Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

শতবর্ষে বিশ্বভারতী
সবুজকলি সেন

‘বিশ্বভারতী’ কোনও পূর্বপরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় নয়। ‘বিশ্বভারতী’ ব্রহ্মবিদ্যালয় নামের একটি ক্ষুদ্র বীজের বটবৃক্ষে পরিণত রূপ। ১৯০১ সালে (৮ পৌষ) পাঁচজন ছাত্রকে নিয়ে যে আশ্রম বিদ্যালয় যাত্রা করেছিল ভারতবর্ষের প্রাচীন তপোবনের আদর্শে—১৯২১-এ তারই পরিণত রূপ ‘বিশ্বভারতী’। যার মূল বাক্যটিই হল ‘যত্র বিশ্বম্ ভবত্যেকনীড়ম’। যেখানে বিশ্ব একটি নীড়ে পরিণত হয়। আন্তর্জাতিকতার এই স্বপ্ন, সীমানা অতিক্রমের স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বভারতীর যাত্রা।
১৯৭১-এর শান্তিনিকেতন। বাংলা তখন অশান্ত। ১ জুলাইয়ের পরিবর্তে ১ ডিসেম্বর স্নাতক শ্রেণীর পঠনপাঠন শুরু হল। শীতের এক দুপুরে শান্তিনিকেতনে এলাম বিএ ক্লাসের ছাত্রী হয়ে শিক্ষাভবনে। সবে দু’দিন হল এসেছি। তখন শ্রীসদনের স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্রীরা এসে সব পৌঁছয়নি। আমার স্কুলের দু’টি বন্ধু কলাভবনে ভর্তি হয়েছিল। তাদের সঙ্গে এবং কলাভবনের দু’চারটি নবাগত ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে আশ্রম এলাকা ঘুরতে বেরিয়েছি। শীতের সেই দুপুরে আমরা শান্তিনিকেতন বাড়ির সামনে যে ভাস্কর্যটি আছে সেটি কী— তার গভীর আলোচনায় মগ্ন, এমন সময়ে দেখি এক বৃদ্ধ মাথায় টোকা, বয়সের ভারে ঈষৎ ন্যুব্জ, একটি গেরুয়া লুঙ্গি ও ফতুয়া গায়ে, হাতে একটি লাঠি নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন। মুখে খোঁচা খোঁচা পাকা দাড়ি। ‘কী দেখছ তোমরা?’ জিজ্ঞাসা করলেন। আমরা জানালাম আমাদের মতামত, কেউ বলল এটি দীপাধার, কেউ বলল দীপ হাতে একটি নারী, কেউ বা বলল ঝর্ণা। সেই বৃদ্ধ এক পায়ের গোড়ালিতে ভর করে ঘুরে গেলেন নিজের চারপাশে, হাতের লাঠিটা মাথার ওপর তুলে বললেন এটা ঘূর্ণি-ঘূর-ণি। ক’দিন পরে একদিন কো-অপ-এ যাচ্ছি। তখন দোকান বলতে দু’টি ছিল—সমবায় সমিতি যাকে আমরা কো-অপ বলতাম আর রতনপল্লির ‘ভকতভাই’—যার এখন নাম ‘ত্রয়ী’। প্রায় বিকেল শেষ হয়ে আসছে—দেখি সেই বৃদ্ধ রিকশ চেপে উদাত্ত স্বরে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গাইতে যাচ্ছেন। সঙ্গীদের মধ্যে ছিল কলাভবনের সদ্য আগত আমাদের বন্ধু মইনুল হক বারভুঁইয়া। বলল, ‘এঁকে চিনিস? ইনি কিঙ্করদা। রামকিঙ্কর বেইজ।’ বললাম—‘বলিস কীরে এঁকে যে ওঁরই করা ভাস্কর্য নিয়ে ব্যাখ্যা করালাম। তাই বোধহয় ঠিক চিত্রাঙ্গদার অর্জুনের মতো হাহা করে হেসেছিলেন। ‘হাহাহাহা বালিকার দল।’ শান্তিনিকেতন চেনা শুরু হল। এখানে গুণী মানুষ অহংকার করেন না। ঢাক পেটানোটাই তো ছিল না।
