বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
জঙ্গিপুর ও রঘুনাথগঞ্জ, এই দুই শহরের বুক চিরে গিয়েছে ভাগীরথী নদী। উত্তরে ফিডার ক্যানেল, ফরাক্কা জলাধার এবং দক্ষিণে ৯ লক্ষ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জলাধার রয়েছে। শহরের পূর্বে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বইছে পদ্মানদীর একটি শাখা। এই শহর জল আর জলাধারে বেষ্টিত হলেও পরিস্রুত পানীয়জল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী।
রাস্তার ধারে বা পাড়ায় লাগানো পুরসভার পানীয় জলের কল থাকলেও নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় জল পড়ে এবং কিছু এলাকায় সরু সুতোর মতো হয়ে জল পড়ছে। জঙ্গিপুর পুরসভায় মোট ২১টি ওয়ার্ড। ভাগীরথীর পূর্বপাড়ে ৫.১৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে জঙ্গিপুর শহরে ১৩টি ওয়ার্ডে প্রায় ৫০হাজার মানুষ বসবাস করেন। রয়েছে জঙ্গিপুর কলেজ, দু-তিনটি উচ্চ বিদ্যালয় এবং রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লক অফিস। ভাগীরথীর পশ্চিমপাড়ে ৮টি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি জঙ্গিপুর শহরের অপর অংশ রঘুনাথগঞ্জ। ২.৫৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৪০হাজার মানুষ শহরে বাস করেন। জঙ্গিপুর সদর হাসপাতাল, রঘুনাথগঞ্জ থানা, জঙ্গিপুর কোর্ট, এসডিও, বিডিও অফিসসহ একাধিক অফিস আর ব্যবসায়িক কেন্দ্র রয়েছে। জনসংখ্যার নিরিখে সরকারি হিসেব অনুয়ায়ী প্রতিদিন ৬০ লক্ষ লিটারের বেশি জল প্রয়োজন। অথচ দু’টি শহরে পৃথক দু’টি ৯ লক্ষ লিটারের জলাধার রয়েছে। ভাগীরথী থেকে জল তুলে দু’টি শহরে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু, তাতেও সঙ্কট মিটছে না।
পুরসভার চেয়ারম্যান মোজাহারুল সাহেব বলেন, অম্রুত প্রকল্পে ১৫ কোটি টাকার জল প্রকল্প অনুমোদন মিলেছে। দ্রুতগতিতে জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে। আগামী এক বছরের মধ্যেই শহরবাসীকে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে পারব। তাছাড়া কোনও এলাকায় জলের সমস্যা থাকলে জরুরি ভিত্তিতে জলট্যাঙ্কের সাহায্যে জল দেওয়া যায় কি না ভাবনাচিন্তা করা হবে। তবে, গোটা পুর এলাকায় পর্যাপ্ত টিউবওয়েল চালু রয়েছে। প্রয়োজনে আরও টিউবওয়েল দেওয়া হবে।
জলস্তর নেমে যাওয়ায় বাড়ির নলকূপগুলিতে জল তুলতে বেগ পেতে হয়। কারণ, শহরে বেআইনিভাবে অনুমতি ছাড়াই অন্তত দুই শতাধিক সাবমার্সিবল পাম্প চলছে বিভিন্ন বাড়িতে। ফলে সাধারণ নলকূপগুলি অকেজো হয়ে পড়ে।
ফলে সাধারণ মানুষের ভরসা পুরসভার নলবাহিত পানীয় জলই। কিন্তু, বিভিন্ন এলাকায় পাইপলাইন থাকলেও জল আসে না। তারমধ্যে ১, ৮ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে জল মিলছে না। রাধানগর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাওয়ানুর বিবি বলেন, মাঠ পার করে কাদিকোলা থেকে জল বয়ে আনি। কিন্তু, এখন সেখানেও জল পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে কলের জলই খাই। এনায়েত নগরের বাসিন্দা রাকেশ মণ্ডল বলেন, জল নিয়ে এলাকায় নিত্য ঝামেলা হওয়ায় এলাকার লোকজন জলের ট্যাপকল ও পাইপ ভেঙে ফেলেছে। মহাবীরতলা থেকে জল নিয়ে আসি। ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তিন ফুট গর্ত করে অতিরিক্ত নল লাগিয়ে জল সংগ্রহ করেন। এক বাসিন্দা বলেন, একটি পাঁচ লিটারের জার জল ভর্তি হতে ১৫-২০ মিনিট লেগে যায়। ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সম্মানি মণ্ডলের দেওর লক্ষ্মণ মণ্ডল বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ সত্য। কারণ, এলাকায় জলের সমস্যা আছে। তবে, জলপ্রকল্পের কাজ হয়ে গেলে বছরখানেকের মধ্যেই জল সমস্যা মিটে যাবে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সুবীর রায় বলেন, রঘুনাথগঞ্জ শহরে জলের তেমন সমস্যা না থাকলেও পুর এলাকায় সমস্যা আছে। রঘুনাথগঞ্জের বালিঘাটা এবং জঙ্গিপুরের ধনপতনগর, রাধানগরে জল পৌঁছয় না।