Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

নোবেল, পেনরোজ, 
বং কানেকশন
মৃন্ময় চন্দ

অবিশ্বাস্য, পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারে বং কানেকশন! আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিকতাবাদের সূত্রেই হকিং-পেনরোজ ব্ল্যাকহোলের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহাবিশ্বে অজস্র গ্রহাণুর বর্ণিল ঝিকিমিকির মধ্যে মূর্তিমান বেমানান ‘ব্ল্যাকহোল’, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এমনটাই মনে করতেন আইনস্টাইন। ব্ল্যাকহোলের মৃত্যু বা বিশ্ব সৃষ্টির অপার রহস্য নিহিত রয়েছে ‘সিঙ্গুলারিটি’র মধ্যেই। আইনস্টাইন-হকিং-পেনরোজ কেউই সেই ‘সিঙ্গুলারিটি’র সন্ধান পাননি। কলকাতার আশুতোষ কলেজের খুপরি ঘরে সেই ‘সিঙ্গুলারিটি’ রহস্যের উন্মোচন হল ১৯৫৫ সালে, ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশনে’র মাধ্যমে। সৌজন্যে অবিস্মরণীয় প্রতিভাধর বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী অমলকুমার রায়চৌধুরী। রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশনের পবিত্র স্পর্শে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদের শাপমুক্তি ঘটেছিল। নড়বড়ে সৃষ্টিতত্ত্বকেও হকিং-পেনরোজ পেরেছিলেন শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে। ‘বোস সংখ্যায়ন’ আইনস্টাইনকে যদি ঋদ্ধ-সমৃদ্ধ করে থাকে, ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশনে’ও ঠিক ততোধিক সমৃদ্ধ আইনস্টাইন ও তাঁর আপেক্ষিকতাবাদ। কিন্তু সত্যেন বোস বা মেঘনাদ সাহার বিরল সম্মান বা জনপ্রিয়তার ছিটেফোঁটাও জোটেনি অমলকুমার রায়চৌধুরীর কপালে। অথচ সৃষ্টিরহস্য বা ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’ ছাড়া অসম্পূর্ণ। ‘রায়চৌধুরী সমীকরণে’র ঘাড়ে ভর করেই দাঁড়িয়ে আছে হকিং-পেনরোজের ‘সিঙ্গুলারিটি’ তত্ত্ব। ১৯৬৫ সালে হকিং-জর্জ এলিস এবং ’৭০-এ হকিং-পেনরোজ তাঁদের গবেষণায় বহুবার উল্লেখ করেছেন অমলকুমার রায়চৌধুরীর ভাস্বর অবদানের কথা। গত বছর পেনরোজের নোবেল-প্রাপ্তিতে ব্রাত্য, বিস্মৃতপ্রায় ‘এ কে আর’-কে ফিরে দেখা যাক—
জন্ম বরিশাল, ১৯২৩-এর ১৪ সেপ্টেম্বর। বাবা ছিলেন অঙ্কের মাস্টারমশাই। সে যুগে এমএসসির ফার্স্টক্লাস। অঙ্কের মাস্টারির চাকরিটা বাবার হঠাৎ চলে গেল।  ছেলেকে তাঁর উপদেশ, অঙ্ক নয়, পদার্থবিজ্ঞানে দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জুটলেও জুটতে পারে! ’৪২-এর মন্বন্তর, আগস্ট আন্দোলন, প্রেসিডেন্সির পঠনপাঠন শিকেয় (১৯৪২-’৪৪ প্রেসিডেন্সি / কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন)। ডামাডোলে সপরিবার প্রত্যাবর্তন বরিশালেই। নির্মল নিষ্কলুষ মনোরম প্রকৃতি। নদনদী, ছায়াঘেরা গ্রাম, শ্যামলে শ্যামল আর নীলিমায় নীল। নেই কোথাও মন্বন্তরের বিলাপ, বিবমিষা। তারপর, হঠাৎ কী হল? নির্মোহ আত্মমগ্ন তিনি, অমলকুমার রায়চৌধুরী। অন্তরিন নিজের সুড়ঙ্গে। মন্বন্তর কী তাহলে ‘এ কে আর’-এর মনে এমন গভীর রেখাপাত করে গিয়েছিল যে সেই দুঃস্বপ্নের কালরাত্রি তাঁকে তাড়া করে ফিরল সতত। জ্যান্ত মুরগির জবাই, রক্তাক্ত ছটফটানি দেখে মুরগির মাংস জীবনে ছুঁয়েও দেখেননি। খেতে ভালোবাসতেন ভাজা তোপসে মাছ। পার্শে বা পাবদার ঝোল। দই, মিষ্টির প্রতিও ছিল আসক্তি। কেউ বলেছিল চিংড়ি জলের পোকা, পোকা খাওয়ার ভয়ে চিংড়িও সযত্নে পরিহার করেছিলেন। 
তীর্থপতি হিন্দু হাইস্কুলে লেখাপড়া। একটা অঙ্ক গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে আরও নানাভাবে যে কষা যায়, তা দেখিয়ে হেডমাস্টারের নেক-নজরে পড়ে যান। স্কুলের ম্যাগাজিনে সে কথা ফলাও করে ছেপে লাজুক ‘এ কে আর’-কে যথেষ্ট বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলেছিলেন হেডমাস্টারমশাই। একবার ম্যালেরিয়া পেড়ে ফেলল। গাদা-গুচ্ছের কুইনাইন সেবনে হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত। মড়ার মতো বিছানায় পড়ে আছেন। নাড়ি অতলে। মা ঘরে ঢুকে আঁতকে উঠে চিৎকার করে কান্না জুড়লেন, ভেবেছিলেন ইহজগতের মায়া কাটিয়েছেন ‘এ কে আর’। ছেলেমেয়েদের বই পড়তে উৎসাহ দিতেন, বিদেশি ক্লাসিক্যাল সিনেমা দেখাতে নিয়ে যেতেন। আর পাঁচটা বাঙালির মতো বেড়াতে ভালোবাসতেন। বহুবার গিয়েছেন পুরী, দার্জিলিং। মারা যাবার কিছুদিন আগেও গিয়েছিলেন মিরিক। জীবনভর শ্রীঅঙ্গে শোভা পেয়েছে ধুতি-পাঞ্জাবি। ধুতির কোঁচা পকেটে গোঁজা। মেরিল্যান্ড যাওয়ার সময়, বোধহয় একবারই সাহেবি কেতায় সুট টাই পরেছিলেন। বরাবরই পোশাকের প্রতি ছিলেন আদ্যন্ত নির্লিপ্ত, উদাসীন।
আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে যে সময়ে অমলকুমার গবেষণায় মজেছেন, সেইসময়  আপেক্ষিকতাবাদের ভবিষ্যৎ মোটেই উজ্জ্বল ছিল না। এন আর সেন ছাড়া গবেষণায় সঙ্গী হিসাবে পাননি কাউকেই। নানারকম ঝড়ঝাপটা, অবসাদ কাটিয়ে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কালটিভেশন অব সায়েন্সে জোটালেন গবেষণা-সহকারীর চাকরি। কালটিভেশনের অধিকর্তা তখন মেঘনাদ সাহা। ১৯৫৩-র ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র নিয়ে দুরুদুরু বক্ষে ঢুকলেন মেঘনাদ সাহার ঘরে। উগরে দিলেন মাথায় বুড়বুড়িয়ে ওঠা চিন্তাভাবনার হিজবিজবিজ। শুনলেন ডঃ সাহা, অপ্রসন্নচিত্তে। দেবীদাস আচার্যের সঙ্গে গবেষণায় লেগে পড়ার উপদেশ দিলেন। হতোদ্যম ‘এ কে আর’। দেবীদাস তাঁর যোগ্য সঙ্গতকারী নন কখনওই। ঘাড় বাঁকা অমলকুমারকে তাঁর মনোমতো কাজ থেকে বিচ্যুত করা যে কঠিন স্বয়ং অধিকর্তাও তা হাড়েহাড়ে টের পেলেন। ডিক্রি জারি হল, অধিকর্তা বা বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি ছাড়া একপাও চলা নিষেধ ‘এ কে আর’-এর। ঝুপসি এক যন্ত্রপাতির রান্নাঘরে ঠাঁই হল অমলকুমারের। একটা মাত্র জানলা ঘরে। ঠা ঠা রোদে পিঠ পুড়ে যায় সারাদিন। 
অনন্যোপায় অমলকুমার আশুতোষ কলেজে আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসাবে  যোগদানে বাধ্য হলেন। বিয়ে থা করেছেন, রোজগার দরকার। বিশ্ববন্দিত ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’-এর জন্ম এই আশুতোষ কলেজ থেকেই। ‘ফিজিক্যাল রিভিউ’তে প্রকাশিত ১৯৫৫-র সেই গবেষণাপত্র, ‘রিলেটিভিস্টিক কসমোলজি ওয়ানের’ ধারে কাছেও এ পর্যন্ত কোনও একটি গবেষণা-সন্দর্ভ পৌঁছতে পারেনি। কালটিভেশনে কাজের অবসরে তিনি কেবল ভেবেছেন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাকি বিশ্ববিদ্যালয়— কোথায় বিজ্ঞানীরা  একটু শান্তিতে নিজের মতো করে কাজ করতে পারবেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কাজের কাজ যে কিছুই হয় না, তাও তিনি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন। মৌলিক গবেষণার আঁতুড়ঘর সবসময়ই বিশ্ববিদ্যালয়। আশ্চর্যের বিষয় কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানও তাঁকে কোনওদিন ডাকেনি। বিশ্বখ্যাত গণিতবিদ অধ্যাপক কলস্বন তখন অক্সফোর্ডে পড়াচ্ছেন। তাঁর ছোট্ট একটি ভুল ‘রায়চৌধুরী সমীকরণ’ মারফত সহজেই শোধরানো সম্ভব হয়েছিল। আনন্দে উদ্বাহু কলস্বন একটি প্রবন্ধে বার-দশেক এ কে আরের ভূয়সী প্রশংসা করে তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছিলেন। নিস্পৃহ, দূরদ্বীপবাসী তিনি কালটিভেশনের রান্নাঘরে একাগ্র চিত্তে তখন কাজে মগ্ন। 
বিয়ের কথাবার্তা চলছে, পাত্রীর দাদা জানতে চাইলেন চাকরিতে মাইনেপত্র বাড়বে কি না, উন্নতির সম্ভাবনাই বা কতটা? নির্বিকার চিত্তে অমলকুমার উত্তর দিয়েছিলেন, মাইনে বাড়বে কি না বা কতটা উন্নতি হবে, তা তিনি বলতে পারবেন না। তবে ভারতে তাঁর কাজের সমকক্ষ কেউ নেই। নিজের ওপর এমনই তাঁর অগাধ আত্মবিশ্বাস! বিদেশে তখন ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’ নিয়ে রীতিমতো হইচই চলছে। দেশে তাঁর খবর কেউ রাখেন না। অসীম সাহসে ভর করে তিনি ‘রায়চৌধুরী  ইক্যুয়েশন’কে পাঠালেন ডিএসসি থিসিসের জন্য। জন আর্কিবল্ড হুইলার ছিলেন তাঁর পরীক্ষক। উচ্ছ্বসিত হুইলার লিখলেন রায়চৌধুরী ‘রিলেটিভিস্টিক কসমোলজি’র দুরূহ এক সমস্যার চমকপ্রদ সমাধান করেছেন। বয়স ষাট পেরিয়েছে, এই অজুহাতে ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমি’ তাঁকে সদস্যপদ দিতে বিস্তর টালবাহানা করছিল। জয়ন্তবিষ্ণু নারলিকার, তাঁরই সুযোগ্য ছাত্র  সরাসরি প্রশ্ন তুলেছিলেন সারা পৃথিবী যে বিজ্ঞানীর দৃঢ়তায় নত তাঁকেও কি সায়েন্স অ্যাকাডেমির যোগ্যতামান পেরনোর পরীক্ষায় বসতে হবে? তারপরে অবশ্য সসম্মানে তাঁকে সায়েন্স অ্যাকাডেমির সদস্যপদ প্রদান করা হয়েছিল।