তখন শান্তিনিকেতনে আকাশে বাতাসে গান। সন্ধ্যায় পাঠভবনের ছাত্রীরা শ্রীসদন থেকে যেত পাঠভবন কিচেনে গান গাইতে গাইতে। তাদের গান হতো ঋতু অনুযায়ী। ফিরেও আসত গান গেয়ে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটিই খাবার জায়গা। জেনারেল কিচেন। রাতের খাওয়া শুরু আটটায়। আমরা সাড়ে সাতটা নাগাদ সেন্ট্রাল লাইব্রেরির রিডিংরুম থেকে ফিরতাম। গৌরপ্রাঙ্গণের স্টেজের ওপর বিদ্যাভবন বয়েজ হস্টেল, মৃণালিনী (তখন ছেলেদের হস্টেল), দশচক্র, তিনসঙ্গীর সিনিয়র দাদারা বসে গলা ছেড়ে গান গাইছে, ‘কোন রাতের পাখি গায় একাকী সঙ্গীবিহীন অন্ধকারে... আমি কান পেতে রই’ কখনও বা ‘আমায় ভাসাইলি রে আমায় ডুবাইলি রে অকূল দরিয়ায় বুঝি কূল নাই রে।’ দূরে বিড়লা, গোয়েঙ্কা হস্টেলের সামনে লাল মোরামের রাস্তায় হেঁটে আসছে এক তরুণী—ধীরে ধীরে নিয়ে আসছে হুইলচেয়ারে বসা এক তরুণকে। সঙ্গীত ভবনের মোহন সিং খাঙ্গুরা ও সুমিদি। দু’জনেই গাইছে গান। এই তো শান্তিনিকেতন।
১৯০১-এ যার শুরু ৫টি ছাত্র নিয়ে ধীরে ধীরে তার ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। মাস্টারমশায়রা আসেন। ১৯১০ থেকেই বরীন্দ্রনাথ সীমানা অতিক্রমের আহ্বান শোনেন। আহ্বান শোনেন অন্তরে এই প্রান্তরে একটি ভারতীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার।
শান্তিনিকেতন ব্রহ্মচর্যাশ্রমের সঙ্গে বাইরের জগতের যোগাযোগ শুরু হল কবির বিদেশ বাস সূত্রে। আমেরিকা থেকে ১৯১৩ সালের প্রথম দিকে রবীন্দ্রনাথের লেখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনার ছবি পাওয়া যায়। একটি চিঠিতে লিখছেন, ‘আমার ইচ্ছা ওখানে দুই-একজন যোগ্য লোক একটি ল্যাবোরেটরি নিয়ে যদি নিজের মনে পরীক্ষার কাজে প্রবৃত্ত হন, তাহলে ক্রমশ আপনিই বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি হবে।’
১৯১৪ সাল থেকেই শান্তিনিকেতন বিশ্বকে আকর্ষণ করেছিল। দিল্লি কলেজের অধ্যাপক পদ ত্যাগ করে পাদরি সি এফ অ্যান্ড্রুজ (দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ) গীতাঞ্জলি পড়ে ও কবির সঙ্গে কথা বলে মুগ্ধ হয়ে একটি অখ্রিস্টান প্রতিষ্ঠানে যোগ দিলেন। তাঁর নামেই অ্যান্ড্রুজ পল্লি। অ্যান্ড্রুজের আগেই শান্তিনিকেতনে এলেন আর এক ইংরেজ পিয়ারসন। তিনিও ছিলেন লন্ডনে মিশনারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও পাদরি। শান্তিনিকেতন দেখে মুগ্ধ হয়ে ১৯১৩-এ তিনি জীবন সমর্পণ করলেন শান্তিনিকেতনে। একটি সাঁওতাল গ্রামের নাম এখানে পিয়ারসন পল্লি। বিশ্বভারতীর হাসপাতালের নাম পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতাল। বিনয় ভবনের কাছে অ্যান্ড্রুজের নামে পল্লিবাসীদের জন্য অ্যান্ড্রুজ নামাঙ্কিত ক্লিনিক আছে।
১৯১০ সালের আগস্ট মাসে ইউরোপের একাংশে যুদ্ধ শুরু হয়। পরে যা বিশ্বযুদ্ধের রূপ নেয়। উগ্র জাতীয়তাবোধ বা ন্যাশনালিজম-এর নরঘাতীরূপ দেখে কবি ব্যথিত হলেন। এই ক্ষুদ্র জাতীয়তাবোধ থেকে আত্মাকে রক্ষা করার জন্য রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন—‘শান্তিনিকেতনের আশ্রমে আমরা মানুষের সমস্ত ভেদ, জাতিভেদ ভুলব। আমাদের দেশে চারিদিকে ধর্মের নামে অধর্ম চলছে, মানুষকে নষ্ট করবার আয়োজন চলছে—আমরা আশ্রমে সেই বন্ধন থেকে মুক্ত হব।’
