বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
সুশীলবাবুর বাড়ি ঘাটাল পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কোন্নগরে। বাড়িতেই তাঁর পাথর ও টাইলসের ব্যবসা রয়েছে। মৌমিতা ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নার্স ছিলেন। বাড়ি থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে কোন্নগরেই তাঁর মাসির বাড়ি। বুধবার রাতে তাঁর মাসির ছেলে শুভব্রত বেরার বিয়ে ছিল। সুশীলবাবুর ভাই হীরু দাস বলেন, সেজন্য একটি গাড়িতে করে আমরা ওই রাতে হাওড়ার কদমতলায় বিয়ে দিতে গিয়েছিলাম। গাড়িতে দাদা, বউদি, ভাইঝি এবং চালককে নিয়ে মোট ন’জন ছিল।
বিয়ের অনুষ্ঠানের পরই রাত ১২টা নাগাদ সুশীলবাবুরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। চালকের পাশেই ছিলেন সুশীলবাবু। দ্বিতীয় সারিতে মাঝখানে বসেছিলেন মৌমিতা। ওই বিয়েবাড়িতেই নিজের গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন কুশপাতার অন্য এক বাসিন্দা অভীক চক্রবর্তী। অভীকবাবু বলেন, একটি বাস, দু’টি স্করপিও এবং আমার গাড়িটি প্রায় একসঙ্গেই ফিরছিল। গাড়িগুলির মধ্যে দু’-তিন কিলোমিটারের ব্যবধান ছিল। সুশীলবাবুদের গাড়িটিই প্রথমে ছিল।
মেচোগ্রামে অভীকবাবুদের সঙ্গে হীরুবাবুর কথাও হয়। রাস্তার পাশে কিছু না বুঝতে পেরেই অভীকবাবুরেদর গাড়ি দুর্ঘটনাস্থল পেরিয়ে ঘাটলের দিকে অনেকটাই চলে আসে। অভীকবাবু বলেন, তারপরই আমি খবর পেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। মৌমিতাকে তখন স্থানীয় বাসিন্দারা গাড়ি থেকে টেনে বের করছেন। তাকে আমার গাড়িতে তুলে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সুশীলবাবু এবং গাড়ির চালক কেউই সিট বেল্ট বাঁধেননি। দুর্ঘটনার পর গাড়িতে সেন্সর লক থাকায় গাড়ির দরজা খোলা যাচ্ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারা দরজা ভেঙে সুশীলবাবু এবং চালককে বের করেন। পুলিসের অনুমান, গাড়িটি একটি কালভার্টে ধাক্কা দেওয়ার পরই পাশের নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। পুলিস প্রাথমিকভাবে মনে করছে, যেহেতু মৌমিতা দ্বিতীয় সারির মাঝে বসেছিলেন, তাই গাড়িটি কালভার্টে ধাক্কা মারার সঙ্গে সঙ্গেই মৌমিতাও চালক ও সুশীলবাবুর সিটের মাঝখান দিয়ে সামনে গিয়ে আছড়ে পড়েন ও মারাত্মক চোট পান। ঘাটাল পুসভার চেয়ারম্যান বিভাসচন্দ্র ঘোষ বলেন, এদিন সকালেই ওই খবর পাই। আমরা ঘটনাটিকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
মৌমিতার বাড়ির সামনেই ঘাটাল হাসপাতাল। বাড়ি থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। ময়না তদন্তের পর দুপুরে দেহ দু’টি বাড়িতে পৌঁছালে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে। অপরিচিতরাও কান্না চেপে রাখতে পারেননি। দুপুরে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই মৃতদের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান। এদিকে দুঘর্টনার খবর পেয়ে এদিন ভোরেই নবদম্পতি কোন্নগরে আসেন।