নান্দীকারের নাট্যোৎসব একটি প্রতিবেদন 

অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস মঞ্চে নান্দীকারের ছত্রিশতম নাট্যমেলা অনুষ্ঠিত হল গত ডিসেম্বর মাসের ষোলো থেকে পঁচিশ তারিখ পর্যন্ত। নান্দীকারের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেই সমাপ্ত হল তাদের এই নাট্যোৎসব। বাংলা তথা ভারতবর্ষের অন্যতম নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তকে সম্মাননা জ্ঞাপন ও তার কর্মকীর্তি নিয়ে একটি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছিল। খ্যাতনামা শিল্পী প্রভাতী বাউলের গান দিয়ে নাট্যোৎসবের উদ্বোধন হয়।
ষোলোই ডিসেম্বর সনাতন দাস বাউলের পরিচালনায় মঞ্চস্থ হয় ‘রাধাভাব’ নাটকটি। দর্শকদের মণিকোঠায় স্থান করে নেয় নাটকটি। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে স্বপ্ন সন্ধানীর নাটক ‘একলা চলো রে’ প্রদর্শিত হয়। কৌশিক সেন পরিচালিত একলা চলো রে নাটকটি একটি উন্নত মানের প্রযোজনা। অভিনয় মঞ্চ ভাবনা এবং তার প্রয়োগ নজর কাড়ার মতো। বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় মিনার্ভা নাট্যচর্চা কেন্দ্রের নাটক ‘নাসিকা পুরাণ’ প্রর্দশিত হয় এই নাট্য মেলায়। হাস্যরসাত্মক এই নাটকটি অভিনয় দক্ষতার জন্য দর্শকদের করতালি আদায় করে নেয়। মুখোমুখি নাট্যদলের ‘ঘটক বিদায়’ নাটকটিও স্থান পেয়েছিল এই নাট্যমেলায়। পৌলমি চট্টোপাধ্যায়ের নিখুঁত নির্দেশনায় নাটকটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দেশকের অভিজ্ঞতা এবং পরিশীলিত চিন্তা-ভাবনা নাকটটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। উৎসবের পঞ্চম দিনে গৌতম সরকারের নির্দেশনায় ‘আর্ট’ নাটকটি মঞ্চায়িত হয়। অত্যন্ত মননশীল একটি প্রযোজনা, এই প্রযোজনায় বাড়তি পাওনা সত্রাজিৎ সরকার এবং অনির্বাণ চক্রবর্তীর দুরন্ত অভিনয়। ওই একই দিনে দিনকর শর্মার নির্দেশনায় চক্রধরপুর ঝাড়খণ্ডের পথনাটক ‘সফেদ’ এক অন্যরকম ভালোলাগার জন্ম দেয় দর্শকদের মনে। ওই দিনেই আরও একটি নাটক ‘বিষণ্ণ বারুদ’ মঞ্চস্থ হয়। এটি থিয়েট্রিক্সের প্রযোজনা। নাটকটি বেশ উচ্চমানের। একুশে ডিসেম্বর অল্টারনেটিভ লিভিং থিয়েটারের প্রযোজনা ‘লং মার্চ’ মঞ্চায়িত হয়। শুভদ্বীপ গুহ পরিচালিত এই নাটকটির মাধ্যমে দর্শকরা একটি রাজনৈতিক উপস্থাপনা দেখতে পান। ছোটবেলায় আমরা সবাই কচ্ছপ আর খরগোশের দৌড়ের গল্প পড়েছি। সেই গল্পের আধারেই রাজনৈতিক মনোগ্রাহী উপস্থাপনা। ওই একই দিনে মঞ্চস্থ হয় ‘ফলসি চারার উপাখ্যান’। খুব ঝলমলে একটি প্রযোজনা। অনেক মৌলিক গান এই নাটকে ব্যবহার করা হয়। প্রসেনজিৎ বর্ধন এবং সুমিতকুমার রায়ের কোরিওগ্রাফি এই নাটকের সম্পদ। সেই দিন আরেকটি নাটক দর্শকদের সামনে উপস্থাপিত হয়, সেটি হল নান্দীকারের নিজস্ব প্রযোজনা ‘পাঞ্চজন্য’। নির্দেশনায় সোহিনী সেনগুপ্ত। সবদিক থেকে এটি অত্যন্ত উচ্চমানের একটি প্রযোজনা। নটধার সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘মহাভারত-২’ মঞ্চায়িত হয় বাইশে ডিসেম্বর। অর্ণ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ভিত্তিক নাটক। দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাওয়া একটি প্রযোজনা। এরপর মঞ্চায়িত হয় সঞ্জয় উপাধ্যায় পরিচালিত ভোজপুরি নাটক ‘বিদেশিয়’। ওই দিন ওটি ছিল তাদের সাতশো কুড়িতম অভিনয়। নাচে-গানে ভরপুর এক জমজমাট প্রযোজনা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এটি নান্দীকারের নাট্যমেলায় দ্বিতীয়বারের জন্য আমন্ত্রিত হল। তেইশে ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হয়। এনএসডি রেপাটারির নাটক ‘পহেলা সত্যাগ্রহ’। নির্দেশক সুরেশ শর্মা। অনেক পরিশ্রম এবং যত্ন করে বানানোর ছাপ আছে এই নাটকে। কলকাতা রঙ্গিলা নিবেদিত কৌশিক কর পরিচালিত নাটক ‘অটো’ রেশ রেখে যায় মনে। উপস্থাপনায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রয়াসের ছাপ আছে। দক্ষ সারথীর মতো নির্দেশকের নিপুণতা আলাদা প্রশংসার দাবি রাখে। নান্দীকারের শিশু বিভাগের নাটক ‘উলুবেরের গুপ্তধন’, ‘গঙ্গাসুর’ এবং ‘সুকুমারের পাঠশালা’ প্রদর্শিত হয় এই নাট্যমেলায়। এবং তারা প্রমাণ করে যে তারা একদিন বাংলা থিয়েটারের ভবিষ্যৎ হয়ে উঠবে। পার্থপ্রতিম দেব পরিচালিত নাটক ‘নাচনী’ মঞ্চস্থ হয় শেষ দিন। এটি একটি নান্দীকার প্রযোজনা। একই দিনে অভিনিত হয় নান্দীকারের আরেকটি প্রযোজনা ‘মানুষ’। পরিচালনায় সোহিনী সেনগুপ্ত। দুটি নাটকই অত্যন্ত উন্নত মানের প্রযোজনা। নান্দীকার এই ভাবেই এগিয়ে চলুক এবং তার এই অনাবিল পথ চলায় থিয়েটার আরও সমৃদ্ধ হোক এই আশায় বুক বেঁধে আমরা অপেক্ষা করব সাঁইত্রিশতম নান্দীকার নাট্য উৎসবের।
শুভঙ্কর গুহ 
53Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা