কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
সোমবার তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রিন্সিপালের অফিসের সামনে গাছতলায় ফর্ম পূরণ করার জন্য ছাত্রীদের ভিড়। কন্যাশ্রী-২ ফর্ম পূরণ করে ছাত্রীরা কলেজে জমা করছেন। অথচ বিভিন্ন সাবজেক্টের ক্লাসরুম প্রায় ফাঁকা। ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি নগন্য। কলেজ কর্মীরাই বলছেন, কলেজে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের বেশিরভাগ কন্যাশ্রী-২ এবং স্কলারশিপের টানে আসছেন। ওইসব ফর্ম পূরণের জন্য ভিড় থাকলেও ক্লাসে হাজিরা সেভাবে নেই। তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ে মোট আসন সংখ্যা ২৪০০। এবছর ফার্স্ট সেমেস্টারে ৯৫০জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়। অর্থনীতি, পদার্থবিদ্যা প্রভৃতি বিষয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা একেবারে কম। ১৭টি অনার্স বিষয়ে একটিরও সব আসন পূরণ হয়নি। ২০২৪ সালে প্রথম সেমেস্টারে অনার্স ও জেনারেল মিলিয়ে তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ে মোট আসনের অর্ধেকও ছাত্রছাত্রী পাওয়া যায়নি।
২০১৬সালে শেষবার এই কলেজে ন্যাক ভিজিট হয়। তখন এ গ্রেড পেয়েছিল ওই কলেজ। তারপর ২০২১সালে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, করোনা পরবর্তী সময়ে ওই ভিজিট আটকে যায়। আট বছর বাদে গত ১১ ও ১২ডিসেম্বর ন্যাক টিম কলেজ পরিদর্শন করে। ওই দু’দিন প্রত্যেক পড়ুয়ার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের সেরা পারফরমেন্স তুলে ধরলেও ন্যাকের বিচারে তা যথেষ্ঠ ছিল না। যেকারণে কলেজের পয়েন্ট মাত্র ২.৯২। এ গ্রেডের জন্য ন্যূনতম তিন পয়েন্ট প্রয়োজন। কিন্তু, সেটা অর্জন করতে পারেনি ঐতিহ্যবাহী এই কলেজ। অথচ, ২০১৯সাল থেকে এই কলেজে পাঁচ ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের টপার হয়েছেন। তারপরও কলেজে পড়ুয়া সঙ্কট চলছে। পঠনপাঠনেও গা-ছাড়া মনোভাব এসেছে বলে অভিযোগ। আর এটাই এ-গ্রেড খোয়ানোর অন্যতম কারণ বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও কলেজে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কলেজে পঠনপাঠন থেকে প্রশাসনিক কাজে প্রভাব পড়ছে। অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ খেয়ালখুশিমতো আসা-যাওয়া করেন বলে অভিযোগ। এসব আটকানোর জন্য কলেজে বায়োমেট্রিক হাজিরা সিস্টেম চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
কলেজের প্রিন্সিপাল আব্দুল মতিন বলেন, আমাদের বি প্লাস প্লাস গ্রেড হয়েছে। আমরা এই রেজাল্ট রিভিউয়ের আবেদন করেছি। রিভিড় হলে আশা করি নিজেদের আগের গ্রেড ফিরে পাব। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা প্রাক্তন বিধায়ক ব্রহ্মময় নন্দ বলেন, তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ের মতো একটি ঐহিত্যবাহী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই অবনমন দুঃখজনক। আশা করি কর্তৃপক্ষ এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।-নিজস্ব চিত্র