বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
আড়াই বছর আগে নোট বন্দির ঘোষণামাত্র প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন মমতা। তারপর থেকেই দেশজুড়ে মোদি বিরোধী জেহাদে একের পর এক দলকে তিনি শামিল করেছেন। গত জানুয়ারিতে ব্রিগেডে ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার মঞ্চ থেকে দেশে বিকল্প সরকার গঠনের ডাক দিয়েছেন তিনি। এদিন দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে মমতা বলেন, নোটবন্দি দেশের সর্ববৃহৎ কেলেঙ্কারি। এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ড মিটিংয়ের নথি প্রকাশ্যে তুলে ধরে তিনি দেখান, প্রাক্তন চেয়ারম্যান উর্জিত প্যাটেল সহ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। মোদিবাবু কার স্বার্থে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। দুর্নীতির প্রশ্নে রাফাল কেলেঙ্কারি নিয়ে এদিন রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতা। তাঁর দাবি, একের পর এক ক্ষেত্রে ব্যর্থ মোদি। পুলওয়ামা থেকে বালাকোট কাণ্ডের পর থেকে সেনাবাহিনীকে নিয়ে দলীয় রাজনীতি করছে বিজেপি। দেশপ্রেমের নাম করে মিডিয়ার একাংশকে দিয়ে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলেও মোদির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মমতা। তাঁর মতে, কোটি কোটি টাকা নিয়ে ভোটের ময়দানে নেমেছে বিজেপি। নানাভাবে প্রলুব্ধ করে তৃণমূলের মুষ্টিমেয়কে দলে টানতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। এই বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোদি-শাহের উদ্দেশে মমতার তাচ্ছিল্যভরা কটাক্ষ, ‘ধার চাহিয়া লজ্জা দেবেন না’। উল্লেখ্য, এবার যে সাংসদরা টিকিট পাননি, তাঁরা দলের সিদ্ধান্তেই সরে গিয়েছেন। মমতা বলেন, তাঁদের সবাইকে সংগঠনের কাজে লাগানো হবে। বোলপুর ও বিষ্ণুপুরের দুই সাংসদকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। দলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি এবার আর নির্বাচনে প্রার্থী হননি। একদা মমতার কেন্দ্র দক্ষিণ কলকাতার হাইপ্রোফাইল আসনে এবার প্রার্থী হলেন কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। মমতা জানান, দল বড় হয়েছে। দায়িত্বের চাপও রয়েছে। তাই সাংগঠনিক কাজে সময় দিতে সুব্রত বক্সিকে লোকসভার প্রার্থী তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।
তবে, প্রায় আড়াই মাস ধরে সাত দফায় নির্বাচন যে রাজ্যবাসীর পক্ষে অসুবিধার, সেকথা মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তামিলনাড়ু, কেরল, গুজরাতের মতো রাজ্যে কেন একদিনে ভোট করা হচ্ছে, তার নেপথ্যে রাজনৈতিক অভিসন্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, যেসব রাজ্যে মোদিকে বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে, সেখানেই বেশি দফার ভোট করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তাঁর সতর্কবার্তা, নিরপেক্ষ থাকুন, শুধুমাত্র বিজেপির অভিযোগে নজর দেবেন না। চার্টার্ড প্লেনে ও হেলিকপ্টারে করে কোটি কোটি টাকা ভোটের মুখে রাজ্যে আনার পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির। ভোটারদের টাকা দিয়ে কিনতে চায় তারা। এই বিষয়ে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি ফের এদিন নির্বাচনী সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করেছেন তৃণমূল নেত্রী। ইভিএম কারচুপির আশঙ্কা থেকেই সব বুথে ভিভিপ্যাট ব্যবহারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ভোটের প্রচারে সেনাবাহিনীর ছবি ব্যবহার না করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশের সংবিধান নাগরিকদের রক্ষাকবচ। সেই সংবিধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্বশাসিত সংস্থা (পড়ুন সিবিআই, আয়কর দপ্তর, ইডি ইত্যাদি) ধ্বংস করেছেন মোদি-শাহরা। তাঁরা ইতিহাসকে বদলে দিতে চাইছেন। সব মিলিয়ে দেশে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সেই ভয় থেকে মুক্তির লক্ষ্যেই রাজ্যের সব আসনে জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ী মমতা। ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার নেতৃত্বে বিকল্প সরকার সময়ের দাবি বলেই মনে করেন তিনি।