বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
মিশরে তৈরি করা গম্বুজগুলিতে যে ছবি আঁকা হয়েছিল সেখানে দেখা যায় জুতো, জামা কাপড়, দস্তানা, বালতি হরেক রকমের জিনিস তৈরি হতো চামড়া দিয়ে এবং তার উপর রং করে। আবার গ্রিসের বাসিন্দারা গাছের পাতা, ছাল জলের সঙ্গে ব্যবহার করে চামড়া সংরক্ষণ করত। এভাবেই প্রথম ভেষজ ট্যানিং প্রক্রিয়া শুরু হয়।
রোমানরা জুতো, জামা কাপড় এবং মিলিটারি দ্রব্যে চামড়ার ব্যবহার করত। চামড়াতে যে আরাম পাওয়া যায়, তার জন্য বহুযুগ ধরে আসন হিসাবে বা আসবাবপত্রে চামড়ার ব্যবহার হতে দেখা যায়। আবার মধ্যযুগে খাবার টেবিলের, চেয়ারের কভার হিসাবে চামড়ার ব্যবহার ছিল। কারণ চামড়া খাবার শোষণ করে না, পরিষ্কার রাখাও সুবিধা ছিল। বই বাঁধানো, ছবি আঁকার সরঞ্জাম হিসাবেও চামড়ার গুরুত্ব দেখা গিয়েছে।
অটোমোবাইলের আবিষ্কারের পর প্রয়োজন হল বেল্টিং লেদারের। আবার নরম, হাল্কা, সুন্দর শৌখিন জুতো তৈরির জন্য চাহিদা তৈরি হয় নরম রং-চঙে চামড়ার। ভেষজ উপায়ে ট্যানিং করা চামড়া খুব শক্ত হয়। সে কারণে তার জায়গা নিয়ে নিল কেমিক্যাল ট্যান্ড চামড়া।
আধুনিক টেকনোলজি চামড়া বা লেদার ইন্ডাস্ট্রিতে বিশাল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এখন কেবলমাত্র বাণিজ্যিক বা ঘরের আসবাবের কাজে চামড়া ব্যবহার হয় না, এর ব্যবহার দেখা যায় অটোমোটিভ, অ্যাভিয়েশন এবং মেরিনেও।
লেদার টেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একটি শাখা। চামড়ার উপর রাসায়নিক প্রয়োগ করে, শোধন করে আমাদের ব্যবহারের উপযুক্ত করে তোলে এই টেকনোলজি। আবার কৃত্রিম চামড়া উৎপাদনের জন্যও এই টেকনোলজির উপর নির্ভর করতে হয়। যাতে বাণিজ্যিকভাবে চামড়ার চাহিদা পূরণ করা যায়। এদেশের লেদার ইন্ডাস্ট্রি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ইন্ডাস্ট্রি।
লেদার টেকনোলজি নিয়ে ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা করা যায়। যদি কেমিস্ট্রি নিয়ে আগে পড়াশোনা করা থাকে তবে লেদার টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে সুবিধা হয়। এদেশে স্মল স্কেল ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুব লাভজনক ব্যবসা লেদার বিজনেস। কম পুঁজি এবং লোকবল নিয়ে এবং কম খরচের ইলেক্ট্রিক ব্যবহার করে এ ধরনের ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করা যায়। আবার চামড়ার তৈরি ধরনের ব্যাগ, জুতো, পোশাকের বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিও রয়েছে।
এ রাজ্য থেকে বিষয়টি নিয়ে পড়ার জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স টেস্ট-এ বসতে হয়। এছাড়া জেইই-মেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরও ভর্তি নেওয়া হয়। আবার জেইএলইটি দিয়ে সরাসরি দ্বিতীয় বর্ষে প্রবেশ করা যায়। এম টেক করারও সুযোগ রয়েছে।
এর জন্য লেদার টেকনোলজি অথবা বায়ো টেকনোলজিতে বি টেক থাকতে হবে বা কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিস্ট্রি বা মাইক্রো বায়োলজিতে এমএসসি থাকতে হবে।
আবার সার্টিফিকেট কোর্সও করা যায়। দু’বছরের অ্যাডভান্সড সার্টিফিকেট কোর্স করা যায় শু অ্যান্ড লেদার গুডস মেকিং—এই বিষয়ের উপর।
তিন বছরের লেদার গুডস টেকনোলজি নিয়ে পড়ার জন্য দশম শ্রেণী উত্তীর্ণ হতে হবে। এই কোর্স এআইসিটিই অনুমোদিত কোর্স এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল কাউন্সিল অব টেকনিক্যাল এডুকেশন, কলকাতা স্বীকৃত।
কাজের সুযোগ রয়েছে লেদার টেকনোলজিস্ট হিসাবে প্রোডাকশন হাউজে, গবেষণা করার সুযোগ পাওয়া যায়, কোয়ালিটি কন্ট্রোল করার মতো কাজের সুযোগ থাকে, মার্কেটিং এবং সেলসের কাজেরও সুযোগ রয়েছে।