Bartaman Patrika
সাপ্তাহিক বর্তমান
 

সুস্থ দীর্ঘজীবনের 
জন্য কী কী করবেন?

মৃত্যু জীবনের অন্তিম পরিণতি, এটি জানার পরও বলতে হয়—প্রথমত এই সুন্দর পৃথিবী, ভালোবাসা, আনন্দ আর সম্পর্কের মধুর স্মৃতি ছেড়ে যেন মন বিশ্ব ছেড়ে যেতে চায় না। দ্বিতীয়ত, নশ্বর দেহ থেকে প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাক, কিন্তু আমাদের কৃতকর্ম যেন মানুষের মনে বেঁচে থাকে, একেই বলে মরে বেঁচে থাকা, অমরত্ব। কিন্তু দেহের কোনও অমরত্ব নেই। জীবনযাত্রা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সুষ্ঠু সমন্বয় গড়তে পারলে নীরোগ ও বলিষ্ঠ দেহ নিয়ে দীর্ঘকাল বাঁচা যায়। দীর্ঘজীবনের উপায় জানালেন ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায়, আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ডাঃ সুবলকুমার মাইতি, ডাঃ রামকৃষ্ণ ঘোষ, যোগবিশারদ পরিতোষকুমার হাজরা, পুষ্টিবিদ শতভিষা বসু। ব্লু জোন-এর শতায়ু মানুষদের আশ্চর্য জীবনযাত্রার কথা শোনালেন সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায়।

আয়ুর্বেদে দীর্ঘায়ু লাভের উপায়
ডাঃ সুবলকুমার মাইতি
‘মরিতে চাহি না আমি’— কবির আর্তনাদ কীসের ইঙ্গিত? তিনি তো জানতেন— জন্মিলে মরিতে হবে। মৃত্যু যে জীবনের অন্তিম পরিণতি, এই সত্যটি জানার পরও আমরা দু’টি বিষয় মাথায় রেখে এটি বলতে পারি। প্রথমত, এই সুন্দর পৃথিবী, ভালোবাসা, আনন্দ আর সম্পর্কের মধুর স্মৃতি ছেড়ে যেন মন মনোরম এই বিশ্ব ছেড়ে যেতে চায় না। দ্বিতীয়ত, আমার নশ্বর দেহটি থেকে প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাক, তাতে দুঃখ নেই, আমার কৃতকর্ম যেন মানুষের মনে বেঁচে থাকে, একেই বোধ হয় বলে মরেও বেঁচে থাকা, অমরত্ব। কিন্তু দেহের কোনও অমরত্ব নেই। জীবনযাত্রা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সুষ্ঠু সমন্বয় গড়তে পারলে নীরোগ ও বলিষ্ঠ দেহ-মন নিয়ে দীর্ঘকাল বেঁচে থাকা যায়। তবে অত্যধিক রাগ থাকলে তা কোনওদিন সম্ভব নয়।
আয়ুর্বেদ চিকিৎসাশাস্ত্রের মূলকথা হল দু’টি। প্রথমটি হল— শরীরকে সুস্থ দীর্ঘ ও নীরোগ জীবনলাভের উপায়। দ্বিতীয়টি হল— শরীর ও মনে কোনও রোগ সৃষ্টি হলে তার চিকিৎসা করা।
মাতৃগর্ভে থাকাকালীন অবস্থাতেই জীবনের শুরু। আমাদের শরীর ও মনের গঠনে বাবা ও মায়ের অবদান থাকলেও মায়ের দিক থেকে আমাদের মস্তিষ্কের গঠন ও ক্রিয়াকলাপ সৃষ্টি হয়। যার জন্য গর্ভাবস্থায় মায়েদের অতি সতর্কভাবে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সময় রাগ-হিংসা-দ্বেষ-লোভ প্রভৃতি আয়ত্তের মধ্যে রাখতে হয়। তাই আয়ুর্বেদে প্রতিমাসে সাধভক্ষণের উল্লেখ রয়েছে। মনকে ভালো রাখার জন্য পড়াশোনা-গানবাজনা-নানা প্রকারের জ্ঞানমূলক আলোচনার মধ্যে থাকতে হয়। জন্মের পর থেকেই মাতৃদুগ্ধ পানই শ্রেয়। আপাতত ৬ মাস, তারপর অন্যান্য খাবারের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের দুধ ২ বছর বয়স পর্যন্ত খেতে পারলে শরীর ও মনের গঠনটা মজবুত হয়।
আগেকার দিনে তেল মাখানো, দূর্বা-হলুদ মিশ্রিত জলে স্নান করানো প্রভৃতি নানাপ্রকার নিয়মের মধ্যে শিশুকে রাখা হতো। মাকে ২-৩ মাস খুব সাবধানে থাকার নির্দেশ ছিল। আজকাল অনেক নিয়ম বদলে গেছে। বাচ্চাদের জন্মের সময় থেকেই টীকাকরণ বা ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়ে যায়। চলে প্রায় ৫ বছর পর্যন্ত। আগেকার দিনে শিশুমৃত্যু ও প্রসবের সময় মায়ের মৃত্যু আকছার ঘটত। এখন অনেক উন্নতি হয়েছে। যার ফলে জীবনের প্রথম ভাগটা ভালোভাবেই গড়ে ওঠে। 
আয়ুর্বেদের চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে মা ও শিশুর চিকিৎসা বিধান রয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার সুবিধার্থে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রকে আট ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। প্রত্যেক বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকটি বিষয়কে নিয়ে বহু গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। পরবর্তীকালে সেগুলির অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন মাত্র তিনটি মূলগ্রন্থ— চরক সংহিতা, সুশ্রুত সংহিতা, অষ্টাঙ্গ হৃদয় সংহিতা আছে। চিকিৎসাশাস্ত্রকে যে আটটি ভাগে ভাগ করা হয়েছিল, তা এইরকম ১) কায় চিকিৎসা (Works on the Practice of Medicine), ২) শল্যতন্ত্র (Works on Surgery), ৩) শালাক্যতন্ত্র (Works on Dieases of Eye, Ear, Nose, Throat etc), ৪) ভূতবিদ্যাতন্ত্র (Works on Mental Diseases), ৫) কৌমারভৃত্যতন্ত্র (Works on Diseases of Children), ৬) অগদতন্ত্র (Works on Toxicology), ৭) রসায়নতন্ত্র (Works on Methods of gaining Health and Longevity), ৮) বাজীকরণতন্ত্র (Works on Sexual invigoration)। প্রত্যেকটি শাখায় বহু গ্রন্থ সৃষ্টি হলেও সেগুলির সামান্য কিছু পাওয়া যায়। বহু পুস্তকের নামোল্লেখ থাকলেও সেগুলি পাওয়া যায় না অথবা দুর্লভ।
আদিকাল থেকে মানুষের কামনা— নীরোগ দীর্ঘায়ু লাভ। এজন্য জন্মের পর থেকেই নানাবিধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবনকে পরিচালিত করতে হয়। মৃত্যুকে রদ করা যাবে না, কিন্তু তাকে বিলম্বিত করার চেষ্টা মানুষ করেই চলেছে। আর সেটি করতে হলে রোগকে প্রতিহত করে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে হবে। এজন্য সঠিক আহার-বিহার (দৈনিক কাজকর্ম, যোগাসন, ভ্রমণ প্রভৃতি) এবং রোগের জন্য ওষুধের প্রয়োজন।
শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে আয়ুর্বেদের স্বাস্থ্যবৃত্ত অধ্যায়টি সম্বন্ধে ভালোভাবে জানা দরকার। সেখানে আলোচিত হয়েছে— স্বাস্থ্য কী, তার লক্ষণ কী, শরীরে বায়ু-পিত্ত-কফের বৃদ্ধি ও ক্ষয়কে কীভাবে সাম্যাবস্থায় রাখা যায়। শরীরের অভ্যন্তরীণ বিষ ও টক্সিনকে কীভাবে বের করা যায়, তা বলা হয়েছে। সকালে শয্যাত্যাগ থেকে রাতে শয্যাগ্রহণ পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়টিতে নিত্যকার্যাদি যেমন— শয্যাত্যাগ, মুখ ধোওয়া, দাঁত মাজা, প্রাতকৃত্য সারা, তৈলমর্দন, স্নান, বস্ত্রধারণ, আহার ও মুখ ধোওয়া, দাঁত পরিষ্কার করা, তারপর কর্মে যুক্ত হওয়া। রাতে ফিরে বাড়িতে বিশ্রাম আহার এবং শয্যাগ্রহণ প্রভৃতি প্রত্যেকটি বিষয়ের ভালো-মন্দের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দিবা বা রাত্রি ভেদে, ঋতুভেদে  রকমফের করা হয়েছে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার জন্য।
বিহার অর্থে বিভিন্ন কাজকর্ম অর্থাৎ জীবনধারণের জন্য, পড়াশোনার জন্য যার যেমন কাজ তা সম্পন্ন করা এবং তারই ফাঁকে ফাঁকে ব্যায়াম, প্রাণায়াম, যোগাসন, উপাসনা, ভ্রমণ প্রভৃতির মাধ্যমে শরীরচর্চা প্রভৃতি বোঝায়। শরীর থাকলে কিছু না কিছু রোগ তো আসবে। যত বেশি বয়স হবে, ততই ঝামেলা হতে থাকবে। আর সেজন্য আছে ওষুধ-আহার-বিশ্রাম প্রভৃতি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকলে নানারকম সমস্যা পর পর আসতে থাকবে। এই সবকিছুকে এড়িয়ে ভালো থাকতে চাইলে রসায়ন ও বাজীকরণ চিকিৎসার সুযোগ নিতে হবে। সেজন্য অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করতে পারলে শরীরে চামড়া ও চুল ভালো থাকবে এবং টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাব পূরণ কিছুটা তো হবেই। মেয়েদের মেনোপোজের পর এটি কমে যায়, সেইসঙ্গে মনের মধ্যে উৎফুল্লতা কমে, ধীরে ধীরে বুড়িয়ে যেতে থাকে। পুরুষদেরও এমন একটা অবস্থা হতে পারে, তখন সেটিকে অ্যান্ড্রোপোজ বলা হয়। এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, কারিপাতা, হলুদ, দারুচিনি, ধনে, লবঙ্গ, মরিচ, কালোজিরে প্রভৃতি হার্টের পক্ষে খুবই ভালো।
