বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
ভোট ঘোষণা হওয়ার অনেক আগেই মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিস ধরপাকড় অভিযানে নেমেছে। ইতিমধ্যে জেলা পুলিস প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, বোমা সহ বেশ কিছু দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি, এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাউন্ড-ডাউন অভিযানে নেমেছে। জেলার জনবহুল এবং বড় থানা এলাকাগুলিতে বাউন্ড-ডাউনের সংখ্যা বেশি। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর, কান্দি, ডোমকল, সূতি, বেলডাঙা, রঘুনাথগঞ্জ প্রভৃতি থানার এলাকা বড়। সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় জনসংখ্যাও বেশি। গোলমাল পাকানোর আশঙ্কায় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিসকর্মীরা প্রচুর অভিযুক্তকে ধরে। তারপর মহকুমা শাসকের আদালতে তুলে ধৃতদের বাউন্ড-ডাউন করা হয়। অর্থাৎ, মহকুমা শাসকের নির্দেশে এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে অভিযুক্তদের কাছ থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়।
ভোট ঘোষণা হওয়ার আগেই জেলায় প্রায় ৭ হাজার জনের কাছ থেকে এমন মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলমাল পাকানোর আশঙ্কায় জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে জেলায় ৩১৫৯টি কেস রুজু করা হয়েছে। এতে ৬৮৬২জন অভিযুক্তকে বাউন্ড-ডাউন করা হয়েছে। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসে সিআরপিসির ১০৭ধারায় ১৩৫০টি কেসে ৩২২৩জন এবং ফেব্রুয়ারি মাসে সংশ্লিষ্ট ধারায় ১৬৩১টি কেসে ৩৪০৯জনকে বাউন্ড-ডাউন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে এলাকায় মস্তান হিসেবে পরিচিত। এলাকাবাসীদের চমকে, ধমকে কিংবা ভয় দেখিয়ে তারা এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বলে অভিযোগ। কেউ কেউ আবার মদ্যপ অবস্থায় মাঝেমধ্যেই অকারণে এলাকাবাসীর সঙ্গে ঝামেলা করে বলে অভিযোগ। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় রয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার পর সমন পাঠিয়ে তাদেরকে থানায় ডেকে আনা হয়। তারপর এসডিও’র আদালতে তাদেরকে হাজির করা হয়।
এরবাইরে সিআরপিসির ১০৯ ধারায় জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১৬৬টি কেস রুজু করে ২১৮জন সন্দেহভাজনকে বাউন্ড-ডাউন করা হয়েছে। সন্দেহজনক কাজকর্ম করার অভিযোগে তাদের বাউন্ড-ডাউন করা হয়েছে। তাছাড়া, সিআরপিসির ১১০ধারায় জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১২টি কেস রুজু করে ১২জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এককথায় তারা কথায় কথায় অপরাধ সংগঠিত করে। পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ভোট ঘোষণা হওয়ার আগে নির্বাচন কমিশন কয়েকবার প্রশিক্ষণ শিবির করে। তাদের নির্দেশমতো বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভীতি প্রদর্শনকারী বা ট্রাবল মুঙ্গার, পুরনো বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত এবং সন্দেহভাজনদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এবার ওই তালিকা ধরে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরপরও ভোটের দিন এলাকায় গোলমাল হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, কয়েকদিন আগে ভোট ঘোষণা হয়েছে। এখন বাউন্ড-ডাউন নিয়ে জেলা পুলিস আরও তৎপর হয়ে উঠেছে। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, জেলায় বাউন্ড-ডাউনের সংখ্যা আরও বাড়বে। এছাড়া, বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ব্যক্তিদের ধরতে তল্লাশি অভিযানে নামা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওয়ারেন্ট জারি হওয়া প্রায় দেড় হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলার সংযোগস্থল ফুটিসাঁকো, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানা সংলগ্ন সূতি ও ফরাক্কা থানা এলাকায় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে নাকা তল্লাশি অভিযান চলছে। জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাতেও নজর রাখা হয়েছে। কয়েকদিন আগে বিএসএফের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।