কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুমিতা সিং মল্ল পুরুলিয়া জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীও। তাঁর অভিযোগ, বরাবাজার থেকে বেরেদা যাওয়ার রাস্তার ধারে খেজুরবাঁধের কাছেই রয়েছে জেলা পরিষদের জমি। সেই জমির পরেই রয়েছে রায়তি জমি। সেই রায়তি জমির বর্তমান মালিক কয়েকজন প্রমোটারকে জমিটি পল্ট করে বিক্রি জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। অভিযোগ, সেই জমি প্লটিংয়ের পাশাপাশি জেলা পরিষদের জমিও প্লট করে বিক্রি করা হচ্ছে! সুমিতাদেবীর অভিযোগ, তিনি যখন গোটা বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করতে যান, তখন জমি মাফিয়ারা তাঁকে জানান, জায়গাটি জেলা পরিষদের কাছ থেকে লিজ নেওয়া আছে। জেলা পরিষদেরই কোনও এক ‘প্রভাবশালী’ জায়গাটি বিক্রির ‘সাহস’ দিয়েছেন তাঁদের। তাই তাঁরা জমি বিক্রি করছেন।
কর্মাধ্যক্ষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে সরকারি জমি দখলের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে কিছু লোকজন নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এই ঘৃণ্য কাজ করে যাচ্ছে। জেলা পরিষদের কেউ যদি এই কাজে মদত দিয়ে থাকে, তাহলে তাঁর শাস্তি হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, অভিযোগপত্র পাওয়া মাত্রই গত ২৬ ডিসেম্বর অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) রানা বিশ্বাস গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন বরাবাজারের বিডিওকে। বিডিও ঋদ্ধিবাণ দত্ত বলেন, ‘ আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি মাফিয়ারা যে লিজের তত্ত্ব খাড়া করছে, আসলে তা ‘বেআইনি দখলদারি’ বলে নথিতে উল্লেখ রয়েছে। কীভাবে এই নথি তৈরি করা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এনিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলা পরিষদ) একটি চিঠি লিখেছেন ভূমিদপ্তরের অতিরিক্ত জেলা শাসককে। জেলা পরিষদের ওই জায়গার যে রেকর্ড রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ‘বেআইনি দখলদারি’ শব্দটিও সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বরাবাজারের বিএলএলআরও সুদেষ্ণু অধিকারী বলেন, ‘এনিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগেই ওই জায়গা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত। জেলা পরিষদের আয় বাড়াতে ওই জায়গায় তিনি দোকান তৈরির পরিকল্পনা নেন। কিন্তু, তার পরেও সেই জায়গাটি বেহাত হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ! এনিয়ে সভাধিপতি বলেন, ‘আদৌ কী হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। যেখানে যেখানে জেলা পরিষদের জায়গা আছে, সেখানে আমরা বোর্ড লাগানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।’
তবে, প্রশ্ন উঠছে, সরকারি জায়গা প্লট করে বিক্রির সাহস দেখালেন কারা? সূত্রের খবর, গোটা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ওই এলাকারই এক দাপুটে তৃণমূল নেতা, পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন এক সদস্য, এক শিক্ষক নেতা, এক সিপিএম নেতার ভাইপো সহ একাধিক ঠিকাদার। তাঁদের মাথায় জেলা পরিষদের কোন ‘প্রভাবশালী’র হাত রয়েছে, সেই নিয়েই কৌতুহল তৈরি হয়েছে সর্বত্র। নিজস্ব চিত্র