নীরোগ শরীরকে জরা-ব্যাধির হাত থেকে দীর্ঘকাল রক্ষা করার উপায় রসায়ন চিকিৎসার অন্তর্গত। মোটামুটি কয়েকটি তথ্য প্রথমে তুলে ধরার পূর্বে একটা কথা বলে রাখি— ছোটবেলা থেকে মনটাকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করা আসল কাজ। সে শিক্ষা প্রথমত মা-ই দিতে পারেন, তারপর বাবা ও অন্যরা। সেখানেই যদি গলদ থেকে যায়, তাহলে পরবর্তী নিয়ম-কানুন যতই মানার চেষ্টা করুন, ফাঁকি থেকে যাবে এবং ভবিষ্যৎটা অন্ধকারে ডুবে যাবে। সংসারের অবস্থা দেখে বুঝতে পারছেন না? মা যদি ছোটবেলা থেকে স্বার্থপর হিসেবে গড়তে না চান, তার মনে রাগ-হিংসা-অহংকার-বিবেকহীনতা প্রভৃতি বিষাক্ত বীজ যদি বপন না করেন, পরের জন্য কিছু ভাবনা, সমাজ-সংসার, দেশ সম্বন্ধে ইতিবাচক বীজ পুঁতে দেন, সে সন্তান সুস্থ থেকে সমাজের একজন হতে পারবে। এবার দৈনন্দিন নিত্যকর্মাদি নিয়ে ভাবনাও মনের ভেতর সে গ্রহণ করবে। চিরদিন কিছু কথা মেনে চলা, যেমন—
১. সূর্যোদয়ের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে শয্যাত্যাগ করা উচিত।
২. খালিপেটে সামান্য জল পান করার পর প্রাতঃকর্মাদি সেরে ফেলা।
৩. তারপর দাঁতমাজা। এজন্য কিছু নির্বাচিত গাছের ডাল (নিম, করঞ্জা, অপ মার্গ প্রভৃতি) ব্যবহার করতে পারেন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাজারজাত মাজন ব্যবহার করুন। জিভছোলার জন্য সোনা-রূপা-তামার তৈরি কিংবা এই তিনটির মিশ্রণে তৈরি জিভছোলা ব্যবহার করুন। একবার তৈরি হয়ে গেলে সারাজীবন চলতে পারে। উপহার হিসেবে দেওয়া-নেওয়া শুরু হোক না।
৪. দিনে ঘণ্টাখানেকের মতো ব্যায়াম ও প্রাণায়াম/ হাঁটা/ সাইকেল চালানো/ সাঁতার প্রভৃতির যে কোনও একটা করা উচিত। বয়স্কদের জন্য পায়ে হাঁটা ভালো।
৫. শরীরে যে কোনও একটি তেল মালিশ করে হালকা গরম জলে স্নান করে নেওয়াটা উচিত। কিন্তু বর্তমানের প্রেক্ষিতে একটা অদলবদল হতে পারে। পছন্দের যে কোনও একটি তেল লাগানোই ভালো। তবে ডাক্তারের নিষেধ থাকলে অন্য ব্যবস্থা করা যায়।
৬. নিয়মিত সময়ে খাওয়া-দাওয়া করা। সকালে জলখাবার কোনও পানীয় দিয়ে শুরু করবেন না। দুপুরে ও রাতে খাওয়ার মাঝখানের সময়টা ১০-১২ ঘণ্টা থাকলে সবচেয়ে ভালো। রাতের খাবার ১০টার মধ্যে সেরে ১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ুন। রাতে খাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে শুয়ে পড়ুন।
৭. জল পান খাওয়ার আগে ও পরে শ্রেয়। তবে প্রয়োজনে মাঝে সামান্য জল খেতে পারেন।
৮. বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়ার অভ্যেস করা উচিত। সেই রান্নাগুলোও সঠিক নিয়মে করা উচিত। নুন, চিনি, ময়দা জাতীয় দ্রব্য খুব কম খেতে হবে। চিনির পরিবর্তে গুড় বা মধু ব্যবহার করতে পারেন। নুডলস না দিতে পারলে ভালো, তবে খুব কম খেতে দিতে হবে বাচ্চাদের। মায়েরা চিঁড়ে-মুড়ি-পান্তাভাত-খিচুড়ির পরিবর্তে সহজে মুখরোচক খাদ্য তৈরি করে বাচ্চাদেরকে খেতে দেন। 
৯. কম পরিমাণে তাজা, পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাদ্য খাবেন।
১০. ফাস্ট ফুড, জাংক ফুড, রং করা খাদ্যদ্রব্য, ফ্রিজের খাবার, অতিরিক্ত তেল-ঘি-চর্বি সংযুক্ত মশলাদার খাবার, গুরুপাক দ্রব্য, বাসি ও ঠান্ডা খাবার, ভাজাভুজি ও পোড়া খাদ্য যতটা কম খাওয়া যায়, ততটাই মঙ্গল। 
১১. গ্রিন টি, পাতা চা, হারবাল টি, কফি, ডাবের জল, লেবুর রস ও মধু যুক্ত জল, ঘোল, ফলের রস বা তাজা ফল চিবিয়ে খাওয়া, সবুজ শাকসব্জি, লেবুর রস মাখানো স্যালাড, মরশুমি শাকসব্জি-ফলমূল নিয়মিত কমবেশি খাবেন।
১২. রাতের ঘুম গাঢ় অন্ধকারে ৬-৮ ঘণ্টা হলেই ভালো, না হলে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা। এটি না মানলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয় বেশি। পরবর্তীকালে অনিদ্রা, ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্স, পারকিনসনস প্রভৃতি রোগের সম্ভাবনা থাকে। 
১৩. দিবানিদ্রা সকলের জন্য নয়। ১০-১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু, ৬০ বছরের অধিক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, গর্ভিণী ও প্রসূতি, রোগাক্রান্ত ব্যক্তি ও রোগ সেরে যাওয়ার পর দুর্বল ব্যক্তিরা দিনের খাওয়ার পর কিছুটা সময় দিবানিদ্রা দিতে পারেন। যাঁরা মাঠে-ঘাটে, কলকারখানায় কাজ করার পর দুপুরের আহার ১টা থেকে ২টার মধ্যে করেন, তাঁদের ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন, ঘুমোনো নয়।
১৪. চলাফেরা, বেড়ানো, টিভি দেখা, পড়াশোনা করার সময় খাওয়া-দাওয়া ঠিক নয়। খুব ধীরে ধীরে বা তাড়াতাড়ি খাওয়াও ভালো নয়। শহরাঞ্চলে প্রায় প্রতি বাড়িতে টেবিলে বসে খাওয়া হয়। আড্ডা দিয়ে খাওয়াটা ভালো হয়, একটু বেশি খাওয়া হয়ে যায়। যাঁরা মেঝেতে বাবু হয়ে বসে খান, তাঁরা শরীর ও মনের দিক থেকে অনেক সুবিধা ভোগ করেন। তাঁদের শরীরের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যায়, সেগুলি হল— খাবার বেশি খাওয়া যায় না, দ্রুত হজম হয়, মনের মধ্যে একটা তৃপ্তিবোধ হতে থাকে, যার ফলে মানসিক চাপ কমতে থাকে। দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভালো থাকে। পেশি শক্তিশালী হয়, নিম্নাঙ্গে সমস্ত গাঁট সুস্থ থাকার পাশাপাশি কোমর, হাঁটু, গোড়ালির ব্যায়াম হয়ে যায়, হঠাৎ আড়ষ্টভাব আসে না। গাঁটে ব্যথা ও কোমরের ব্যথা থাকলে তাতে উপকার মেলে। রক্ত সঞ্চালন ভালো হওয়ার জন্য হৃৎপিণ্ডটি ভালো থাকে। মেদ জমতেও পারে না। অনেক উপকার, যদি পারেন মাঝে মাঝে খেয়ে দেখুন। 
১৫. খিদে পেলে খাবেন। ঠিকসময়ে নিয়মিত খেতে পারলে দিনের একটা সময়েই ক্ষুধার উদ্রেক হবে। পূর্বের খাবার হজম না হলে পুনরায় খাবেন না। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম খাবার খাবেন না। জল গ্লাসে করে খাওয়ার অভ্যেস করুন। বোতলের জল হাঁ করে খাবেন না। খেলে বদহজম, অম্ল, বায়ুর উপদ্রব প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। রাতে এক গ্লাস জল তামার পাত্রে রেখে ভোরে উঠে খেয়ে নিন। 
১৬. দুধ-দই-ঘোলের সঙ্গে কলা মিশিয়ে খাবেন না। দুধের সঙ্গে তো নয়ই। দুধের সঙ্গে লবণ খেতে নেই। মাছ-মাংস-ডিম রান্নার সঙ্গে দুধ বা দই মেশাবেন না। 
১৭. মাছ-মাংস-ডিমের যেকোনও একটি পদ দিয়ে খাওয়া শেষ করুন। একসঙ্গে দুটি বা তিনটি খাবেন না। কোনও রান্নাতে আদা ও রসুন একসঙ্গে ব্যবহার করবেন না। মাছের তরকারিতে রসুন দেবেন না।
১৮. পাঁচফোড়নের ৫টি দ্রব্য একসঙ্গে বা পৃথক পৃথকভাবে ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করবেন। গুঁড়ো করে বা ভেজে বিশেষ কোনও রান্না ছাড়া নিত্যাদিনের রান্নায় দেবেন না।
১৯. রাতে দই ও বর্ষায় ছাতু খাওয়া নিষিদ্ধ।
