থাকে ভেজ প্রোটিনে। তাই অ্যানিমেল প্রোটিনও জরুরি। আবার ভেজ আইটেম অর্থাত্‍ শাকসব্জি, ডাল, ফল ইত্যাদির মধ্যে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন। ফলে এই ধরনের খাদ্যও অবশ্যই খাদ্যতালিকায় রাখা দরকার। সব মিলিয়ে নিরামিষ ও আমিষের একটা সঠিক অনুপাত থাকা দরকার রোজকার ডায়েটে।

বাঙালিদের গ্যাস অম্বল আর সুগারের সমস্যা বাড়ছে। কোন খাবার বেশি খাওয়ার জন্য এমন হচ্ছে? কোন খাবার কম খাওয়া দরকার? সাপ্লিমেন্ট কি খাওয়া উচিত?
আমাদের বাঙালিদের মধ্যে খাবার খাওয়ার মধ্যে প্রচুর সময়ের অন্তর হয়ে যায়। এই কারণে অ্যাসিডিটি ডাইজেশনে সমস্যা বেশি হয়। তাই যা করা উচিত তা হল অল্প অল্প করে বারবার খাওয়া। দ্বিতীয়ত, ভাত আর আলুর মাত্রা কম করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে হজমের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই খাবারে ফাইবার নির্ভর খাদ্যের মাত্রা বাড়াতে হবে। অতএব সারাদিনে কেউ যদি তিনবার খান তাহলে তাঁকে খাবার খাওয়ার সময়টাকে পাঁচবারে ভাগ করে নিতে হবে। অর্থাত্ ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চের মধ্যে খেতে হবে একটা ফল। আর দুপুরের খাবার ও ডিনারের মাঝে বিকেলের দিকে খেতে পারেন সেদ্ধ বা অঙ্কুরিত মুগডাল, মটর ইত্যাদি। এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা বলা দরকার। তা হল, অনেকে সকালের দিকে অফিস বেরনোর তাড়ায় নাকেমুখে গুঁজে বাড়ি থেকে বেরন। ভালো খেতে না পারার আফশোসে শেষে তাঁরা রাতে পেট পুরে খান ভালো মন্দ। অথচ রাতের দিকে আমাদের বডি মেটাবলিজম মন্থর হয়ে যায়। ফলে খাবার হজম হতে দেরি হয়। পেটে ফ্যাট জমে বেশি। দ্রুত ওজন বাড়ে ভুঁড়ি হয়ে যায়। তাছাড়া অনেকে আবার রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি ফিরে তেলেভাজা-মুড়ি সহযোগে টিফিন করেন। তারপর রাত সাড়ে দশটা এগারোটা নাগাদ আবার খান! অথচ আশ্চর্য ব্যাপার হল, ডিনার করার আদর্শ সময় হল রাত ৮ টা থেকে ৯টা। মোট কথা হিসেব মতো একজন ব্যক্তি একই রাতে দু’বার ডিনার খান। এই ধরনের কুঅভ্যেস অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে।
এবার আসি সাপ্লিমেন্টের কথায়। আমরা যদি খাবার খেয়ে সব পুষ্টিগুণ পেয়েই যাই, তাহলে আলাদা করে সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার দরকার কী! একমাত্র দেহসৌষ্ঠব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন বা, ওজন তোলার ব্যায়াম করছেন এমন হলে তখন ডায়েটিশিয়ানরা সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার কথা বলতে পারেন।

খাদ্যগ্রহণের আদর্শ নিয়ম কী?
সাধারণ নিয়ম অনুসারে ব্রেকফাস্ট খুব ভারী হওয়া দরকার। লাঞ্চ তুলনায় হবে অনেক হালকা। আর ডিনারে পাতে থাকবে সামান্য খাবার। কারণ ডিনার খুব ভারী হলে হজমে জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। কারণ ডিনারের পরে আমরা কেউ ভারী কাজ করি না। যে মাত্রার ক্যালোরি গ্রহণ করি খাদ্যের মাধ্যেমে তার পুরোটা কাজে আসে না। তাই অনেকেই রাতে খাওয়ার পরে হজমের সমস্যা, চোঁয়া ঢেঁকুর ইত্যাদির অভিযোগ করেন। সুতরাং রাত ৯টার মধ্যে ডিনার সারুন। আধঘণ্টা হালকা চালে হাঁটুন।