রায়চৌধুরী সমীকরণ ও সৃষ্টিতত্ত্ব  
বিশ্বের সৃষ্টি একটা বিন্দু থেকে, যে বিন্দুটা কিন্তু মোটেই কাল্পনিক নয়। সেই বিন্দু বা ‘সিঙ্গুলারিটি’র কথা প্রথম বলেছিলেন বিজ্ঞানী সোয়ারসচাইল্ড। কিন্তু সোয়ারসচাইল্ডের সিঙ্গুলারিটির কিছু গোঁজামিল আইনস্টাইনের চোখেও ধরা পড়েছিল। ‘সিঙ্গুলারিটি’ কী, একটু খোলসা করা যাক। ধরা যাক একটা তুবড়ি বসানো রয়েছে, আগুনের স্পর্শে তুবড়ি প্রথমে ভুস-ভুস করে দু’একটা স্ফুলিঙ্গ ছড়াতে ছড়াতে নারকেল গাছের মাথা টপকে গেল। প্রতিটা রশ্মি একটা বিন্দু থেকে উৎসারিত হয়ে বৃত্তাকার বা অধি-বৃত্তাকার পথে বহু উঁচুতে উঠে নির্বাপিত হল। তুবড়ির মতো একটা বিন্দু থেকেই শুরু হয়েছিল বিশ্বসৃষ্টি। বিরাট ভর ও অপরিমেয় শক্তি একটা বিন্দুতে আসীন। তুবড়ির মতো ভুস-ভুস করে বিশ্ব ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করলেও তুবড়ির মতো মসৃণ নিরুদ্বিগ্ন পথে কিন্তু তার যাত্রা শুরু হয়নি। বিন্দু-বিশ্ব, সৃষ্টির মুহূর্তে ফুলে ফেঁপে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে, বনবন করে ঘুরতে শুরু করেছে। বিশৃঙ্খলা/ অনিয়মে জেরবার লণ্ডভণ্ড হয়েছে বিশ্বসৃষ্টির আদি-মুহূর্ত। তারপর নটরাজের প্রলয়নাচন থামলে অজস্র গ্রহ-নক্ষত্র-ছায়াপথ-কৃষ্ণগহ্বর বুকে আঁকড়ে থিতু হয়েছে আজকের বিশ্ব। 
অনিয়মিত উচ্ছৃঙ্খল সৃষ্টি রহস্যকে আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বে ঠিকঠাক কব্জা করা যাচ্ছিল না। নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না যে, মহাকর্ষের মধ্যেই নিহিত কি না বিশ্বসৃষ্টির অজানা রহস্য। কিছুতেই বিজ্ঞানের কষ্টিপাথরে যাচাই করা যাচ্ছিল না, একটা বিন্দুর মধ্যে কীভাবে নিহিত থাকতে পারে বিপুল ভর আর শক্তির মেলবন্ধনী অমিতপরাক্রমী এক দানব? কার অঙ্গুলিহেলনেই বা লিলিপুট ‘সিঙ্গুলারিটি’ থেকে ফুলে-ফেঁপে উঠে সৃষ্টি হল এই মহাবিশ্ব? দুরূহ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারল না ‘রিমানিয়ান জ্যামিতি’। উত্তর মিলল না এমনকী ‘ওপেনহাইমার-স্নাইডার’ বা ‘ফ্রিডম্যান-রবার্টসন-ওয়াকর’ মডেলেও। ‘রায়চৌধুরী সমীকরণ’ এই দমবন্ধ করা পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ বাতলাল। ‘রিকি কার্ভেচারের’ সাহায্যে ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’ প্রমাণ করল আপেক্ষিকতাবাদের মধ্যেই ঘাপটি মেরে বসে খিলখিলিয়ে হাসছে ‘সিঙ্গুলারিটি’। মহাকর্ষের ইন্ধনেই অকল্পনীয় শক্তি ও ভরের প্রায়-অদৃশ্য মিলনবিন্দু ‘সিঙ্গুলারিটি’ থেকে নাচতে নাচতে ভূমিষ্ঠ হয়েছে বিশ্ব। সেই মহাকর্ষের প্রভাবেই সূর্যের তুলনায় বহুগুণ বড় একটি নক্ষত্রও বুড়ো-বয়সে তার দাপট হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যখন মৃত্যুমুখে পতিত তখন তার বিশাল ভর-শক্তি এসে জড় হয় সেই সাড়ে তিনহাত ভূমি ‘সিঙ্গুলারিটি’তে। সৃষ্টির মাহেন্দ্রক্ষণের সিঙ্গুলারিটি আর ব্ল্যাকহোলের অন্তর্জলি যাত্রার সিঙ্গুলারিটির মধ্যে ফারাক নেই কোনও। সেই সিঙ্গুলারিটিই ‘বিগ ব্যাং’ নামে পরিচিত। যে মুহূর্তে মৃত্যুঘণ্টা বাজল বিশালকায় কোনও নক্ষত্রের, ব্ল্যাকহোলের জন্মও সেই মুহূর্তেই। ঠিক তখনই স্থান-কালেরও অগস্ত্যযাত্রার শুরু। 
‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’-এ সৃষ্টিরহস্য আর কৃষ্ণগহ্বরের ‘সিঙ্গুলারিটির’ প্রথম সঠিক সঠিক দিশা মিলল। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক সিঙ্গুলারিটির মৌলিক আবিষ্কারক হিসাবে নোবেলে কেন বিবেচিত হবে না অমলকুমারের নাম? পেনরোজ তো ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’ ধার করেই নোবেল পুরস্কার পেলেন! ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশনের’ পর অমলকুমার ‘স্পেস-টাইম সিঙ্গুলারিটি’ নিয়ে আর বিশেষ আগ্রহী ছিলেন না।  তখন তাঁর মাথায় চেপেছে ‘স্পেস-টাইমের’ অস্তিত্ব ছাড়াই ‘সিঙ্গুলারিটির’ তত্ত্বতালাশের ভূত। শুধু ‘সিঙ্গুলারিটি’ নিয়ে পড়ে থাকলে নোবেল হয়তো তাঁর কপালেই জুটত!

