বিজ্ঞান গবেষণা ও ব্যবসায় আজকের দিনটি শুভ। বেকাররা চাকরি প্রাপ্তির সুখবর পেতে পারেন। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় একমাস হল এই কাণ্ড কারখানা শুরু হয়েছে মহকুমার বিভিন্ন গ্রামে। কান্দির কোটালডিহি, শাসপাড়া, নোয়াপাড়া এলাকাতেই এমন ঘটনা বেশি দেখা গিয়েছে। সালার, ভরতপুর ও বড়ঞা থানা এলাকাতেও একই ঘটনা ঘটে চলেছে। গ্রামের মহিলাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায়দিনই বিভিন্ন এলাকায় দূরের কোনও গ্রামের পরিচয় দিয়ে কয়েকজন মহিলা তাঁদের গ্রামে আসছেন। তাঁরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করছেন। বলা হচ্ছে, এটি একটি হোম মেকিং ব্যবসা। এটি পরিচালনা করছে দিল্লির একটি কোম্পানি। ওই কোম্পানি কলম তৈরির ব্যবসা করাচ্ছেন মহিলাদের দিয়ে। এর রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ৬৫০ টাকা দিতে হবে। সঙ্গে আরও লাগবে আধার কার্ডের জেরক্স কপি ও মোবাইল নম্বর। বদলে রেজিস্ট্রেশনের পরের দিনেই পেন তৈরির কাঁচামাল বাড়িতে হোম ডেলিভারি দিয়ে যাবে কোম্পানির লোকেরা। ১৫ দিন পর কোম্পানির লোকজন তৈরি মাল ফেরত নিয়ে যাবেন। এমনিভাবে মাসে দু’বার কারবার চালানোর পর মজুরি দেওয়া হবে।
তবে একার বদলে গ্রুপ তৈরি করে এই ব্যবসা করলে ভালো হবে বলে ওই অজ্ঞাতপরিচয় মহিলারা জানাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে ১০ জন থেকে ২৮ জনের গ্রুপ তৈরি করা যেতে পারে। কান্দির শাসপাড়া এলাকায় ২৮ জনের দু’টি গ্রুপ ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে বলেও জানানো হচ্ছে। কোটালডিহি গ্রামেও একটি ২৮ জনের গ্রুপ তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
বাড়িতে বসে এমন কাজ পাওয়ার টোপ গিলে এলাকার হাজার হাজার মহিলা তাঁদের আধার কার্ডের জেরক্স কপি, মোবাইল নম্বর ও নির্ধারিত টাকা জমা দিচ্ছেন। যদিও টাকা জমা দেওয়ার পর একজন মহিলাও কাঁচামাল পাননি। শাসপাড়া গ্রামের মহিলা জুমাতুন বিবি বলেন, আটদিন হল আধার কার্ডের জেরক্স ও টাকা জমা দিয়েছি। ওঁরা বলছেন এখনও রেজিস্ট্রেশন হয়নি। যেদিন রেজিস্ট্রেশন হবে, তার পরদিন কাঁচামাল বাড়িতে চলে আসবে। অপর মহিলা শুকতারা বিবি বলেন, ওই মহিলারা বলে গিয়েছেন আমাদের মধ্যে একজনকে হেড বানাতে হবে। টাকাপয়সার লেনদেন তাঁর মাধ্যমেই হবে। কীভাবে পেন তৈরি করা হবে, তাও শিখিয়ে দিয়ে যাবেন বলেছেন। তাই এখন অপেক্ষা করছি।
এদিকে এই ব্যবসার বিষয়টি দ্রুত মহিলাদের মাধ্যমেই ছড়িয়েছে বলে কোটালডিহির এক মহিলা সৌরভ বিবি জানান, আমার এক আত্মীয়ের কাছে শুনেছি এই ব্যবসার কথা। ওঁরা শুধু পেন তৈরির করার কথাই বলছেন না, বাদাম থেকে ছোলা ভাজার প্যাকেট তৈরিও করা হবে বলে জানিয়েছেন।
এদিকে এই কোম্পানির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে পশ্চিম দিল্লির উত্তম নগর এলাকার। কোম্পানির কর্ণধার হলেন বিপিন গুপ্তা। তিনি বলেন, আমি প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভারতবর্ষের বিভিন্ন এলাকায় এই ব্যবসা চালাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গেও অসংখ্য মহিলা এই কাজ করছেন। রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ সাড়ে ৬০০ জমা দেওয়ার পরদিনই কাঁচামাল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে কান্দি মহকুমা শাসক উৎকর্ষ সিং বলেন, এমন অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে এটি কোন প্রতারণা কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।