কবি বুঝতে পারলেন শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যে ‘Nationalism’ শিশু মনে প্রবেশ করানো হচ্ছে, তা ভবিষ্যৎকালের ইতিহাসের পক্ষে নিরাপদ নয়। পৃথিবীর এই অবস্থা দেখে তাঁর মনে প্রথম আন্তর্জাতিক এক প্রতিষ্ঠানের কল্পনা দেখা দেয়। পুত্র রথীন্দ্রনাথকে লিখলেন, ‘শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়কে বিশ্বের সঙ্গে ভারতের যোগসূত্র করে তুলতে হবে। ঐখানে সর্বজাতির মনুষ্যত্ব চর্চার কেন্দ্র করতে হবে। স্বাজাতিক সংকীর্ণতার যুগ শেষ হয়ে আসছে—ভবিষ্যতের জন্য যে বিশ্বজাতিক মহামিলন (International Co-operation) যজ্ঞের প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, তার প্রথম আয়োজন ঐ বোলপুরের প্রান্তরেই হবে। ঐ জায়গাটিকে সমস্ত জাতিগত ভূগোল বৃত্তান্তের অতীত করে তুলব—এই আমার মনে আছে—সর্বমানবের প্রথম জয়ধ্বজা ঐখানে রোপণ হবে। পৃথিবী থেকে স্বাদেশিক অভিমানের নাগপাশ বন্ধন ছিন্ন করাই আমার শেষ বয়সের কাজ।’
আমার ছাত্রজীবনে শান্তিনিকেতনে বিভিন্ন দেশ থেকে ভালো সংখ্যায় ছাত্রছাত্রীরা আসত। রাস্তায়, লাইব্রেরিতে সর্বত্র তাদের আনাগোনা। দর্শন বিভাগে মুনলাইট পিকনিকে দুটি জাপানি স্নাতকোত্তর শ্রেণীর ছাত্রীর একজন গাইল ‘ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে।’ অন্যজন নাচল—পেলব কোমল তন্বী—মৃদু বায়ুর মতো বয়ে গেল যেন। তখনও যা দেখি সব নতুন লাগে এখানে। এক অসাধারণ উৎসব দেখে মুগ্ধ হলাম চীনাভবনে। তখন বিকেলবেলা। হঠাৎ পটকা ফাটার শব্দ, আকাশে ফানুসের মতো কী উড়ে গেল। কৌতূহলে হাঁটা দিলাম চীনাভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে। এ যেন বিদেশ। চীনা লণ্ঠন, নানারকম কাগজের ফুল ইত্যাদি দিয়ে চীনাভবনের চত্বরটি সাজানো। কিমোনো ধরনের পোশাকে ও সেই দেশীয় পোশাকে স্বপ্নের মতো নারী-পুরুষ। টেবিল সাজানো হয়েছে সাদা কাপড় দিয়ে। দূর থেকে দেখলাম সুদৃশ্য পাত্রে সুখাদ্য শোভা পাচ্ছে। বুঝলাম না উৎসব কীসের, তবে একটা রেশ থেকে গেল। পরে জানলাম, চীনাভবনের প্রাণপুরুষ তান সাহেব কলকাতাবাসী এক চীনা দম্পতির বিবাহ দিলেন শান্তিনিকেতনে। ওই বীরভূমের লালমাটির দেশে সীমানার ওপারের স্বাদ পেলাম। উইলিয়াম রাদিচিকে দেখতাম রবীন্দ্রভবনে। দেখতাম দানিলচুক রাশিয়ার রবীন্দ্রভক্তকে, দর্শন ভবনে অধ্যাপক ট্রেভর লিং-কে। কোরিয়ার পড়ুয়ারা, আমেরিকার তরুণরা ভারতীয় দর্শন, ভারতীয় সঙ্গীত, সংস্কৃত, বাংলা শিখছে মন দিয়ে। ‘যত্র বিশ্বং ভবত্যেকনীড়ম্।’
১৯১৮ সালেই গুজরাতি ছাত্রদের আসা শুরু হয়। এর আগে আশ্রম বিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে মহারাষ্ট্রের ছাত্র কাশীনাথ দেবল আসেন। বরদার বিখ্যাত ঐতিহাসিক ডঃ সরদেশাইয়ের পুত্র শ্যামকান্ত ও আর একটি গুজরাতি ছাত্র জয়রাম বিদ্যালয়ে আসেন। দার্জিলিং থেকে আসেন নরভূপ ও চারু দুই নেপালি ছাত্র। খাসিয়া ছাত্র ফ্রিন্টন আসেন শিলং থেকে। বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ ঘুরে শান্তিনিকেতনে সংস্কৃত পড়তে আসেন প্রথম বিদেশি ছাত্র জাপান থেকে হোরিসান। পড়তে এসেছিলেন সীমান্তগান্ধী খান আবদুল গফ্ফর খাঁয়ের পুত্র আবদুল গনি। সহপাঠী