রায়চৌধুরী-হকিং-পেনরোজ ও ব্ল্যাকহোল
১৯৮৭ সালে প্রথম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেমিনারে এ কে আরের সঙ্গে মোলাকাত হয় পেনরোজের। সাদামাটা ধুতি-পাঞ্জাবিতে এ কে আর-কে দেখে পেনরোজ প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি এই সেই মানুষ। অমলকুমারের ‘সিঙ্গুলারিটির’ উপর ভর করেই হকিং-পেনরোজ আপেক্ষিকতাবাদের কুয়াশা সরিয়ে যবনিকাপাত করেছেন সৃষ্টি-রহস্যের,  উদ্ঘাটন করেছেন ব্ল্যাকহোল মহাকর্ষজনিত স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা। প্রমাণ করেছেন, ব্ল্যাকহোলের পেট থেকে কোনও তথ্য তো দূরঅস্ত, আলোকেও ফিরিয়ে আনা অসম্ভব। গিলে ফেলা সেই আলোকরশ্মিও ব্ল্যাকহোলের পেট চিরে কিছুতেই বেরতে পারবে না। হকিং তখন কেমব্রিজে, দ্বিতীয়-বর্ষের ছাত্র। গণিতের বিশেষ উচ্চমার্গের শাখা ‘টপোলজি’র এক নিখুঁত গণনায় হকিং প্রথম ব্ল্যাকহোলের স্পষ্ট ছবি আঁকলেন। হকিংয়ের কাজে সাহায্য করছেন জর্জ এলিস। ‘সিঙ্গুলারিটি’ সম্পর্কে রজার পেনরোজের গাণিতিক মডেল হঠাৎই নজরে এল হকিং-এর। ‘মোর্স থিওরি’র সাহায্যে পেনরোজের মডেলের যাবতীয় ত্রুটি শুধরে হকিং খাড়া করলেন ‘সিঙ্গুলারিটি’ বা ‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্ব। পেনরোজ নিজে বলছেন, হকিং আমার তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে এমন এক শৌভিক তত্ত্বের বিনির্মাণ ঘটাল যে, পদার্থবিজ্ঞান তো কোন ছার গণিতেও কেউ কখনও তার অস্তিত্ব কল্পনা করতে পারেনি’ হকিংয়ের সেই নতুন বিগ ব্যাং সিঙ্গুলারিটি তত্ত্বে রিমানিয়ান জ্যামিতি, আপেক্ষিকতাবাদের যাবতীয় সংশয়-সন্দেহের কালোমেঘ যেমন উড়ে গেল এক লহমায়, তেমনই জলের মতো সহজ সরল হয়ে গেল সৃষ্টিরহস্য। এ প্রসঙ্গে পেনরোজ আরও এক ভারতীয় বিজ্ঞানীর কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছেন, তিনি এস চন্দ্রশেখর।  
কিন্তু ব্ল্যাকহোলের অদ্ভুত আচরণের কথা তখনও অজানা। হকিং প্রথম সফলভাবে ব্যাখ্যা করলেন কেন ব্ল্যাকহোলে সর্বক্ষণ তুমুল অস্থিরতা বিরাজমান! থার্মোডিনামিক্স আর কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে অস্ত্র করে হকিং ব্ল্যাকহোলের যাবতীয় তমসা দূর করলেন। এই অস্থিরতা বা ‘এনট্রপি’ যে ব্ল্যাকহোলের মজ্জায় তাও দেখালেন। ১৯৭২ সালে হকিং উপর্যুপরি এই ধরনের অভ্রংলিহ কাজে চমকে দিচ্ছেন গোটা বিশ্বকে। ব্ল্যাকহোল ঘূর্ণায়মান হোক বা নিশ্চল, হকিং দেখালেন  বিকিরণ তার নিয়তি। ‘হকিং রেডিয়েশন’ নামে যা পরিচিত। ব্ল্যাকহোলের পাঁচিল বা হরাইজনের কথাও হকিং প্রথম বলেছিলেন। যে পাঁচিল টপকে আলো একবার ব্ল্যাকহোলের পেটে গিয়ে পড়লে তারও ঘটবে সলিলসমাধি। হকিংয়ের যুগান্তকারী আবিষ্কার— আলোই যখন ব্ল্যাকহোলে বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে, তাই কোনও জাগতিক বস্তুকেই আর ব্ল্যাকহোলের পেটের ভিতর থেকে উদ্ধার করা অসম্ভব। ব্ল্যাকহোলের গর্ভ থেকে কোনও তথ্য কোনওভাবেই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। সেটিই ‘ইনফরমেশন লস’। সেইসময় আইনস্টাইনীয় E=m, অর্থাৎ ভর ও শক্তি তখন এক ও অভিন্ন।  