২০. টক দই বা ঘোল খাওয়া উচিত। কিন্তু আমিষ খাওয়ার ঠিক পরেই খাবেন না। গরমের দিনে ঘোল আর শীতের দিনে টক দই খাওয়া ভালো। অন্যসময় ভেবেচিন্তে খেতে হবে। মিষ্টি দই কোনও সময়েই খাবেন না। ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় বলেছেন— ভালো ভালো খাবার খাওয়ার পর একবাটি মিষ্টি দই খাওয়া মানে এক বাটি বিষপান করা। মাছ-মাংস-ডিম যেকোনও একটি দিয়ে খাবার খাওয়ার ঘণ্টাচারেক পরে টক দই খেতে পারেন। টক দইতে গুড় মিশিয়ে মিষ্টি দই বানাতে পারেন। 
২১. শোওয়ার সময় দুধ খাওয়া ভালো। যেদিন নিরামিষ খাবেন সেদিন। অধিক বয়সে দুধ ততটা উপকারী নয়। সেক্ষেত্রে ঘোল, ছানার জল, ছানা, টক দই প্রভৃতি খেতে পারেন।
২২. নিয়মমাফিক উপবাস করা ভালো। যখন-তখন উপবাস বা অনিয়মিত উপবাস করা উচিত নয়। উপবাসের পর প্রথমে দু’চারটে খেজুর খেয়ে তারপর নিরামিষ রান্না খেয়ে উপবাস ভাঙতে হবে। মাঝে মাঝে নিরামিষ খাবেন, তখন টক দই খেতে পারেন। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে মাছ-মাংস-ডিম খাওয়া স্বীকৃত।
২৩. হালকা রঙের পোশাক, বিশেষত হালকা নীল বা আকাশি রঙের পোশাক-পরিচ্ছদ স্বাস্থ্যকর।
২৪. পানীয় জলের সমস্যা প্রায় সর্বত্র। বিচার-বিশ্লেষণ করে জল খাবেন। 
২৫. অমাবস্যা-পূর্ণিমায়-একাদশীতে নিরামিষ খাবেন। উপবাসও করতে পারেন।
২৬. কাঁসা, স্টিল, কাচ বা চিনামাটির পাত্র বা থালাবাটি ব্যবহার করুন। পদ্মপাতা, শালপাতা বা কলাপাতা ব্যবহার করা যায়। তবে তা দিয়ে নিত্যদিনের আহার সমাপ্ত করা সহজ নয়।  প্লাস্টিক, কাগজ বা থার্মোকলের থালা-বাটি-গ্লাস-চায়ের কাপ প্রভৃতি কোনও মতেই ব্যবহার করবেন না।
২৭. পলিপ্যাকে বাজার করবেন না। পলিপ্যাকের সঙ্গে চামড়ার সম্পর্ক হলে ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল। এমনকী কাঁচা শাকসব্জি, কাটা মাছ মাংস, ফলমূল পলিপ্যাকে রাখবেন না। খবরের কাগজে প্যাক করেও রাখতে নেই। পলিপ্যাকের সান্নিধ্যে শরীরের কোনও অংশ বারবার ঘষা খেলে চামড়ায় ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
২৮. ডিম কেনার পর ভালোভাবে ধুয়ে ফ্রিজে বা রান্নাঘরে রাখুন।
২৯. ফ্রিজ ব্যবহারে অনেক রকমের সতর্কতা আছে, তা জেনেবুঝে ব্যবহার করবেন। কোন দ্রব্য কীভাবে রাখবেন, কতদিন রাখবেন তা জেনে নেবেন।
৩০. ডিম ও দুধ ভালোভাবে না ফুটিয়ে খাবেন না।
৩১. একটানা বেশিক্ষণ বসে কাজ না করে, মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে, হেঁটে পুনরায় কাজ শুরু করবেন।
৩২. ঋতুকালীন ও ঋতুসন্ধিকালীন দিনযাপন সাবধানে করতে হয়।
৩৩. মল ত্যাগ, প্রস্রাব, পিপাসা, বমি, খিদে, হাঁচি, কাশি, প্রভৃতির বেগ এলে তা আটকে রাখতে নেই। মোট ১৩ প্রকার বেগ আছে।
৩৪. রাত জেগে পড়াশুনা, টিভি দেখা, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ চালানো একেবারে উচিত নয়। এখন রাত জেগে মোবাইল দেখাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। যন্ত্রপাতি থেকে নিঃসৃত হালকা রশ্মিও ক্ষতিকর। শরীর ও মনের পুরো সিস্টেমটাই উলট-পালট হয়ে যায়। রাত না জেগে সকালে তাড়াতাড়ি উঠে সেই কাজই সারুন। রাতে নাইট বাল্বও জ্বালাবেন না।
৩৫. শ্রাবণ মাসে শাক, ভাদ্র মাসে দই ও লাউ এবং আশ্বিনে দুধ নিষিদ্ধ। বর্ষাকালে ও রাতে শাক না খাওয়াই ভালো, বিশেষত পত্রশাক।
৩৬. ধূমপান ও ধূমহীন নেশা করবেন না। যত রকমের নেশা আছে ত্যাগ করুন। 
৩৭. কথায় কথায় অম্বলের ওষুধ খাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ বা মলম লোকের কথা শুনে ব্যবহার করবেন না। অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড ঘটিত ওষুধ কোনওভাবেই নিজে নিজে খেতে বা লাগাতে যাবে না। 
৩৮. শিশুকে মাতৃদুগ্ধ তার জন্মের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে খেতে দেবেন। 
৩৯. তালশাঁস খাওয়ার পর গুড় ও কাঁঠাল খাওয়ার পর দুধ খেলে কোনও সমস্যা আসতে পারবে না। 
৪০. সারাদিন ২-৩ ঘণ্টার বেশি টিভির সামনে বসলে পুরুষদের প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যহত হবে। রাত্রিজাগরণ ও দিবানিদ্রা ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর। রাত ১১টার পরে শুতে গেলে নারী ও পুরুষ সকলেরই সমস্যা বাড়বে। 
৪১. খাদ্যে বাছবিচার— কোনটা কখন খেতে নেই, কোনটার সঙ্গে কোনটা খেতে নেই, কোনটা কাঁচা কোনও পাকা খেতে হবে, কোনটা সিদ্ধ করে জল ফেলে রান্না করতে হবে, তা একটু বিচার করে খাবেন। ভিটামিন আর ক্যালোরি বিচার করে সত্যি সত্যি পথ্য নির্বাচন করা খুবই কঠিন কাজ। কু-সংস্কার ভেবে ফেলে দেবেন না। 
৪২. প্রসাধনী দ্রব্য সাবধানে ব্যবহার করা উচিত। সবচেয়ে ভালো হবে— কোনও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারলে। পরিবেশ-পরিস্থিতি-কাল-জলবায়ু-শারীরিক গঠন-খাদ্যাভ্যাস বিচার করে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। সবকিছুর মধ্যে খাদ্যেরও পরম্পরা আছে, পূর্বপুরুষরা যে জিনিস খেয়ে আসছেন, সেটা খেলে শরীরের বিশেষ কোনও ক্ষতি হবে না। একেই বলে সাত্ত্বিক আহার। 
৪৩. অবসর সময়ে বই-পত্র-পত্রিকা পড়ুন প্রয়োজনে কিছু কিছু লিখে রাখুন। বার্ধক্যে বাগান, চারাগাছ তৈরি সৃষ্টিধর্মী কাজ, বাচ্চাদের নিয়ে সময় কাটাবেন। স্ত্রীকে অফুরন্ত সময় দেবেন। 
৪৪. কোনওকিছুর অতিরিক্ত ভালো নয়। রাগ-লোভ-হিংসা-অহংকার-পরশ্রীকাতরতা বাদ দিয়ে বাঁচুন।
যে খাদ্য খাই না কেন, তার মূল উপাদান হল— শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট আর প্রতিটি কোষ তা খাদ্য হিসেবে নিয়ে থাকে। শারীরিক বিপাকক্রিয়ায় উৎপন্ন মল বা বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে। সেগুলিকে প্রত্যহ বের করে দিতে পারলে শরীর বুড়িয়ে যাবে না। অম্লধর্মী ও ক্ষারধর্মী পদার্থ দু’ভাগে শরীরে ঢোকে। অম্লধর্মী খাবার আমরা বেশি খাই, যেমন মাছ-মাংস-ডিম, দানাশস্য, চা, কফি, ময়দা, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য প্রভৃতি। ক্ষারধর্মী খাদ্য মূলত শাকসব্জি, ফলমূল— অথচ আমরা কম পরিমাণে খাই। এদিকে প্রোটিন ও শর্করা থেকে শরীর অম্লধর্মী বর্জ্য তৈরি করে। অম্লধর্মী বর্জ্য ও বিষাক্ত দ্রব্যগুলি ঘাম ও মল-মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা এবং মদ্যপান, ধূমপান, খৈনি, জর্দা, নস্যি অতিরিক্ত মাত্রায় হলে, ক্ষারধর্মী জল কম খেলে তা বেরতে পারে না, কোষে কোষে জমা হয়। ক্ষারধর্মী খাদ্য কম খাওয়ায় ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বেরতে পারে না, সেগুলি গাঁটে গাঁটে কোষে কোষে জমা হতে থাকে। শরীরে জমে থাকা বর্জ্যপদার্থগুলি তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে দেয়, হঠাৎ বার্ধক্য আসার এটি মূল কারণ। অল্প বয়সে রক্তে ক্ষারের পরিমাণ স্বাভাবিক (পিএইচ ৭.৪৪) থাকলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে। এখানেই সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। পিএইচ-টা ঠিক রাখতে পারলে, বয়স বাড়তে থাকবে, তবুও বুড়োটা মনে হবে না। ক্ষার অম্লকে অনেকটা নষ্ট করে দেয়।
