কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ... বিশদ
দ্বিতীয় এজেন্ডা: অভিন্ন দেওয়ানি আইন। এর পক্ষে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর আভাস, বিল আসছে শীঘ্রই।
তৃতীয় এজেন্ডা: সনাতন হিন্দু বোর্ড। যুক্তি হল, ওয়াকফ থাকলে সনাতন কেন নয়?
এই এজেন্ডাগুলির নেপথ্যে আসল মস্তিষ্ক কাদের? রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। শতবর্ষে পৌঁছে একে একে এজেন্ডা পূরণে গতি আনতে চাইছে তারা। তারই অঙ্গ হিসেবে সনাতন বোর্ড গঠনের দাবি তুলেছে দেশের প্রথম সারির ধর্মসংগঠন, আখড়া, আশ্রম পরিচালকদের সম্মিলিত মঞ্চ। পোশাকি নাম, অল ইন্ডিয়া সনাতন কাউন্সিল। তারা প্রশ্ন তুলেছে, ওয়াকফ বোর্ডের হাতে লক্ষ লক্ষ একর জমি এবং সম্পদ থাকলে, হিন্দুধর্ম কী দোষ করল? হিন্দু সমাজেও রয়েছে একইভাবে অন্তহীন দেবত্র সম্পদ এবং দান করা জমি। অথচ তার রক্ষণাবেক্ষণে নির্দিষ্ট সম্পত্তি বোর্ড নেই! তবে এই বোর্ড গঠনে আর দেরিও নেই। কারণ, খসড়া প্রস্তুত। তা পেশ হবে আসন্ন পূর্ণকুম্ভেই। কাউন্সিলের ধর্মসংসদে। কারণ হিন্দুত্বের এজেন্ডা পূরণের জন্য প্রয়াগের থেকে বেশি উপযুক্ত মঞ্চ আর কী-ই বা থাকতে পারে? স্থির হয়েছে, শঙ্করাচার্যের চার পীঠ, ১৩টি সন্ন্যাসী আখড়া এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রাচীন ও খ্যাতনামা ধর্মীয় সংগঠন ও আশ্রমের পরিচালকদের নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর অনুমোদিত হবে প্রস্তাব। সেই খসড়া যাবে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রত্যেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য—উভয় স্তরে সনাতন বোর্ড গঠন করতে হবে। প্রাথমিক প্রস্তাবের রিপোর্ট গত মাসেই তুলে দেওয়া হয়েছে অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সভাপতি শ্রী মোহন্ত স্বাণী রবীন্দ্র পুরী মহারাজের হাতে। ঠিক হয়েছে, সনাতন হিন্দু বোর্ডকে সাংবিধানিক স্বশাসিত পরিষদের স্বীকৃতি দাবি তোলা হবে। আখড়া পরিষদের সভাপতি হবেন বোর্ডের কার্যকরী সভাপতি। আচার্য পদে প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন। বোর্ডে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অথবা কোনও প্রতিনিধিরা থাকবেন। এছাড়া অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সিনিয়র আইনজীবী এবং সংবিধান ও পুরাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের রাখার প্রস্তাব হয়েছে। আনন্দ আখড়ার বালকানন্দ গিরি বলেছেন, ‘সনাতন ধর্মের রক্ষায় এই বোর্ড গঠন প্রয়োজন। সনাতন বোর্ড কারও সম্পদ কেড়ে নেবে না। কিন্তু সনাতনী মন্দির ও সম্পত্তি রক্ষা করবে।’
বোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা কী? সনাতনী কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে যে, দেশের প্রাচীন সনাতনী মন্দিরের উদ্ধার ও পুনরুজ্জীবন, রক্ষণাবেক্ষণ, আইনি জটিলতা ইত্যাদি তাবৎ কাজ করবে সনাতন হিন্দু বোর্ড। এই বোর্ডের হাতে ক্ষমতা থাকবে, যে কোনও ধর্মস্থানের সমীক্ষা করার। অতএব যদি কোনও দাবি ওঠে, সন্দেহ দানা বাঁধে, কিংবা ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণের সন্ধান মেলে, তাহলে সেই সন্দেহ নিরসনের অধিকার থাকবে বোর্ডের কাছে। অর্থাৎ সমীক্ষা। তাহলে আজমির শরিফ, সম্ভল অথবা ভোজশালায় বিচ্ছিন্নভাবে যে দাবি উঠছে, সেগুলিই কি এক ছাতার তলায় আসবে? এই অবস্থায় বিরোধীদের প্রশ্ন একটাই—প্লেসেস অব ওয়রশিপ অ্যাক্ট (স্পেশাল প্রভিশনস) ১৯৯১, সংশোধন করাই সঙ্ঘের পরবর্তী এজেন্ডা নয় তো?