‘সিঙ্গুলারিটি’কে যথাযথ বোঝাতে গিয়ে হকিং-জেমস হার্টেল যৌথভাবে ঘোষণা করলেন ‘নো বাউন্ডারি’ প্রপোজাল। উদাহরণ হিসাবে বললেন, উত্তরমেরুতে দ্রাঘিমাংশের খাতায়কলমে অস্তিত্ব থাকলেও তা সোনার পাথরবাটি। ব্ল্যাকহোলের ক্ষেত্রে স্থান-কালও সেইরকম। তত্ত্বে আছে, কিন্তু খালি চোখে অদৃশ্য। বিকিরণের ঠেলায় ব্ল্যাকহোল যখন মহাকাশে একটি ভাসমান বিন্দু, তখন বিপুল ভর-শক্তির অভূতপূর্ব চাপে বিস্ফোরণ স্বাভাবিক। কিন্তু পৃথিবী থেকে সেই বিস্ফোরণের আঁচ মেলে না। হকিং ভেবেছিলেন সেই বিস্ফোরণ টেলিস্কোপের সাহায্যে তিনি নিশ্চয়ই প্রত্যক্ষ করবেন কোনওদিন। কিন্তু তাঁর সে আশা অপূর্ণই থেকে গিয়েছিল। ২০২০-র আর এক নোবেলজয়ী, আন্দ্রে ঘেজ ব্ল্যাকহোলের সেই বিস্ফোরণকে গভীর অভিনিবেশে প্রত্যক্ষ করে বাগিয়ে নিলেন নোবেল। গত ১৬ বছর ধরে ‘মিল্কি-ওয়ের’ মাঝখানে একটি দৈত্যাকার ব্ল্যাকহোলের গতিবিধি নিবিষ্ট চিত্তে ঘেজ পর্যবেক্ষণ করছিলেন ৪ ও ৮ মিটার ‘গ্রাভিটি টেলিস্কোপে’। ‘এস-টু’ নামে একটি নক্ষত্র যখন ব্ল্যাকহোলের অভিকর্ষের টানে ব্ল্যাকহোলটিকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণরত, তখনই ঘটল সেই অত্যাশ্চর্য ঘটনা। নক্ষত্রের আলো বেঁকে ব্ল্যাকহোলের পেটের মধ্যে ঢুকে গেল। পৃথিবী থেকে তা স্বচক্ষে দেখলেন ঘেজ। এ কে আর-আইনস্টাইন-হকিং অলক্ষে হাততালি দিয়ে উঠলেন। কারণ তাঁদের কথাই যে ঠিক তার অব্যর্থ প্রমাণ মিলল।
পেনরোজ, ‘দি গার্ডিয়ানে’ হকিং সম্পর্কে এক স্মৃতিচারণে লিখছেন—হকিংয়ের আশেপাশে সবাই লিলিপুট। ৩২ বছর বয়সে, রয়েল সোসাইটির সর্বকনিষ্ঠ ফেলো। আইজ্যাক নিউটনের ৩১০ বছর পর কেমব্রিজের ‘লুকাসিয়ান প্রফেসর’। ওই অতলস্পর্শী প্রতিবন্ধকতা নিয়ে হকিং নেমে যাচ্ছেন খনির গভীরে। নাসার ‘জিরো গ্রাভিটি’তে মহাকাশচারীদের মতো ভেসে থাকছেন। কথা বলতে পারছে না, অথচ বনবন করে হুইলচেয়ার ঘুরিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে গোল্লাছুট খেলছেন। একবার এক ছাত্র ভুলভাল তর্ক জুড়েছে, তিতিবিরক্ত হকিং ছাত্রের পায়ের ওপর দিয়ে চালিয়ে দিল হুইলচেয়ার। যে হকিং কোনওদিন তাঁর পূর্বসূরি কোনও বিজ্ঞানীর কাছে ঋণস্বীকারে ছিলেন অনিচ্ছুক, তিনিই ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’ সম্বন্ধে উচ্ছ্বসিত, প্রণত। নোবেলের থেকে সেটা কী কোনও অংশে কম প্রাপ্তি? 
17th  January, 2021
রাস্তায় পাতা হয়েছে
রাখালদাসের ভাঙা বাড়ির ইট 
বিশ্বজিৎ মাইতি

সিন্ধু নদের শুকনো গর্ভের মাটি ও ভাঙা ইট সরিয়ে ইতিহাসের খোঁজ করছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক ইট সরিয়ে ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন মহেঞ্জোদারো নগরী তিনি পৃথিবীর বুকে তুলে ধরেছিলেন।  
বিশদ

07th  March, 2021
সভ্যতার ঊষাকাল
হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো
কৃষ্ণেন্দু দাস

সালটা ১৯২১। ঠিক একশো বছর আগে অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের হরপ্পা অঞ্চলে শুরু হল প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ। খোঁজ পাওয়া গেল কয়েক হাজার বছর প্রাচীন এক নগর সভ্যতার। পরের বছর খনন কাজ শুরু হয় সিন্ধুপ্রদেশের মহেঞ্জোদারোতে। দেশভাগের পর এ দু’টি অঞ্চল এখন পাকিস্তানের অন্তর্গত।
বিশদ

07th  March, 2021
উপেক্ষিত বিজ্ঞানী 

‘আত্মঘাতী’ বাঙালির ড্রয়িংরুমে তাঁরা কেবলই ছবি। ব্রাত্য। বিস্মৃত। উপেক্ষিত। কেউ নোবেল সিম্পোসিয়ামে বক্তব্য রাখার ডাক পেয়েছেন, আবার কারওর গবেষণার খাতা হাতিয়ে নোবেল পকেটে পুরেছেন অন্য কেউ। গোটা পৃথিবী তাঁদের অবদানে ঋদ্ধ-সমৃদ্ধ, অথচ নিজভূমে তাঁরাই রয়ে গিয়েছেন বিস্মৃতির অন্ধকারে। আজ জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আত্মভরী প্রত্যুষে তেমনই চার বরেণ্য বাঙালি বিজ্ঞানীর বেদনা-বিধুর কাহিনি শোনাচ্ছেন মৃন্ময় চন্দ। 
বিশদ

28th  February, 2021
বাঙালির বিজয় দিবস 
পবিত্র সরকার

যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন, বিংশ শতাব্দীতে এই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সবচেয়ে বড় ঘটনা কী ঘটেছিল, তা হলে অনেকেই হয়তো বলবেন, ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা বা দেশভাগ। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের একটা ভালো (!) দিক এই যে, তা সাম্রাজ্যবাদের মৃত্যুঘণ্টা বাজাল, আর তারই ফলে, ভারতীয় উপমহাদেশ তার বহুবাঞ্ছিত ‘স্বাধীনতা’ লাভ করল।  
বিশদ

21st  February, 2021
কচিকাঁচাদের ভ্যালেন্টাইন
শান্তনু দত্তগুপ্ত

প্রেমের প্রকাশ নানা রকম। বাঙালির কৈশোরের প্রথম প্রেম অবশ্যই নন্টে ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট বা হাঁদা ভোঁদা। এগুলির স্রষ্টা যিনি, তিনিও তো এক অর্থে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনই বটে। বঙ্গের কিশোর-কিশোরীদের প্রথম ভালোবাসাকে আজও তিনি বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজের সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। আজ ভালোবাসার দিবসে পদ্মশ্রী নারায়ণ দেবনাথের অমর সৃষ্টিকে ফিরে দেখার চেষ্টা। বিশদ

14th  February, 2021
নেতাজির গুপ্তবাহিনী
শহিদের অজানা আখ্যান
অমিত মিত্র

উত্তাল বঙ্গোপসাগর। ঢেউয়ের মাথা চিরে এগিয়ে চলেছে টর্পেডোবাহী একটি জাপানি ডুবোজাহাজ।  আচমকা তা ঝাঁপ দিল সমুদ্রের অতলে। জলের নীচে অদৃশ্য হতে না হতেই বন্ধ করা হল ইঞ্জিনও। প্রমাদ গুনলেন ভিতরের কেবিনে বসা আজাদ-হিন্দ-ফৌজের গুপ্তবাহিনীর চার অফিসার— তবে কি কোনও ব্রিটিশ ডেস্ট্রয়ারের নজরে এসেছে সাবমেরিনটি? বিশদ

07th  February, 2021
শতবর্ষে বিশ্বভারতী
সবুজকলি সেন

‘বিশ্বভারতী’ কোনও পূর্বপরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় নয়। ‘বিশ্বভারতী’ ব্রহ্মবিদ্যালয় নামের একটি ক্ষুদ্র বীজের বটবৃক্ষে পরিণত রূপ। ১৯০১ সালে (৮ পৌষ) পাঁচজন ছাত্রকে নিয়ে যে আশ্রম বিদ্যালয় যাত্রা করেছিল ভারতবর্ষের প্রাচীন তপোবনের আদর্শে—১৯২১-এ তারই পরিণত রূপ ‘বিশ্বভারতী’। বিশদ

31st  January, 2021
নেতাজি সুভাষের সেবাশ্রম
জয়ন্ত চৌধুরী

নির্জন দুপুর। বঙ্গভূমি থেকে নির্বাসিত কারারুদ্ধ সুভাষ। বার্মার মান্দালয় জেল তাঁর কাছে তখন জীবন উপলব্ধির একান্ত সাধনপীঠ। বহু ত্যাগ ব্রতী দেশপ্রেমিক কারাজীবন অতিবাহিত করেছেন বার্মার কারাগারে। আর এই জেলে বসেই একদিন পেলেন তাঁর রাজনৈতিক সমর্পণের কাণ্ডারী দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রয়াণবার্তা। বিশদ

24th  January, 2021
অবিলম্বে ওই তথাকথিত চিতাভস্ম
ফেলে দেওয়া হবে না কেন?
 বরুণ সেনগুপ্ত

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী ঘটা করে উদযা঩পিত হল। কিন্তু এই মহান দেশনায়কের অন্তর্ধান রহস্য আজও উদ্ঘাটিত হল না। ২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০০৬ সালের ১১ জানুয়ারি ২৮টি কিস্তিতে প্রকাশিত ‘বর্তমান’ সম্পাদক বরুণ সেনগুপ্তর লেখাটি এ প্রসঙ্গে আজও প্রাসঙ্গিক। তুলে ধরা হল সেই লেখার নির্বাচিত অংশ—
বিশদ

24th  January, 2021
কোট-প্যান্ট 
পরা সন্ন্যাসী

অনেকেই জানতে চান, কার নির্দেশে গৈরিক সন্ন্যাসীরা কোট-প্যান্ট-টাই পরা সন্ন্যাসী হলেন? সহজ উত্তর, এর পিছনে রয়েছে স্বয়ং স্বামীজির সবুজ সঙ্কেত। সন্ন্যাসীদের কেন এই বেশবাস? লিখছেন শংকর। বিশদ

10th  January, 2021
আমার সন্তান যেন থাকে
ভ্যাকসিন  ভাতে
সুন্দর মুখোপাধ্যায়

দু’হাজার কুড়ি বিদায় নিয়েছে, দুর্যোগও যেন শেষ হতে চলল। তবে এ ব্যাপারটা হোল-ওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে আগে বুঝেছে বরানগরের বিল্টু। তার প্রেমিকা মিতা পুরো বছরটা ঝুলিয়ে রেখে একেবারে বছর শেষে বাড়ির অমতে বিয়েতে মত দিয়েছে। এই সুবর্ণসুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়, বিল্টুও করেনি। বিশদ

03rd  January, 2021
 কলকাতার গর্বের চার্চ
 ​​​​​​শান্তনু বসু

১৬৯০ সালের ২৪ আগস্ট। সুতানুটির ঘাটে জাহাজ ভেড়ালেন জোব চার্নক। কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠল ইংরেজদের বাণিজ্যঘাঁটি। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী হিসেবে অবশ্য ইংরেজরাই কলকাতায় প্রথম নয়, তাদের আগে বসতি স্থাপন করেছিল আর্মেনিয়ান ও পর্তুগিজরা। বিশদ

27th  December, 2020
দেশবন্ধু ১৫০
রজত চক্রবর্তী

১৮৯৭। কলকাতা সরগরম। বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজে কিছুদিন ধরেই আলোচনা তুঙ্গে। চারিদিকে ছি ছি পড়ে গিয়েছে! ব্রাহ্ম সমাজের মাথারা আলোচনায় বসেছেন। কারণ, বরদানাথ হালদার ও ভুবনমোহন দাশ সমাজের অগ্রগণ্য দুই মানুষ জড়িয়ে গিয়েছেন এই ঘটনায়। বরদানাথ হালদার বিক্রমপুরের নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা আর ভুবনমোহন দাশ কলকাতার। বরদানাথ হালদারের আর্থিক অবস্থা ভালো হলেও ঋণগ্রস্ত ভুবনমোহন দাশের অর্থনৈতিক অবস্থা জর্জরিত। বিশদ

20th  December, 2020
লৌহপুরুষ
সমৃদ্ধ দত্ত

মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রয়াণদিবস। ৭০ বছর হয়ে গেল তিনি আর নেই। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের অখণ্ডতা রক্ষায় তাঁর অবদান আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি সত্যিই এদেশের এক ও একমাত্র আয়রনম্যান।
বিশদ

13th  December, 2020
একনজরে
মালদহের গাজোলের রানিগঞ্জে এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। জখম ব্যক্তির নাম বিফল মণ্ডল। ...