শুধুই কি খাবার খাওয়া নাকি ঘুম আর এক্সারসাইজেরও কোনও ভূমিকা আছে?
৬-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। কারণ সারাদিনে আমাদের শরীরের পেশি, ব্রেনের কোষ খুব বড় মাপের কাজ করে। তাই তাদের যদি সঠিক মাত্রায় বিশ্রাম না দেওয়া হয় তাহলে শরীরে এজিং-এর প্রক্রিয়া দ্রুত হতে পারে।
আর দরকার প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৪০ মিনিট হন হন করে হাঁটা, সাঁতার বা জগিং-এর মতো এক্সারসাইজ করা। এগুলি ছাড়াও কতকগুলি কুঅভ্যেস সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করা প্রয়োজন। 

সেগুলি কী কী?
প্রথমত ধূমপান, অ্যালকোহল পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। দু’টি নেশাই শরীরের পক্ষে ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক। বাইরে থেকে শরীরের সবচাইতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিগুলোকে নষ্ট করা ছাড়া বিশেষ ভূমিকা নেই। ধূমপানে ফুসফুস, হার্ট নষ্ট হয়। বাড়ে হাইপারটেনশনের আশঙ্কা। অন্যদিকে অ্যালকোহল শরীরের পক্ষে টক্সিক উপাদান। লিভার, স্নায়ুতন্ত্রের ভয়ানক ক্ষতি করে মদ্যপান। তাই এই ধরনের অভ্যেস থাকলে অবশ্যই বাদ দিন।

একনজরে: কী খাবেন না
যে কোনও ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড, পোড়া খাদ্য, রেডি টু ইট, রেডি টু কুক, প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাদ্য। 
বেশি মিষ্টি জাতীয় খাদ্য। মাসে একবার বা দু’বার একটা-দুটো মিষ্টি চলতে পারে। • ভাজাভুজি। • তেল, মাখন, ঘি।
আলু। • বেশি মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য। • বাসি খাবার।

কী খাবেন
যে কোনও শাকসব্জি, মরশুমি ফল, ফাইবার বেশি আছে এমন খাবার যেমন গম, রাগি, বাজরার খাবার। খান ভালো ছোলা, মটর, রাজমা, মুগডালের মতো খাদ্য।
লেখক: নারায়ণা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান 
অনুলিখন: সুপ্রিয় নায়েক

31st  December, 2024
খাবার নিয়ে নানা ভুল ধারণা 

খাবার নিয়ে প্রচলিত এমন অনেক ধারণা আছে যা একেবারেই ভুল। কলা খেলে নাকি শ্লেষ্মা হয়। ইউরিক অ্যাসিডে মসুর ডাল নিষিদ্ধ। এসব কি ঠিক? খাবার নিয়ে নানা ভুল ধারণা ভেঙে দিলেন পুষ্টিবিদ স্বাগতা মুখোপাধ্যায়।  বিশদ

01st  January, 2025
কোন খাবারের পর কী খাওয়া উচিত নয়?

ভোজনরসিক বাঙালি খেতে বসলে হুঁশ থাকে না। ভাত-রুটি, ডাল-তরকারি, মাছ-মাংসে রসনা তৃপ্তি হয় বটে, কিন্তু এইসব খাবার কতটা প্রয়োজনীয়? কতটা ক্ষতিকর? আয়ুর্বেদে আছে সব খাবারই ভালো, কিন্তু সংযোগ দোষে তা ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। দেশ, কাল, অগ্নি, কোষ্ঠ, সংস্কার, পরিহার, উপচার, সম্পদ —এইরকম ১৭টি বিরোধ খাদ্য এড়িয়ে চলা দরকার। কোন খাবারের সঙ্গে কোন খাবার খাবেন না? কোন খাবার দিনে খাবেন? কোন ফল কখন খেতে হয়? বিরুদ্ধ খাদ্য কেন খাবেন না? লিখেছেন ডাঃ সুবলকুমার মাইতি।
বিশদ

01st  January, 2025
রহস্য মুক্তি পোস্টমর্টেমে!

