বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
এদিন ভিড়ে ঠাসা জনসভায় ১৪ মার্চের নারকীয় অত্যাচারের কাহিনী তুলে ধরার পাশাপাশি তিনি নন্দীগ্রামে বন্ধ রেল প্রকল্পের জন্য বিজেপি সরকারকে দায়ী করেন। শুভেন্দুবাবু বলেন, যারা ভোটের সময় আধাসামরিক বাহিনী নিয়ে ভোট প্রচারে আসবেন, তাঁদের উত্তর দিতে হবে, কেন পাঁচ বছরে নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পে একটি ইটও গাঁথা হয়নি। কেন ১২০০ জমিদাতাদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জমিদাতা আজও চাকরি পায়নি।
এদিন সকাল ১১টা নাগাদ শুভেন্দুবাবু ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এরপর সাড়ে ১১টা ভাঙাবেড়া শহিদ মিনারে স্মরণসভায় যোগ দেন। বিকেলে ৪টে নাগাদ নন্দীগ্রাম কলেজ মাঠে ১৪ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত দলীয় জনসভায় আসেন শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ কখনও ভুলে যাওয়ার দিন নয়। আমরা যদি পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগের কথা মনে রাখি, তাহলে আমরা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও সিপিএমের হার্মাদদের কথা ভুলে যেতে পারি না। সেদিন দিল্লিতে কংগ্রেস ও সিপিএমের সরকার ছিল। সেই সময় সোনিয়াজি, মনমোহন সিংরা ওড়িশার মালকো আন্দোলনে, রাজস্থানের গুর্জর আন্দোলনে, অন্ধ্রপ্রদেশের আন্দোলনে গুলি চলায় দৌড়ে গেলেও নন্দীগ্রামে আসেননি।
তিনি বলেন, নন্দীগ্রাম কারও সাহায্য পায়নি। কেউ নন্দীগ্রাম নিয়ে ব্যবস্থা নেয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নন্দীগ্রামে সিবিআই তদন্ত হলেও তারা রাধারানি আড়ি, কল্পনা মুনিয়ান, নর্মদা শীটের নামে চার্জশিট দিয়েছে। কিন্তু, একটাও চটি জুতো ও খাঁকি পোশাক পরা হার্মাদের নামে চার্জশিট দেয়নি। আমাদের লোকেদের লাইন দিয়ে জামিন নিতে হয়েছে। মার খেয়েছে আমাদের লোক। ৩০০ মায়ের ইজ্জত গিয়েছে, মন্দির মসজিদগুলিকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে, ইদের আনন্দ হয়নি, দুর্গাপুজোর আনন্দে কেউ মেতে উঠতে পারেনি, বাড়িতে বাড়িতে দীপাবলির আলো জ্বলেনি। শহিদের রক্তে ভেসে যাওয়া নন্দীগ্রামে কেবল স্বজন হারানোর কান্না ছিল। সেদিন আমি সেবক হিসেবে দৌড়ে এসেছিলাম। আজ সেই নন্দীগ্রামে রাজ্য সরকার, হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে নানা উন্নয়নের কাজ হয়েছে। ৮০০কোটি টাকার জল প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে। তাই কোনওভাবেই যাতে বিভাজন না আসে, সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। উন্নয়নে বিশ্বাস করি। নন্দীগ্রামের সব মানুষকে আমার আপনজন মনে করি। নন্দীগ্রামের সব দলের লোক ও মানুষকে আমার লোক বলে মনে করি। কেউ আমার কাছে এসে ফিরে যায়নি। বিজেপির লোকেরা লুকিয়ে চুরিয়ে এখানে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছে। আমি তা করতে দিইনি। যাঁরা এইসব করছিলেন, স্থানীয়ভাবে তাঁদের সবাইকে নিয়ে আমি বসেছিলাম। আমি ওঁদের বলেছি, বাইরের লোকেদের ঢুকতে দেবেন না। বাইরের লোকেদের কথা শুনবেন না। আপনাদের সমস্যা আমাকে বলুন। আমি যদি মেটাতে না পারি, তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে বাইরের লোকেদের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রয়োজনে সাহায্য নেবেন। তাঁরা আমার কথা শুনেছেন। তাই নন্দীগ্রামে উস্কানি থেমে গিয়েছে।
এদিনের সভায় শুভেন্দুবাবু ছাড়াও তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস, সহকারী সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান, কর্মাধ্যক্ষ মধুরিমা মণ্ডল, আনন্দময় অধিকারী, নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।