বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষায় প্রাচীন ভারতীয় ও বিশ্বের ইতিহাস ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে থাকলে ৪৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে বা ইতিহাস ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে অথবা প্রাচীন ভারতীয় ও বিশ্বের ইতিহাস বা ইতিহাস ফোর্থ সাবজেক্ট হিসাবে থাকে সেক্ষেত্রে মোট ৫০ শতাংশ নম্বর এবং যাদের প্রাচীন ভারতীয় ও বিশ্বের ইতিহাস বা ইতিহাস নেই তাদের ক্ষেত্রে মোট ৫৫ শতাংশ নম্বর থাকলে স্নাতকস্তরে পড়ার জন্য আবেদন করতে পারা যায়।
প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রত্নতত্ত্বের মধ্যে থাকে মানবজাতির ইতিহাস, সমাজ, সংস্কৃতি এবং ভাষা সংক্রান্ত বিষয়। এই তথ্যগুলি পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের পুঁথি, নথি, প্রত্নতাত্ত্বিক দলিল, বৈদিক পুঁথি, সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত এবং অনান্য ভাষায় লিখিত গ্রন্থ থেকে।
যেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলিকে মূলত দু’ভাগে ভাগ করা যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান এবং সাহিত্যিক উপাদান। আবার প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। তার মধ্যে রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক অবশেষ, লিপি এবং মুদ্রা। কোন জায়গায় মনুষ্য বসতি ছিল, সেখান থেকে কেন তারা সরে চলে গিয়েছিল, তখন কী ধরনের সংস্কৃতি ছিল এগুলি জানতে সাহায্য করে প্রত্নতত্ত্ব। আমাদের দেশে লিখিত আকারে পাওয়া বহু প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থের সম্বন্ধে সমস্ত রকম তথ্য নেই বললেই চলে। রামায়ণ বা মহাভারত কতদিন ধরে কতজন লিখেছেন বা কীভাবে বিভিন্ন বিষয়গুলি এসেছে সে বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না। সে কারণে ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের উপরই বেশি নির্ভর করতে হয়। যেমন লিপির পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি সিন্ধু সভ্যতার। আবার তক্ষশিলা, পাটলিপুত্র, রাজগির, নালন্দা, সাঁচি, সারনাথ, মথুরায় গড়ে ওঠা সামাজিক জীবন, সেখনকার অবশেষ থেকেও নানান তথ্য পাওয়া যায়। বিভিন্ন মন্দির, স্তূপ, দুর্গ, প্রাসাদ, বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, বাসনপত্র এ বিষয়ে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন পুঁথি। যেগুলিকে পালিওগ্রাফি বলা হয়। এগুলি পাথরে বা থামে বা দেওয়ালে লিখিত আকারে পাওয়া গেছে। অশোকের শিলালিপি, খারবেলের হাতিগুম্ফা শিলালিপি এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।
আর এক ধরনের সূত্র পাওয়া যায় ঐতিহাসিক মুদ্রা থেকে। এই ধরনের মুদ্রাকে বলা হয় নিউমিসম্যাটিক্স। এই রকমের পোড়ামাটির মুদ্রার দেখা মেলে কুষাণযুগে। সোনা, রুপো, তামার মুদ্রার ব্যবহারও দেখা যেত। এই সব মুদ্রায় রাজার বা ভগবানের চিত্র অঙ্কিত থাকত। আবার অনেক সময় রাজত্বের সময়কালও উল্লেখ থাকতে দেখা গিয়েছে। সেই সময়ের চাষের ছবিও দেওয়া থাকত।
আর এক ধরনের উপাদান বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় গ্রন্থ। বেদ, উপনিষদ, বৌদ্ধ, জৈনদের ধর্মগ্রন্থ থেকেও সে যুগের রীতি নীতি, সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যায়। ধর্মীয় গ্রন্থ ছাড়াও বেশ কিছু গ্রন্থ রয়েছে যেগুলি রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সম্পর্কিত। এই সব গ্রন্থ যেমন দেশীয় লেখকরা লিখেছেন আবার বিদেশ থেকে আগত নানান পর্যটকরাও লিখেছেন।
আর এভাবেই প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রত্নতত্ত্ব পুষ্ট হয়ে উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্নাতকস্তরে যেমন পড়া যায় আবার প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে এমএ বা এমএসসি করার সুযোগও এ রাজ্যে রয়েছে। পড়া শেষে কাজের সুযোগ রয়েছে – প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বিভাগ, হেরিটেজ ইন্ডাস্ট্রি, মিউজিয়াম, ব্যবসা, সাংবাদিকতা, প্রশাসনিক পরিষেবা, গ্রন্থাগারিক হিসাবে। এছাড়াও শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগদান করা যায়। আবার প্রত্নতাত্ত্বিক, কিউরেটর, ট্যুর গাইড,আর্কিভিস্ট, জেনেলজিস্ট হওয়া যায়।