শুধুই মৃতদেহ কাটাছেঁড়া নয়, অপরাধীকে চিহ্নিত করতে জরুরি হয়ে পড়ে পারিপার্শ্বিক প্রমাণও। জানাচ্ছেন প্রবীণ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ অজয় গুপ্ত বিশদ

01st  January, 2025
পোস্টমর্টেম কী

খুনের কিনারা করার জন্য সবথেকে প্রয়োজনীয় যে তথ্য তার সিংহভাগই পোস্টমর্টেম রিপোর্টে থাকে। হত্যার আগে ও সেই মুহূর্তে মনের অবস্থা, আচরণ কেমন ছিল ধর্ষক- হত্যাকারীর? সেটাই অপরাধের চালিকাশক্তি। আর সেই হদিশ মেলে পোস্টমর্টেমে। তদন্তের চাবিকাঠি ফরেনসিক রিপোর্ট। দেশের সাড়া জাগানো ধর্ষণ-প্রতিশোধমূলক 
হত্যার কথা লিখলেন সমৃদ্ধ দত্ত। ফরেনসিক এবং অটোপসি পরীক্ষা কী? খুন, অপঘাত, দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা—সবকিছুরই প্রমাণ রয়ে যায় দেহে। খুন কি চাপা দেওয়া যায়? দক্ষ পরীক্ষক-বিশেষজ্ঞরা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে উদ্ধার করে আনেন নিখুঁত সত্যকে। সেই কাজের ধরণ কেমন? ক্রাইমের আড়ালে থাকে এক অন্য থ্রিলার। ধাপে ধাপে এগন ফরেনসিক এক্সপার্টরা। কীভাবে? সেই রহস্যকথা শোনালেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাঃ অজয় গুপ্ত। 
বিশদ

01st  January, 2025
গয়া কেন 
মুক্তিতীর্থ?

গয়াকে কেউ বলে তীর্থ, কেউ বলে ক্ষেত্র, কারও কাছে পরিচিত ধাম নামে। ইতিহাস-কিংবদন্তি-লোকথায় জড়িয়ে আছে গয়া। শুধু তীর্থই নয় পর্যটনেও গয়া প্রসিদ্ধ। শহরটির উত্থান ভৌগোলিকতাকেও হার মানায় পুরাণের রোমাঞ্চকর কাহিনি। এখানেই গয়াসুর বধ হয়। এখানেই আছে প্রাচীন অক্ষয়বট, বিষ্ণুপাদপদ্ম। এমন কোনও মহাপুরুষ নেই যিনি এখানে আসেননি। আছে রহস্যময় গদাধর শিলা আর প্রেতশিলা! মৃত‌্যুর পর মানুষের আত্মার ঠিকানা স্থির হয় এখানেই। মৃতের কল্যাণে আছে নানা বিধিব্যবস্থা। তবে সবকিছুকেই ছাড়িয়ে যায় গয়ার নানা মিথ। কেন এটি মুক্তিতীর্থ? অজানা, রহস্যময় গয়ার কথা লিখেছেন ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিশদ

01st  January, 2025
ব্লু জোনের শতায়ু ডায়েট
সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায়

নাম, যশ, অর্থ, ক্ষমতাশীল ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ এবং সুস্বাস্থ্য— তাহলে আপনি অবশ্যই ঈশ্বরের কাছ থেকে বরদান হিসেবে সুস্বাস্থ্যই বেছে নিতে চাইবেন! কারণ সুস্বাস্থ্য বজায় থাকলে যে কেউ বাকি সৌভাগ্য অর্জন করে নিতে পারেন। আর ভগ্নস্বাস্থ্য হলে বাকি সব সৌভাগ্য অধরা থাকতে বাধ্য! বিশদ

31st  December, 2024
দীর্ঘ জীবনের দাওয়াই 
সিম্পল লিভিং হাই থিংকিং
ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায়

৮৯ বছর বয়স হল। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে রোগী দেখছি। এতদিন কেটে গেল সারা জীবনই কি স্বাস্থ্য অটুট থেকেছে? তা নয়। একবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। জোর ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছিল। সেই একবারই! বরাবর যতখানি স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা সম্ভব, করেছি। তাতে কর্মবিরতি হয়নি। বিশদ

31st  December, 2024
সুস্থভাবে দীর্ঘায়ু হতে কীভাবে 
সাহায্য করে যোগব্যায়াম
পরিতোষকুমার হাজরা

সারা বিশ্ব মেনে নিয়েছে যোগব্যায়ামের অপরিসীম গুণের কথা। ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর ২১ জুন বিশ্বযোগ দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), ভারত সরকার ও রাজ্য সরকার যোগ ও নেচারোপ্যাথি সিস্টেম অব মেডিসিন অ্যাক্ট ২০১০ তৈরি করেছে। বিশদ

31st  December, 2024
হোমিওপ্যাথিতে অসুখ নিরাময়
ডাঃ রামকৃষ্ণ ঘোষ

১৭৯৬ সাল। ওই বছরই বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি নামে একটি চিকিৎসা পদ্ধতি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন। যেখানে রোগীকে একসঙ্গে একটি মাত্র ওষুধ দিয়ে সুস্থ করে তোলাই হল চিকিৎসার মূলমন্ত্র। বিশদ

31st  December, 2024
সুস্থ দীর্ঘজীবনের 
জন্য কী কী করবেন?

মৃত্যু জীবনের অন্তিম পরিণতি, এটি জানার পরও বলতে হয়—প্রথমত এই সুন্দর পৃথিবী, ভালোবাসা, আনন্দ আর সম্পর্কের মধুর স্মৃতি ছেড়ে যেন মন বিশ্ব ছেড়ে যেতে চায় না। দ্বিতীয়ত, নশ্বর দেহ থেকে প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাক, কিন্তু আমাদের কৃতকর্ম যেন মানুষের মনে বেঁচে থাকে, একেই বলে মরে বেঁচে থাকা, অমরত্ব। কিন্তু দেহের কোনও অমরত্ব নেই। জীবনযাত্রা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সুষ্ঠু সমন্বয় গড়তে পারলে নীরোগ ও বলিষ্ঠ দেহ নিয়ে দীর্ঘকাল বাঁচা যায়। দীর্ঘজীবনের উপায় জানালেন ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায়, আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ডাঃ সুবলকুমার মাইতি, ডাঃ রামকৃষ্ণ ঘোষ, যোগবিশারদ পরিতোষকুমার হাজরা, পুষ্টিবিদ শতভিষা বসু। ব্লু জোন-এর শতায়ু মানুষদের আশ্চর্য জীবনযাত্রার কথা শোনালেন সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায়।
বিশদ

31st  December, 2024
জাতিস্মর কারা হয়?
তাঁরা কেন রহস্যময়?

জাতিস্মর কারা হয়? এখানেই যত বিস্ময়! এদের পূর্বজন্মের কথা মনে পড়ে। তেমনই তাদের কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল সেই বিবরণও দেয়। একমাত্র তারাই মৃত্যুর অভিজ্ঞতা কিংবা স্মৃতির প্রত্যক্ষ বিবরণ দেওয়ার অধিকারী। জাতিস্মরদের নিয়ে যখনই গবেষকরা রিসার্চ করেন, তখনই প্রশ্ন করা হয়েছে মৃত্যু কীভাবে হল? তাঁর পরিবার-পরিজন-প্রতিবেশি-বন্ধু কেমন ছিল? মানুষ মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জানতে পারে না যে, ঠিক মৃত্যুর মুহূর্তটি কেমন হবে! কীভাবে পলকের মধ্যে মৃত্যু এসে জীবনকে স্তব্ধ করে দেয়! তখন কেমন বোধ হয়? মৃত্যুকে কেমন দেখেছে সে? এটাই যুগ যুগ ধরে জানতে চায় নশ্বর মানুষ! এর উত্তর জানে জাতিস্মররাই। কিন্তু সত্যিই কি উত্তর মেলে? এই চির রহস্যের কথা শোনালেন সমৃদ্ধ দত্ত।
বিশদ

30th  December, 2024
মৃত্যু কি আগাম
ইঙ্গিত দেয়?