শনিবার আইএসএল ফাইনালে নজর থাকবে দুই দলের গোলরক্ষকের দিকে। গোল্ডেন গ্লাভসের দৌড়ে রয়েছেন এটিকে মোহন বাগানের অরিন্দম ভট্টাচার্য ও মুম্বই সিটি এফসি’র অমরিন্দর সিং। চলতি ...

ব্রিটিশ রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন যুবরাজ হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেল। তাঁদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তোলপাড় চলছে। যদিও রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে ভাই ...

কয়লা পাচার কাণ্ডে এবার নতুন মোড় নিতে চলেছে। এই কাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআইয়ের নজরে পড়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ন’টি বিশাল প্লট। বহু কোটি মূল্যের ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

গ্লুকোমা দিবস
১৭৮৯ : আমেরিকায় পোস্ট অফিস স্থাপিত হয়
১৮৫৪: লেখক মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের জন্ম
১৮৯৪ : যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বোতলজাত কোকাকোলা বিক্রি শুরু হয়
১৯০৪ : ইংল্যান্ডে ইলেকট্রিক ট্রেন চালু হয়
১৯১১: বাঙালি সাহিত্যিক অতুলচন্দ্র গুপ্তের জন্ম
১৯১৮ : ২১৫ বছর পর ফের রাশিয়ার রাজধানী হল মস্কো
১০২৪: সঙ্গীতশিল্পী উৎপলা সেনের জন্ম
১৯৩০ : মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে বৃটেনের বিরুদ্ধে সত্যাগ্রহ বা অসহযোগ আন্দোলন শুরু
১৯৮৪: সঙ্গীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষালের জন্ম
১৯৮৮: সাহিত্যিক সমরেশ বসুর (কালকূট) মৃত্যু
১৯৮৯ : স্যার টিম বার্নার্স লি CERN-এর ল্যাবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) বিশ্বের তথ্য আদানপ্রদানের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমের অবতারণা করেন।
২০১৩: শিল্পী গণেশ পাইনের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭১.৩০ টাকা ৭৪.৫৪ টাকা
পাউন্ড ৯৮.৭৪ টাকা ১০৩.৫৫ টাকা
ইউরো ৮৪.৬০ টাকা ৮৮.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৫,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৩,৪০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৪,০৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৮,০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৮,১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৮ ফাল্গুন ১৪২৭, শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১। চতুর্দ্দশী ২২/৫৭ দিবা ৩/৩। শতভিষা নক্ষত্র ৪২/২৭ রাত্রি ১০/৫১। সূর্যোদয় ৫/৫২/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৪০/৪৩। অমৃতযোগ দিবা ৭/২৫ মধ্যে পুনঃ ৮/১৪ গতে ১০/৩৫ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৭ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/৭ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/১৮ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ৩/২৪ গতে ৪/১৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩৩ গতে ১১/২১ মধ্যে পুনঃ ৪/১৩ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৫০ গতে ১১/৪৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৩ গতে ১০/১৫ মধ্যে। 
২৭ ফাল্গুন ১৪২৭, শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১। চতুর্দ্দশী দিবা ২/৪৩। শতভিষা নক্ষত্র রাত্রি ১০/৪২। সূর্যোদয় ৫/৫৪, সূর্যাস্ত ৫/৪১। অমৃতযোগ দিবা ৭/১৩ মধ্যে ও ৮/১ গতে ১০/২৮ মধ্যে ও ১২/৫৪ গতে ২/৩২ মধ্যে ও ৪/৯ গতে ৫/৪১ মধ্যে। এবং রাত্রি ৭/২১ গতে ৮/৫৬ মধ্যে ও ৩/১৩ গতে ৪/১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩০ গতে ১১/১৭ মধ্যে ও ৪/১ গতে ৫/৫৩ মধ্যে। বারবেলা ৮/৫১ গতে ১১/৪৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৪ গতে ১০/১৬ মধ্যে। 
২৭ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
প্রথম টি২০: ভারতকে ৮ উইকেটে হারাল ইংল্যান্ড 

10:17:20 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ড ৮৯/১ (১১ ওভার) 

09:52:13 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ড ৫০/০ (৬ ওভার) 

09:28:55 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ডকে ১২৫ রানের টার্গেট দিল ভারত

08:49:53 PM

প্রয়াত  রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম সহঅধ্যক্ষ স্বামী বাগীশানন্দ
প্রয়াত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম সহঅধ্যক্ষ স্বামী বাগীশানন্দ। আজ, ...বিশদ

08:40:00 PM

প্রথম টি২০: ভারত ৮৩/৪ (১৫ ওভার)

08:19:34 PM