অর্ক দে, কলকাতা: বাংলার ভোটার ‘মোদি’, আবার হরিয়ানারও ভোটার ‘মোদি’। একই এপিক কার্ডের নম্বর দেশের দু’প্রান্তের রাজ্যে ব্যবহার করে কীভাবে মোদিজি ভোটার তালিকায় নাম তুললেন, এখন সেটাই রহস্যের। কলকাতার রাসবিহারী থেকে হরিয়ানার গুরগাঁও, দূরত্ব ১৬০০ কিমি’রও বেশি। দুই বিধানসভা কেন্দ্রেই ভোটার তালিকায় জ্বলজ্বল করছে এই মোদিজি মানে প্রদীপকুমার মোদি’র নাম। এপিক কার্ড নম্বরও এক! এহেন ব্যক্তির পরিবারের প্রতি ভালোবাসা, যে কারও কাছে শিক্ষণীয় বিষয়! প্রদীপকুমার মোদি যতটা পিতৃভক্ত, ঠিক ততটাই স্ত্রীর প্রতি অনুগত। হরিয়ানার গুরগাঁও বিধানসভা কেন্দ্রের এপিক কার্ডে যেমন রেখেছেন স্ত্রী’র নাম, তেমনই কলকাতার রাসবিহারী কেন্দ্রের এপিক কার্ডে নাম রেখেছেন বাবা বিশ্বনাথ মোদির। একই ব্যক্তি, একই এপিক কার্ডে দেশের দুটি প্রান্তের ভোটার তালিকায় কীভাবে নাম ঢোকালেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, চম্পাহাটিতে হাজার হাজার ভুয়ো ভোটার, বাংলার ভোটারর এপিক কার্ড নম্বরে হরিয়ানা, গুজরাত, উত্তর প্রদেশের ভোটারের সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। তার মধ্যে একই এপিক কার্ড ব্যবহার করে একই ব্যক্তি দু’রাজ্যের ভোটার তালিকায় রয়েছেন, বিষয়টি সামনে আসতেই সেই বিতর্ক আরও উস্কে উঠেছে।
প্রদীপকুমার মোদির এপিক কার্ড নম্বর-LXQ0046177, বাংলা ও হরিয়ানা দু’রাজ্যেই বিদ্যমান। ৭৭-গুরগাঁও বিধানসভা কেন্দ্রের ৯০ নম্বর কসবা গুরগাঁও পার্টে, ভোটার তালিকায় সিরিয়াল নম্বর ৫৩৪’এ নাম রয়েছে এই মোদিজি’র। এখানকার ভোটার কার্ডে তাঁর বয়স ৬১, এপিক কার্ডে নাম রয়েছে স্ত্রী কুসুম মোদির। কসবা গুরগাঁও পার্টে ‘আওয়ার লেডি ফাতিমা স্কুল, ওল্ড ডিএলএফ, সেক্টর-১৪’তেব রয়েছে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রটি। অন্যদিকে, ১৬০-রাসবিহারী কেন্দ্রের ৮৫ নম্বর কালীঘাট হাইস্কুল পার্টের ভোটার তালিকায় সিরিয়াল নম্বর ৪৩৫’এ নাম রয়েছে মোদিজি’র। ভোট গ্রহণ কেন্দ্র আর-৪, কালীঘাট হাইস্কুল, মহিম হালদার স্ট্রিটে। এপিক কার্ডে রয়েছে তাঁর বাবা বিশ্বনাথ মোদির নাম। এই কার্ডে প্রদীপকুমার মোদির বয়স ৬৪। অর্থাৎ কলকাতার ভোটার তালিকায় পরে নাম তোলা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করেন প্রদীপবাবুর ভাই এস কে মোদি। তাঁর দাবি, আমাদের পরিবার ১০০ বছর ধরে বাংলায় রয়েছে। আদি বাড়ি কালীঘাটেই। দাদা আগে এখানেই থাকতেন। বর্তমানে বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা হলে, ভোটার কালীঘাটেরই। এস কে মোদি’র আরও দাবি, মাঝে দাদা হরিয়ানায় থাকতেন। সেখানকার ভোটার তালিকা থেকে হয়তো নামটা বাদ দেওয়া হয়নি। তাই বাতিল হয়নি পুরনো কার্ড।
কালীঘাটের ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, কালীঘাটে মোদি ধরা পড়েছে! এটা কী করে সম্ভব। একজন মানুষ দু’রাজ্যের ভোটার। তাও আবার একই এপিক নম্বরে! স্ক্রুটিনি না হলে তো এগুলি ধরাই পড়ত না। নির্বাচন কমিশনের কাছে এসব পাঠানো হবে। এরকম আরও কত না কেস ধরা পড়ে, আশঙ্কা প্রবীরবাবুর।