স্বামী বিবেকানন্দ বলে গেছেন, মৃত্যু চিন্তা ভালো। কারণ এই জগৎ কতটা মিথ্যা সেটা বোঝার জন্য। তবে মৃত্যুভয় ভালো নয়। জগতের বড় বিস্ময় মৃত্যু। মৃত্যুকালে মানুষের শুদ্ধ চেতনাকে আচ্ছন্ন করে দেয় অন্ধকার। সাধক-যোগীরা সেই অন্ধকারকে কাটাতে পারেন। বীরের মতো দেহ ছেড়েছেন বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, রাম ঠাকুর, বালানন্দ ব্রহ্মচারি, নিগমানন্দ ঠাকুর, পরমহংস যোগানন্দ স্বামী, দুর্গাপুরী মাতাজি। মৃত্যুযোগ যাঁরা অভ্যাস করেন তাঁরাই নিজের মৃত্যুকালটি জানতে পারেন। সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবেন মৃত্যুকাল আসন্ন? মৃত্যুকালে মানুষের মুখ কেন খোলা থাকে? শাস্ত্রে আছে, কারও যদি মনে হয় সূর্যের তেজ কমে আসছে, তাহলে তার আয়ু বেশিদিন নেই। রয়েছে আরও কিছু পূর্ব লক্ষণ। মৃত্যুর পূর্বে মানুষ নানারকম স্বপ্ন দেখেন, কী সেই স্বপ্ন? লিখেছেন সোমব্রত সরকার।
বিশদ

07th  October, 2024
আত্মার উপস্থিতি কীভাবে
অনুভব করা যায়?

আত্মার অস্তিত্ব নিয়ে সারা বিশ্বজুড়ে অনেক কথা শোনা যায়। আশ্চর্যের বিষয়, মহাপুরুষ থেকে সাধারণ মানুষও আত্মার উপস্থিতি বুঝতে পারেন। আচার্য শঙ্করাচার্য থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ, আবার রাম ঠাকুর থেকে নিগমানন্দ সরস্বতী এমনকী বিশ্বের তাবড় মনীষীরাও স্বীকার করেন আত্মার অস্তিত্ব। জীবন ফুরিয়ে গেলেই তা শেষ হয়ে যায় না। এ বিষয়ে গীতা থেকে ভারতীয় অধ্যাত্মশাস্ত্র কী বলে? প্ল্যানচেটে অাত্মা আনা সম্ভব। কলকাতায় এক সময় এটি জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু আত্মারা কখনও স্বইচ্ছায় আসেন তাঁর প্রিয়জনের কাছে! তাঁদের সুখ-দুঃখের সাথী হন। কোন পরিস্থিতিতে আত্মারা আসেন? কীভাবে বুঝবেন তাঁদের উপস্থিতি? কী সহায়তা করেন তাঁরা? লিখেছেন সোমব্রত সরকার। 
বিশদ

07th  October, 2024
অপদেবতা কি ক্ষতি করে?

অপদেবতা মানুষের ক্ষতি না উপকার করে? লিখেছেন অগ্নিশ্বর সরকার। বিশদ

07th  October, 2024

Pages: 12345

একনজরে
ডাকাতদের বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্য পেল বিহার পুলিস। মঙ্গলবার ভোররাতে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই ডাকাতের। পাটনা জেলার ফুলবাড়ি শরিফের হিন্দুনির ঘটনা। এক ডাকাতকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিস। গুলির লড়াইয়ে জখম হয়েছেন পুলিসের এক সাব-ইনসপেক্টর। ...

লিবারেল পার্টির দলনেতা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। শাসক দলের নেতা ও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে উঠে এসেছে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতর নামও। তিনি পরিবহণ মন্ত্রী অনিতা আনন্দ। তামিল পরিবারে জন্ম অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কৃতী প্রাক্তনীর। ...

মালদহে শ্যুটআউটের পর পুলিস উত্তর দিনাজপুরের সঙ্গে বিহার সংযুক্তকারী ছোটবড় রাস্তার পৃথক ম্যাপিং করেছে। যেখানে গোয়েন্দাদের নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি  জোরদার করা হয়েছে নাকা চেকিং। ...