ছিলেন প্রিয়দর্শিনী ইন্দিরা নেহরুর। পরে তিনিই প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হন। রবীন্দ্রনাথের মনে সেই ছোট আশ্রম বিদ্যালয়টিকে সর্বভারতীয় প্রতিষ্ঠান—ভারতীয় সংস্কৃতির কেন্দ্র করার পরিকল্পনা উঠল। ১৯১৮ শারদ অবকাশের আগে রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিদেশি সুহৃদ অ্যান্ড্রুজ ও পুত্র রথীন্দ্রনাথের কাছে এই ভারতীয় শিক্ষাকেন্দ্রের পরিকল্পনার কথা জানান।
অ্যান্ড্রুজ কিছু কলকাতাবাসী গুজরাতি কয়লা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং রবীন্দ্রনাথ কলকাতায় এলে তাঁরা জোড়াসাঁকোয় এসে কবির সঙ্গে দেখা করেন। রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘কবি এই গুজরাটি ব্যবসায়ীদের কাছেই প্রথম তাঁর বিশ্বভারতী পরিকল্পনার কথা বলেন। বিশ্বভারতীর জন্য অর্থ প্রথম দেন সেই গুজরাটি বণিক সম্প্রদায়।’
১৯১৮ সালে (৮ পৌষ) মহাসমারোহে নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান করে বিশ্বভারতীর ভিত্তি প্রস্তর প্রোথিত হল। এখন সেখানে সন্তোষালয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় ১৯১৭ সালে অ্যানি বেসান্ত চেন্নাই-এর আডেয়ারে একটি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি স্থাপনের পরিকল্পনা করে রবীন্দ্রনাথকে তার চ্যান্সেলার বা আচার্য করেন। সেই সময় দক্ষিণ ভারতে কবি কতগুলি বক্তৃতা দেন Centre of Indian Culture সম্বন্ধে। দক্ষিণ ভারতের নানা শহরে রবীন্দ্রনাথ তাঁর পরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় ‘বিশ্বভারতী’ সম্বন্ধে বক্তৃতা দেন। এইসব বক্তৃতার সারমর্ম ‘বিশ্বভারতী’ নামে বৈশাখ ১৩২৬-এ ‘শান্তিনিকেতন’ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। তিনটি মূল বিষয় এই বক্তৃতাগুলি থেকে পাওয়া যায়।
‘...ভারতবর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈদিক পৌরাণিক, বৌদ্ধ, জৈন, মুসলমান প্রভৃতি সমস্ত চিত্তকে সম্মিলিত ও চিত্ত সম্পদকে সংগৃহীত করিতে হইবে; এই নানা ধারা দিয়া ভারতবর্ষের মন কেমন করিয়া প্রবাহিত হইয়াছে তাহা জানিতে হইবে। এইরূপ উপায়েই ভারতবর্ষ আপনার নানা বিভাগের মধ্য দিয়া আপনার সমগ্রতা উপলব্ধি করিতে পারিবে।’
‘...দ্বিতীয় কথা এই যে, শিক্ষার প্রকৃত ক্ষেত্র সেখানেই, যেখানে বিদ্যার উদ্ভাবনা চলিতেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য কাজ বিদ্যার উৎপাদন, তাহার গৌণ কাজ সেই বিদ্যাকে দান করা। বিদ্যার ক্ষেত্রে সেই সকল মণীষীদিগকে আহ্বান করিতে হইবে, যাঁহারা নিজের শক্তি ও সাধনা দ্বারা অনুসন্ধান, আবিষ্কার ও সৃষ্টির কার্যে নিবিষ্ট আছেন। তাঁহারা যেখানেই নিজের কাজে একত্র মিলিত হইবেন, সেইখানে স্বভাবতই জ্ঞানের উৎস উৎসারিত হইবে, সেই উৎসধারায় নির্ঝরিণী তটেই দেশের সত্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হইবে। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের নকল হইবে না।’
