বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
সেক্ষেত্রে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দেওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াত। কিন্তু, প্রার্থী ঘোষণার পরে সেইসব আশঙ্কা দূর হয়েছে। সাবোতাজের আশঙ্কা দূর হওয়ায় দলীয় নেতাদের মনেও স্বস্তি ফিরেছে। ইতিমধ্যে দলীয় বৈঠকে একজোট হয়ে ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, জেলার একাধিক নেতা ও নেত্রী টিকিট পাওয়ার আশা করেছিলেন। তাঁদের কাউকে প্রার্থী করা হলে অন্যজনের মনে ক্ষোভ হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ জেলার সব নেতা মানতে বাধ্য। তাছাড়া সুব্রতবাবুর মতো যোগ্য লোককে প্রার্থী হিসেবে পেয়ে বাঁকুড়া জেলার নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে দলের সবস্তরের কর্মী খুশি হয়েছেন। তাই সবাই একজোট হয়ে প্রচারে নামবেন। ইতিমধ্যে লোকসভা এলাকায় দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে। সুব্রতবাবু এলেই জোরকদমে প্রচার শুরু করা হবে। তাছাড়া আজ, শুক্রবার সোনামুখীতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করবেন। তাঁর নির্দেশমতোই জেলাজুড়ে এককাট্টা হয়ে প্রচার শুরু করা হবে।
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে বিদায়ী সংসদ সদস্য মুনমুন সেন এবারে বাঁকুড়ায় দাঁড়াচ্ছেন না বলে বেশ কিছুদিন ধরেই জেলায় জোর চর্চা চলছিল। তাই সেই জায়গায় এবার জেলারই কাউকে প্রার্থী করা হবে বলে অনেকে মনে করছিলেন।
সেই আশায় তৃণমূলের অনেক নেতা ও নেত্রী বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার জন্য ইঁদুর দৌড় শুরু করেছিলেন। অনেকেই লবি ধরে দিল্লি যাওয়ার ছাড়পত্র জোগাড়ের আশায় ছোটাছুটি করছিলেন। কিন্তু, সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুনমুন সেনকে বাঁকুড়ায় প্রার্থী না করলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সাবোতাজ হওয়ার আশঙ্কা করে জেলার কাউকে প্রার্থী করার ঝুঁকি নেননি। তাঁর জায়গায় অপর এক হেভিওয়েট বর্ষীয়াণ নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে বাঁকুড়ায় প্রার্থী করেছেন। সুব্রতবাবু এর আগেও ২০০৯ সালে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন। যদিও সেবার তিনি সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়ার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তাই বাঁকুড়ার রাজনৈতিক ময়দান সুব্রতবাবুর বেশ ভালোভাবেই চেনা।
শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর এক বছরের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১২ সালে এশিয়ার বৃহত্তম নলবাহিত জল প্রকল্প বাঁকুড়ার মানুষকে উপহার দিয়েছেন। বাঁকুড়ার মতো রুখাশুখা জেলার মানুষের পানীয় জলের দীর্ঘদিনের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ওই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। প্রথম দফায় জেলার ১৪টি ব্লককে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সম্প্রতি দ্বিতীয় দফায় আরও চারটি ব্লককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওই সমস্ত কাজই হচ্ছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মাধ্যমে। তাই বাঁকুড়ার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ওই দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী সুব্রতবাবুর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন বলে মনে করছে তৃণমূল শিবির। সেই বিষয়টিকে সামনে রেখেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুব্রতবাবুকে বাঁকুড়ায় প্রার্থী করে মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছেন। তাছাড়া সুব্রতবাবু প্রার্থী হওয়ায় একদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকানো যাবে। অন্যদিকে, হেভিওয়েট প্রার্থী দিয়ে বিরোধী দলের কাছে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।