২০১৮ সালে কেপটাউনে টেস্ট অভিষেক যশপ্রীত বুমরাহর। আর এই ফরম্যাটে কেরিয়ারের শুরু থেকেই চোট-আঘাত তাঁর সঙ্গী। আসলে বুমবুমের বোলিং অ্যাকশনই এমন যে চোট পাওয়ার আশঙ্কা থাকে ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন।  ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১০২৫: সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করলেন সুলতান মামুদ
১৩২৪:  ভেনিসিয় পর্যটক ও বনিক মার্কো পোলোর মৃত্যু
১৬৪২: বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর মৃত্যু
১৮০৬: ব্রিটেন উত্তমাশা অন্তরীপ দখল করে নেয়
১৮৬৭: আফ্রিকান আমেরিকানরা ভোটাধিকার লাভ করে
১৮৮৪: সমাজ সংস্কারক ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের মৃত্যু
১৯০৯: সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম
১৯২৬: বাদশা হোসেন বহিষ্কার। ইবনে সাউদ হেজাজের নতুন বাদশা। দেশের (হেজাজ) নাম পরিবর্তন করে সৌদি আরব করা হয়।
১৯২৬:  কিংবদন্তি ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী তথা ওড়িশি নৃত্যের জন্মদাতা কেলুচরণ মহাপাত্রের জন্ম 
১৯৩৫: প্রবাদপ্রতিম অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর জন্ম
১৯৩৫: মার্কিন গায়ক এলভিস প্রেসলির জন্ম
১৯৩৯: অভিনেত্রী নন্দার জন্ম
১৯৪১: ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দের প্রয়াণ
১৯৪২: ইংরেজ পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের জন্ম
১৯৫৭: অভিনেত্রী নাফিসা আলির জন্ম
১৯৬৩: প্রথমবারের মতো লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত পেইন্টিং ‘মোনালিসা’ আমেরিকার ন্যাশনাল গ্যালারী অব আর্টে প্রদর্শন
১৯৬৫: অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদারের জন্ম
১৯৬৬: বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক বিমল রায়ের মৃত্যু
১৯৮৪: প্রথম ভারতীয় মহিলা পাইলট সুষমা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৯০: অভিনেত্রী নুসরত জাহানের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৪.৯৭ টাকা ৮৬.৭১ টাকা
পাউন্ড ১০৫.৭০ টাকা ১০৯.৪৩ টাকা
ইউরো ৮৭.৫৩ টাকা ৯০.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৭,৪০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৭,৭৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৩,৯০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৯,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৯,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৪ পৌষ, ১৪৩১, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫। নবমী ২০/৮ দিবা ২/২৬। অশ্বিনী নক্ষত্র ২৫/১৮ দিবা ৪/৩০। সূর্যোদয় ৬/২২/৩৩, সূর্যাস্ত ৫/৪/৫। অমৃতযোগ দিবা ৭/৬ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৯ গতে ৮/৩২ মধ্যে পুনঃ ১০/৪০ গতে ১২/৪৮ মধ্যে। রাত্রি ৫/৫৮ গতে ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ৮/৩৮ গতে ৩/৪৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/৬ গতে ৭/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১/৩১ গতে ৩/৪০ মধ্যে। বারবেলা ৯/২ গতে ১০/২৩ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৩ গতে ১/৩ মধ্যে। কালরাত্রি ৩/২ গতে ৪/৪২ মধ্যে।
২৩ পৌষ, ১৪৩১, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫। নবমী দিবা ২/২। অশ্বিনী নক্ষত্র অপরাহ্ন ৪/৩৬। সূর্যোদয় ৬/২৫, সূর্যাস্ত ৫/৪। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৯ মধ্যে ও ১০/১ গতে ১১/২৮ মধ্যে ও ৩/৭ গতে ৪/৩০ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১১ গতে ৮/৫৭ মধ্যে ও ২/১ গতে ৬/২৫ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৪৩ গতে ৩/৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৫৭  গতে ১০/৩২ মধ্যে। কালবেলা ৯/৫ গতে ১০/২৪ মধ্যে ও ১১/৪৪ গতে ১/৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৩/৫ গতে ৪/৪৫ মধ্যে। 
৭ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে দিল্লিতে একটি স্মারক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন কেন্দ্রের

07-01-2025 - 10:27:00 PM

 মানুষ কংগ্রেসের প্রতি উৎসাহ দেখাচ্ছেন: কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত

07-01-2025 - 10:00:00 PM

গুজরাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল

07-01-2025 - 09:23:00 PM

গুজরাতে একাধিক নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ৭৭৯ কোটি টাকা অনুমোদন করলেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল

07-01-2025 - 08:59:00 PM

আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতে বৃষ্টির সম্ভাবনা

07-01-2025 - 08:34:00 PM

পূর্ণকুম্ভ ২০২৫: প্রয়াগরাজে মাউন্টেড পুলিসের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ৫টি ঘোড়া কিনল যোগী সরকার

07-01-2025 - 08:24:00 PM