খাদ্যে নানাপ্রকার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায় শরীরকে রোগমুক্ত করে বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে। আয়ুর্বেদের চিন্তা ভাবনায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট নিয়ে কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তবে তাঁরা যেসব শাকসব্জি, ফলমূল, ঔষুধি দ্রব্য নির্বাচন করে গিয়েছেন, সেগুলির অধিকাংশই আজকের দিনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের বাহক। কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে।
টাটকা শাকসব্জি, আপেল, বেদানা, কিশমিশ, মনাক্কা, আমন্ড-আখরোট-পেস্তা-কাজু-চিনে বাদাম প্রভৃতি। আম, জাম, আতা, আনারস, খেজুর, ডাব ও নারকেল, কলা, পেয়ারা, পেঁপে, কমলা, কালো আঙুর, মিষ্টি আলু, মধু, আমলকী, হরীতকী, বহেড়া, চিরতা, যষ্ঠিমধু, অশ্বগন্ধা প্রভৃতি। বেদানা ইত্যাদি বীজসমেত হয়, এগুলি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। বেদানা ব্রেস্ট ও ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধক। ধমনীর ভেতরের ময়লা সাফ করে। ত্বকে বয়স্কের ছাপ পড়ে না। দীর্ঘ যৌবন লাভের সঙ্গে নারী ও পুরুষ সবল সক্ষম থাকে। বাদাম জাতীয় খাদ্য, স্ট্রবেরি, মিষ্টি আলু, বিন জাতীয় খাদ্য, লাল শাক, পালং শাক, মেথি শাক, বেতো শাক, কুলেখাড়া, লাউশাক, পুঁই শাক প্রভৃতি বার্ধক্য প্রতিহত করে। আঙুরের বীজে ও গ্রিন টি-তে যেসব অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় সেগুলি অত্যধিক শক্তিশালী। আঙুরের বীজে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট- অলিগোমেরিক প্রো-অ্যান্থাসায়াসিন। এটি ভিটামিন-ই এর চেয়ে ৫০ গুণ ও সি এর চেয়ে ১০ গুণ বেশি শক্তিসম্পন্ন। গ্রিন টি থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ভিটামিন-ই এর চেয়ে ২০ গুণ ও সি-এর চেয়ে ১০০ গুণ অধিক শক্তিশালী। এগুলি বার্ধক্যকে বিলম্বিত করতে পারে।
শরীরে ক্ষার ও অম্লের সমতা থাকা উচিত। আর ভারী ধাতু— মার্কারি (পারদ), লেড (সীসা), সেঁকো বিষ (আর্সেনিক), ক্যাডমিয়াম প্রভৃতি যাতে শরীরে ঢুকতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে। খাদ্যের মাধ্যমে শরীর ভালো থাকলেও যৌবনের শেষাশেষি রসায়ন ও বাজীকরণ ওষুধ খাওয়ার প্রসঙ্গ রয়েছে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে। কী কী খাবেন আর কী কী খাবেন না, এ সম্বন্ধে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। শরীর সুস্থ রাখতে চাইলে অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি-কড়াতে রান্না করবেন না। ফলে শরীরে এটির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে পাকস্থলী, কোলন ও মস্তিষ্কের ক্ষতি (বুদ্ধিহীনতা) করবে।
বয়স হলে, রিটায়ারমেন্টের পর অথবা চাকরি না করে ব্যবসা বাণিজ্য-চাষাবাদ থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে বিশ্রাম জীবনযাপন করতে চাইছেন, তাঁদের উচিত নিজেদের পছন্দমতো কাজ বেছে নেওয়া, তা থেকে হয়তো তেমন আয় হবে না, কিন্তু মানসিক শান্তি পেতে পারেন। এছাড়া বই পড়া, গান শোনা, টুকিটাকি লেখালেখি, বয়স্কদের বিনোদের আখড়ায় কিছুটা সুখ-দুঃখের অংশীদার হওয়া, শিশুদের কাছে কিছুক্ষণ শিশু হয়ে যাওয়া, এসব জীবনকে বাঁচতে শেখায়। যতদিন পারবেন নিজের কাজ নিজেই করবেন। সামান্য কষ্ট হলেও আনন্দ ও তৃপ্তির স্বাদ পাবেন।
এবার রসায়ন ও বাজীকরণ ঔষধের প্রসঙ্গে আসা যাক। আদিকাল থেকে মানুষের কামনা—স্বাস্থ্যকর নীরোগ দীর্ঘজীবন বা দীর্ঘায়ু লাভ। রসায়ন ওষুধ ব্যবহারে আয়ু, দেহ ও ইন্দ্রিয়ের বল, স্মৃতি ও মেধার বৃদ্ধি ঘটে এবং সমগ্র শরীরের পুষ্টি সাধন, রোগপ্রতিহত করার ক্ষমতা বৃদ্ধি, শরীর ও মনকে সর্বদা তাজা রাখতে সাহায্য করে। রসায়ন অর্থে কেবল ওষুধ নয়, তিনটি পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়— ওষুধ, পথ্য ও বিহার (দৈনন্দিন কাজকর্ম, শরীচর্চা প্রভৃতি)। উদ্দেশ্য— স্বাভাবিক স্বাস্থ্যরক্ষা, সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনলাভ, স্মৃতি-মেধা-বুদ্ধি এবং যৌবন ও কান্তি লাভ। বয়স তো থেমে থাকবে না, সে তো বাড়তেই থাকবে। তা বাড়তে থাকুক, কিন্তু বুড়ো হওয়া চলবে না। আমৃত্যু তরতাজা-লাবণ্যমণ্ডিত চেহারা থাকবে। সেজন্য শরীরের বড় অংশ চামড়া যেন ভালো থাকে। রসায়ন ওষুধ দু’ভাগে ব্যবহার করা যায়। ১) রোগ বিনাশের জন্য। ২) সুস্থাবস্থায় ব্যবহারের জন্য। সুস্থাবস্থায় ব্যবহৃত ওষুধসমূহকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়— রসায়ন ও বাজীকরণ। যেসব ওষুধ সেবনে হঠাৎ অকালবার্ধক্য আসতে পারে না, পুষ্টি ও পরমায়ু বৃদ্ধি পায়, সেগুলিকে রসায়ন ওষুধ বলা হয়। যেসব ওষুধ সেবনে পুরুষদের অশ্বের ন্যায় শক্তি জন্মে, সেগুলিকে বাজীকরণ ওষুধ বলে। এসব ওষুধ বালক ও বৃদ্ধদের (৭০ এর পরে) দিতে নেই। আবার চবনপ্রাশ একটি রসায়ন ওষুধ হলেও সব বয়সের মানুষ— নারীপুরুষ নির্বিশেষে খেতে পারে।
দীর্ঘকাল যৌবনকে ভোগ করার বাসনায় রসায়ন ও বাজীকরণ ওষুধের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি। তাতে সমাজের সামান্য কিছু মানুষের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হতো। কিছু রসায়ন ও বাজীকরণের ওষুধের তালিকা দেওয়া হচ্ছে, যেগুলি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না। যেমন— ভৃঙ্গরাজাদি চূর্ণ, শ্রীসিদ্ধমোদক, শ্রীমদনানন্দ মোদক, অশ্বগন্ধারিস্ট, মৃত সঞ্জীবনী সুরা, অষ্টাবক্র রস, মণ্মথ রস, নির্গুণী কল্প, বসন্ত কুসুমাকর রস, ত্রৈলোক্য চিন্তামণি রস, বৃহৎ পূর্ণচন্দ্র রস, ঋতু, রিতকী, শ্রীমহালক্ষ্মী বিলাশ রস, অমৃতার্নব রস, মকধ্বজ রসায়ন, নীলকণ্ঠ রস, অমৃতসার লৌহ, শিলাজতু রসায়ন, ত্রিফলা রসায়ন প্রভৃতি।
তবে বার্ধক্যে শিলাজতু রসায়ন ও মকরধ্বজ রসায়ন ব্যবহার করা যায় খুব সহজে, তবে তা চিকিৎসকের মতানুসারে। মকরধ্বজচূর্ণ, রসসিন্দুর চূর্ণ, কস্তুরী-মকরধ্বজচূর্ণ সাধারণ চিকিৎসা ও রসায়ন চিকিৎসায় ব্যবহার্য। হস্তীকর্ণ পলাশের মূলচূর্ণ ৫০০ মিলিগ্রাম থেকে ১ গ্রাম মাত্রায় মধু বা ঘৃত সহ দিনে একবার খেয়ে তারপর আহার করলে অশ্বের ন্যায় বলিষ্ঠ, মেধাবি, দীর্ঘজীবী ও বলবান হওয়া যায়। এটি রসায়ন ও বাজীকরণের সহজলভ্য ভালো ওষুধ। যৌবনের পর থেকে মাঝে মাঝে প্রয়োজনমতো খেতে পারেন।
লেখক : ভারত সরকারের আয়ুর্বেদ গবেষণা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসাবিজ্ঞানী, বনৌষধি গবেষক আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ও অধ্যাপক

