সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাটে ন্যায্যমূল্যে সব্জি, চাল সহ নানা খাদ্যসামগ্রীর জোগান দিতে ‘সুফল বাংলা’ স্টল চালু হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই স্টলে মাঝেমধ্যে কিছু শুকনো সব্জি ছাড়া কিছুই মিলছে না। মহকুমাশাসক সৌরভ পাণ্ডে বলেন, ওই স্টলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থাকার কথা। কেন এমন অবস্থা, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।
২০১৯ সালের ৩ আগস্ট রামপুরহাটে ‘সুফল বাংলা’ স্টলের উদ্বোধন করেন কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। গোবিন্দভোগ, তুলাইপাঞ্জি, কালোনুনিয়া, রাঁধুনিপাগলা ও রাধাতিলক চাল সেখানে মিলত। এছাড়া, হরেকরকমের ডাল, তেল, ঘি, মধু, মাছ-মাংস, হাঁস, মুরগি ও কোয়েলের ডিম সবই সেখানে পাওয়া যেত। একছাতার তলায় এতরকম খাদ্যসামগ্রী সুলভ দামে পেয়ে ক্রেতারা খুশি হয়েছিলেন। মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সেখানকার বেশিরভাগ প্যাকেটবন্দি খাবার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোডাক্ট। বলা হয়েছিল, সরাসরি চাষিদের থেকে সংগ্রহ করা সব্জি এখানে বিক্রি করা হবে। কিন্তু এখন এক বস্তা আলু, সামান্য ডিম, ও তেল ছাড়া তেমন কোনও পণ্য এখানে নেই। আলু বাজারদরের চেয়ে দু’টাকা কম দামে পাওয়া গেলেও ডিম ও তেলের দাম একই।
ওই স্টলের কর্মী পুষ্পজিৎ মণ্ডল অবশ্য বলেন, আগে স্থানীয় একটি সংস্থা এই স্টল চালাত। এখন অন্য সংস্থা পেয়েছে। ওই সংস্থা এখনও সেভাবে মালপত্র মজুত করেনি। কিছুদিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।
এলাকার বাসিন্দা জ্যোৎস্না মাল বলেন, বাজার থেকে কম দামে টাটকা সব্জি, মাছ বিক্রির জন্যই সরকার এই স্টল খুলেছিল। বাজারে এখন সবকিছুর চড়া দাম। এসময়ে সুফল বাংলা স্টল আমাদের কাজে আসছে না। কয়েকদিন আগে কিছু শুকনো সব্জি আনা হয়েছিল। দামও বাজারের মতোই। তাই এখন বাজার থেকেই কেনাকাটা সেরে নিই। অনেকে ব্যাগ হাতে স্টলে এলেও চাহিদামতো জিনিস না পেয়ে ফিরে যান।
এই স্টলের বিল্ডিংয়ে এক্সপোর্ট হাবও খোলা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, নলহাটির চাষিদের উৎপাদিত কচু এই হাবে মজুত করে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইতালি, জার্মানি সহ অন্য দেশে রপ্তানি করা হবে। সরকার-নির্ধারিত কোম্পানি সেই কাজ করবে। স্থানীয়রা জানান, প্রথম প্রথম এই হাব থেকে লরিতে কচু বোঝাই করা হতো। কিন্তু এখন লরি আসতে দেখা যায় না। এখন স্টল ও হাব চত্বর স্থানীয়দের কাপড় শুকোনোর জায়গায় পরিণত হয়েছে। সুফল বাংলা স্টলের পিছনেই পুরসভা, কয়েকহাত দূরে মহকুমা শাসকের কার্যালয়। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও সমস্যা মেটানোর বিষয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।