31st  December, 2024
খাবার নিয়ে নানা ভুল ধারণা 

খাবার নিয়ে প্রচলিত এমন অনেক ধারণা আছে যা একেবারেই ভুল। কলা খেলে নাকি শ্লেষ্মা হয়। ইউরিক অ্যাসিডে মসুর ডাল নিষিদ্ধ। এসব কি ঠিক? খাবার নিয়ে নানা ভুল ধারণা ভেঙে দিলেন পুষ্টিবিদ স্বাগতা মুখোপাধ্যায়।  বিশদ

01st  January, 2025
কোন খাবারের পর কী খাওয়া উচিত নয়?

ভোজনরসিক বাঙালি খেতে বসলে হুঁশ থাকে না। ভাত-রুটি, ডাল-তরকারি, মাছ-মাংসে রসনা তৃপ্তি হয় বটে, কিন্তু এইসব খাবার কতটা প্রয়োজনীয়? কতটা ক্ষতিকর? আয়ুর্বেদে আছে সব খাবারই ভালো, কিন্তু সংযোগ দোষে তা ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। দেশ, কাল, অগ্নি, কোষ্ঠ, সংস্কার, পরিহার, উপচার, সম্পদ —এইরকম ১৭টি বিরোধ খাদ্য এড়িয়ে চলা দরকার। কোন খাবারের সঙ্গে কোন খাবার খাবেন না? কোন খাবার দিনে খাবেন? কোন ফল কখন খেতে হয়? বিরুদ্ধ খাদ্য কেন খাবেন না? লিখেছেন ডাঃ সুবলকুমার মাইতি।
বিশদ

01st  January, 2025
রহস্য মুক্তি পোস্টমর্টেমে!

শুধুই মৃতদেহ কাটাছেঁড়া নয়, অপরাধীকে চিহ্নিত করতে জরুরি হয়ে পড়ে পারিপার্শ্বিক প্রমাণও। জানাচ্ছেন প্রবীণ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ অজয় গুপ্ত বিশদ

01st  January, 2025
পোস্টমর্টেম কী

খুনের কিনারা করার জন্য সবথেকে প্রয়োজনীয় যে তথ্য তার সিংহভাগই পোস্টমর্টেম রিপোর্টে থাকে। হত্যার আগে ও সেই মুহূর্তে মনের অবস্থা, আচরণ কেমন ছিল ধর্ষক- হত্যাকারীর? সেটাই অপরাধের চালিকাশক্তি। আর সেই হদিশ মেলে পোস্টমর্টেমে। তদন্তের চাবিকাঠি ফরেনসিক রিপোর্ট। দেশের সাড়া জাগানো ধর্ষণ-প্রতিশোধমূলক 
হত্যার কথা লিখলেন সমৃদ্ধ দত্ত। ফরেনসিক এবং অটোপসি পরীক্ষা কী? খুন, অপঘাত, দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা—সবকিছুরই প্রমাণ রয়ে যায় দেহে। খুন কি চাপা দেওয়া যায়? দক্ষ পরীক্ষক-বিশেষজ্ঞরা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে উদ্ধার করে আনেন নিখুঁত সত্যকে। সেই কাজের ধরণ কেমন? ক্রাইমের আড়ালে থাকে এক অন্য থ্রিলার। ধাপে ধাপে এগন ফরেনসিক এক্সপার্টরা। কীভাবে? সেই রহস্যকথা শোনালেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাঃ অজয় গুপ্ত। 
বিশদ

01st  January, 2025
গয়া কেন 
মুক্তিতীর্থ?

গয়াকে কেউ বলে তীর্থ, কেউ বলে ক্ষেত্র, কারও কাছে পরিচিত ধাম নামে। ইতিহাস-কিংবদন্তি-লোকথায় জড়িয়ে আছে গয়া। শুধু তীর্থই নয় পর্যটনেও গয়া প্রসিদ্ধ। শহরটির উত্থান ভৌগোলিকতাকেও হার মানায় পুরাণের রোমাঞ্চকর কাহিনি। এখানেই গয়াসুর বধ হয়। এখানেই আছে প্রাচীন অক্ষয়বট, বিষ্ণুপাদপদ্ম। এমন কোনও মহাপুরুষ নেই যিনি এখানে আসেননি। আছে রহস্যময় গদাধর শিলা আর প্রেতশিলা! মৃত‌্যুর পর মানুষের আত্মার ঠিকানা স্থির হয় এখানেই। মৃতের কল্যাণে আছে নানা বিধিব্যবস্থা। তবে সবকিছুকেই ছাড়িয়ে যায় গয়ার নানা মিথ। কেন এটি মুক্তিতীর্থ? অজানা, রহস্যময় গয়ার কথা লিখেছেন ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিশদ

01st  January, 2025
ব্লু জোনের শতায়ু ডায়েট
সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায়

নাম, যশ, অর্থ, ক্ষমতাশীল ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ এবং সুস্বাস্থ্য— তাহলে আপনি অবশ্যই ঈশ্বরের কাছ থেকে বরদান হিসেবে সুস্বাস্থ্যই বেছে নিতে চাইবেন! কারণ সুস্বাস্থ্য বজায় থাকলে যে কেউ বাকি সৌভাগ্য অর্জন করে নিতে পারেন। আর ভগ্নস্বাস্থ্য হলে বাকি সব সৌভাগ্য অধরা থাকতে বাধ্য! বিশদ

31st  December, 2024
দীর্ঘ জীবনের দাওয়াই 
সিম্পল লিভিং হাই থিংকিং
ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায়

৮৯ বছর বয়স হল। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে রোগী দেখছি। এতদিন কেটে গেল সারা জীবনই কি স্বাস্থ্য অটুট থেকেছে? তা নয়। একবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। জোর ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছিল। সেই একবারই! বরাবর যতখানি স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা সম্ভব, করেছি। তাতে কর্মবিরতি হয়নি। বিশদ

31st  December, 2024
আয়ু বাড়ানোর ডায়েট
শতভিষা বসু

প্রতিটি জাতির আলাদা আলাদা গড় আয়ু আছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আয়ুষ্কাল মোটামুটি ৭০ বছর। ২৫ বছর আগে যা ছিল ৬২! আবার একজন মার্কিনির আয়ু প্রায় ৮০ বছর! ভারত বা বিদেশ— এতখানি আয়ুবৃদ্ধির পিছনে চিকিত্‍সাশাস্ত্রের উন্নতির যথেষ্ট হাত রয়েছে। বিশদ

31st  December, 2024
সুস্থভাবে দীর্ঘায়ু হতে কীভাবে 
সাহায্য করে যোগব্যায়াম
পরিতোষকুমার হাজরা

সারা বিশ্ব মেনে নিয়েছে যোগব্যায়ামের অপরিসীম গুণের কথা। ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর ২১ জুন বিশ্বযোগ দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), ভারত সরকার ও রাজ্য সরকার যোগ ও নেচারোপ্যাথি সিস্টেম অব মেডিসিন অ্যাক্ট ২০১০ তৈরি করেছে। বিশদ

31st  December, 2024
হোমিওপ্যাথিতে অসুখ নিরাময়
ডাঃ রামকৃষ্ণ ঘোষ

১৭৯৬ সাল। ওই বছরই বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি নামে একটি চিকিৎসা পদ্ধতি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন। যেখানে রোগীকে একসঙ্গে একটি মাত্র ওষুধ দিয়ে সুস্থ করে তোলাই হল চিকিৎসার মূলমন্ত্র। বিশদ

31st  December, 2024
জাতিস্মর কারা হয়?
তাঁরা কেন রহস্যময়?

জাতিস্মর কারা হয়? এখানেই যত বিস্ময়! এদের পূর্বজন্মের কথা মনে পড়ে। তেমনই তাদের কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল সেই বিবরণও দেয়। একমাত্র তারাই মৃত্যুর অভিজ্ঞতা কিংবা স্মৃতির প্রত্যক্ষ বিবরণ দেওয়ার অধিকারী। জাতিস্মরদের নিয়ে যখনই গবেষকরা রিসার্চ করেন, তখনই প্রশ্ন করা হয়েছে মৃত্যু কীভাবে হল? তাঁর পরিবার-পরিজন-প্রতিবেশি-বন্ধু কেমন ছিল? মানুষ মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জানতে পারে না যে, ঠিক মৃত্যুর মুহূর্তটি কেমন হবে! কীভাবে পলকের মধ্যে মৃত্যু এসে জীবনকে স্তব্ধ করে দেয়! তখন কেমন বোধ হয়? মৃত্যুকে কেমন দেখেছে সে? এটাই যুগ যুগ ধরে জানতে চায় নশ্বর মানুষ! এর উত্তর জানে জাতিস্মররাই। কিন্তু সত্যিই কি উত্তর মেলে? এই চির রহস্যের কথা শোনালেন সমৃদ্ধ দত্ত।
বিশদ

30th  December, 2024
মৃত্যু কি আগাম
ইঙ্গিত দেয়?

স্বামী বিবেকানন্দ বলে গেছেন, মৃত্যু চিন্তা ভালো। কারণ এই জগৎ কতটা মিথ্যা সেটা বোঝার জন্য। তবে মৃত্যুভয় ভালো নয়। জগতের বড় বিস্ময় মৃত্যু। মৃত্যুকালে মানুষের শুদ্ধ চেতনাকে আচ্ছন্ন করে দেয় অন্ধকার। সাধক-যোগীরা সেই অন্ধকারকে কাটাতে পারেন। বীরের মতো দেহ ছেড়েছেন বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, রাম ঠাকুর, বালানন্দ ব্রহ্মচারি, নিগমানন্দ ঠাকুর, পরমহংস যোগানন্দ স্বামী, দুর্গাপুরী মাতাজি। মৃত্যুযোগ যাঁরা অভ্যাস করেন তাঁরাই নিজের মৃত্যুকালটি জানতে পারেন। সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবেন মৃত্যুকাল আসন্ন? মৃত্যুকালে মানুষের মুখ কেন খোলা থাকে? শাস্ত্রে আছে, কারও যদি মনে হয় সূর্যের তেজ কমে আসছে, তাহলে তার আয়ু বেশিদিন নেই। রয়েছে আরও কিছু পূর্ব লক্ষণ। মৃত্যুর পূর্বে মানুষ নানারকম স্বপ্ন দেখেন, কী সেই স্বপ্ন? লিখেছেন সোমব্রত সরকার।
বিশদ

07th  October, 2024
আত্মার উপস্থিতি কীভাবে
অনুভব করা যায়?

আত্মার অস্তিত্ব নিয়ে সারা বিশ্বজুড়ে অনেক কথা শোনা যায়। আশ্চর্যের বিষয়, মহাপুরুষ থেকে সাধারণ মানুষও আত্মার উপস্থিতি বুঝতে পারেন। আচার্য শঙ্করাচার্য থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ, আবার রাম ঠাকুর থেকে নিগমানন্দ সরস্বতী এমনকী বিশ্বের তাবড় মনীষীরাও স্বীকার করেন আত্মার অস্তিত্ব। জীবন ফুরিয়ে গেলেই তা শেষ হয়ে যায় না। এ বিষয়ে গীতা থেকে ভারতীয় অধ্যাত্মশাস্ত্র কী বলে? প্ল্যানচেটে অাত্মা আনা সম্ভব। কলকাতায় এক সময় এটি জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু আত্মারা কখনও স্বইচ্ছায় আসেন তাঁর প্রিয়জনের কাছে! তাঁদের সুখ-দুঃখের সাথী হন। কোন পরিস্থিতিতে আত্মারা আসেন? কীভাবে বুঝবেন তাঁদের উপস্থিতি? কী সহায়তা করেন তাঁরা? লিখেছেন সোমব্রত সরকার। 
বিশদ

07th  October, 2024
অপদেবতা কি ক্ষতি করে?

অপদেবতা মানুষের ক্ষতি না উপকার করে? লিখেছেন অগ্নিশ্বর সরকার। বিশদ

07th  October, 2024

Pages: 12345

একনজরে
লিবারেল পার্টির দলনেতা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। শাসক দলের নেতা ও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে উঠে এসেছে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতর নামও। তিনি পরিবহণ মন্ত্রী অনিতা আনন্দ। তামিল পরিবারে জন্ম অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কৃতী প্রাক্তনীর। ...

২০১৮ সালে কেপটাউনে টেস্ট অভিষেক যশপ্রীত বুমরাহর। আর এই ফরম্যাটে কেরিয়ারের শুরু থেকেই চোট-আঘাত তাঁর সঙ্গী। আসলে বুমবুমের বোলিং অ্যাকশনই এমন যে চোট পাওয়ার আশঙ্কা থাকে ...

ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজিতে শান দিতে একদিনের কর্মশালা আয়োজন করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। মঙ্গলবার এই কর্মশালায় ৬০টি স্কুলের মোট ৩০০ জন ছাত্রছাত্রী যোগ দেয়। এই কর্মশালায় পড়ুয়াদের ব্যাকরণ, শব্দভাণ্ডার এবং বাক্য গঠনের শুদ্ধতার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। ...

রোজই ভিড় বাড়ছে শ্রীরামপুর বইমেলায়। ৩ জানুয়ারি শ্রীরামপুর বইমেলার উদ্বোধন হয়েছিল। তারপর থেকেই ভিড়ের দাপট শুরু হয়েছে। এমনিতেই ঐতিহ্যের এই শহরে বইমেলাও একটি ঐতিহ্য। তারপর উৎসব মরশুম। ফলে গান্ধী ময়দানে ভিড় জমাচ্ছে জনতা। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন।  ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১০২৫: সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করলেন সুলতান মামুদ
১৩২৪:  ভেনিসিয় পর্যটক ও বনিক মার্কো পোলোর মৃত্যু
১৬৪২: বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর মৃত্যু
১৮০৬: ব্রিটেন উত্তমাশা অন্তরীপ দখল করে নেয়
১৮৬৭: আফ্রিকান আমেরিকানরা ভোটাধিকার লাভ করে
১৮৮৪: সমাজ সংস্কারক ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের মৃত্যু
১৯০৯: সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম
১৯২৬: বাদশা হোসেন বহিষ্কার। ইবনে সাউদ হেজাজের নতুন বাদশা। দেশের (হেজাজ) নাম পরিবর্তন করে সৌদি আরব করা হয়।
১৯২৬:  কিংবদন্তি ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী তথা ওড়িশি নৃত্যের জন্মদাতা কেলুচরণ মহাপাত্রের জন্ম 
১৯৩৫: প্রবাদপ্রতিম অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর জন্ম
১৯৩৫: মার্কিন গায়ক এলভিস প্রেসলির জন্ম
১৯৩৯: অভিনেত্রী নন্দার জন্ম
১৯৪১: ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দের প্রয়াণ
১৯৪২: ইংরেজ পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের জন্ম
১৯৫৭: অভিনেত্রী নাফিসা আলির জন্ম
১৯৬৩: প্রথমবারের মতো লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত পেইন্টিং ‘মোনালিসা’ আমেরিকার ন্যাশনাল গ্যালারী অব আর্টে প্রদর্শন
১৯৬৫: অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদারের জন্ম
১৯৬৬: বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক বিমল রায়ের মৃত্যু
১৯৮৪: প্রথম ভারতীয় মহিলা পাইলট সুষমা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৯০: অভিনেত্রী নুসরত জাহানের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৪.৯৭ টাকা ৮৬.৭১ টাকা
পাউন্ড ১০৫.৭০ টাকা ১০৯.৪৩ টাকা
ইউরো ৮৭.৫৩ টাকা ৯০.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৭,৪০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৭,৭৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৩,৯০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৯,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৯,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৪ পৌষ, ১৪৩১, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫। নবমী ২০/৮ দিবা ২/২৬। অশ্বিনী নক্ষত্র ২৫/১৮ দিবা ৪/৩০। সূর্যোদয় ৬/২২/৩৩, সূর্যাস্ত ৫/৪/৫। অমৃতযোগ দিবা ৭/৬ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৯ গতে ৮/৩২ মধ্যে পুনঃ ১০/৪০ গতে ১২/৪৮ মধ্যে। রাত্রি ৫/৫৮ গতে ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ৮/৩৮ গতে ৩/৪৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/৬ গতে ৭/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১/৩১ গতে ৩/৪০ মধ্যে। বারবেলা ৯/২ গতে ১০/২৩ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৩ গতে ১/৩ মধ্যে। কালরাত্রি ৩/২ গতে ৪/৪২ মধ্যে।
২৩ পৌষ, ১৪৩১, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫। নবমী দিবা ২/২। অশ্বিনী নক্ষত্র অপরাহ্ন ৪/৩৬। সূর্যোদয় ৬/২৫, সূর্যাস্ত ৫/৪। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৯ মধ্যে ও ১০/১ গতে ১১/২৮ মধ্যে ও ৩/৭ গতে ৪/৩০ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১১ গতে ৮/৫৭ মধ্যে ও ২/১ গতে ৬/২৫ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৪৩ গতে ৩/৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৫৭  গতে ১০/৩২ মধ্যে। কালবেলা ৯/৫ গতে ১০/২৪ মধ্যে ও ১১/৪৪ গতে ১/৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৩/৫ গতে ৪/৪৫ মধ্যে। 
৭ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে দিল্লিতে একটি স্মারক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন কেন্দ্রের

07-01-2025 - 10:27:00 PM

 মানুষ কংগ্রেসের প্রতি উৎসাহ দেখাচ্ছেন: কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত

07-01-2025 - 10:00:00 PM

গুজরাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল

07-01-2025 - 09:23:00 PM

গুজরাতে একাধিক নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ৭৭৯ কোটি টাকা অনুমোদন করলেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল

07-01-2025 - 08:59:00 PM

আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতে বৃষ্টির সম্ভাবনা

07-01-2025 - 08:34:00 PM

পূর্ণকুম্ভ ২০২৫: প্রয়াগরাজে মাউন্টেড পুলিসের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ৫টি ঘোড়া কিনল যোগী সরকার

07-01-2025 - 08:24:00 PM