রবীন্দ্রনাথ গভীরভাবে জেনেছিলেন গ্রাম বাংলাকে—পূর্ববঙ্গে জমিদারি পরিদর্শনকালে। পরে বোলপুর অঞ্চলে। পরাধীন দেশের জনসাধারণের দারিদ্র্য, অশিক্ষা, স্বাস্থ্যের অভাব তাঁকে বিচলিত করেছিল। ‘আমি তোমাদেরই লোক’ বলেছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালেও এই মানুষগুলির অভুক্ত মুখগুলি তিনি ভোলেননি। তাই লিখেছেন, ‘তৃতীয় কথা এই যে, সকল দেশেই শিক্ষার সঙ্গে দেশের সর্বাঙ্গীণ জীবনযাত্রার যোগ আছে। আমাদের দেশে কেবলমাত্র কেরানিগিরি, দারোগাগিরি, মুন্সেফগিরি প্রভৃতি ভদ্রসমাজে প্রচলিত কয়েকটি ব্যবসায়ের সঙ্গেই আমাদের আধুনিক শিক্ষার প্রত্যক্ষ যোগ। যেখানে চাষ হইতেছে, কলুর ঘানি ও কুমোরের চাক ঘুরিতেছে, সেখানে এ শিক্ষার কোনো স্পর্শও পৌঁছায় নাই।...ভারতবর্ষে যদি সত্য বিদ্যালয় স্থাপিত হয় তবে গোড়া হইতেই সে বিদ্যালয় তাহার অর্থশাস্ত্র, তাহার কৃষিতত্ত্ব, তাহার স্বাস্থ্যবিদ্যা, তাহার সমস্ত ব্যবহারিক বিজ্ঞানকে আপন প্রতিষ্ঠানের চতুর্দিকবর্তী পল্লীর মধ্যে প্রয়োগ করিয়া দেশের জীবনযাত্রার কেন্দ্রস্থান অধিকার করিবে। এই বিদ্যালয় উৎকৃষ্ট আদর্শে চাষ করিবে, গো পালন করিবে, কাপড় বুনিবে এবং নিজের আর্থিক সম্বল লাভের জন্য সমবায় প্রণালী অবলম্বন করিয়া ছাত্র শিক্ষক ও চারদিকের অধিবাসীদের সঙ্গে জীবিকার যোগে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হইবে। এইরূপ আদর্শ বিদ্যালয়কে আমি বিশ্বভারতী নাম দিবার প্রস্তাব করিয়াছি।’
ইতিহাস বলে যে, কবির প্রতিষ্ঠিত শ্রীনিকেতন কবির এই ‘তৃতীয় কথাকে’ রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিল তাঁর জীবদ্দশাতেই। আজ তা ইতিহাস।
যদিও ১৯১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর প্রোথিত হয়েছিল কিন্তু ‘বিশ্বভারতী’র কাজ শুরু হল ১৯১৯ সালের ১৮ জুলাই। সিংহল থেকে অধ্যাপক এলেন ধর্মগুরু রাজগুরু মহাস্থবির সঙ্গে দু’জন সিংহলী ছাত্র ধর্মদাস ও বুদ্ধদাস। ছিলেন বিধুশেখর শাস্ত্রী মশাই। মৈথিলি পণ্ডিত কপিলেশ্বর মিশ্র, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ পড়াতেন ব্রাউনিং। অ্যান্ড্রুজ পড়াতেন সমালোচনা সাহিত্য। রথীন্দ্রনাথ আদি কুটীরে ‘জীবতত্ত্ব’ সম্বন্ধে বক্তৃতা দেন। জার্মান, আফ্রিকা থেকে আগত নরসিংভাই প্যাটেল পড়ান জার্মান ভাষা। মুম্বই থেকে এলেন ফরাসি পড়াতে হিরজিভাই পেস্তোনজি মরিসওয়ালা। পল ঩রিশার (পুদুচেরির মাদার-এর স্বামী) কিছুদিন ফরাসি ভাষা অধ্যাপনা করেছিলেন এখানে। ১৯১৯ সালে শারদাবকাশের পর এলেন নন্দলাল বসু। সূচনা হল কলাভবনের। এলেন অসিতকুমার হালদার ও হীরাচাঁদ ডুগার। রবীন্দ্রনাথ যিনি গানের ভিতর দিয়ে ভুবনকে দেখেছিলেন, তিনি তাঁর বিশ্বভারতীতে সঙ্গীতকে স্থান দেবেন না, তা অসম্ভব। তাঁর সংকল্প ছিল, ‘বিশ্বভারতী যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তবে ভারতীয় সংগীত ও চিত্রকলা শিক্ষা তাহার প্রধান হইবে।’ শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সকল গানের ভাণ্ডারী, সকল সুরের কাণ্ডারি দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর তো ছিলেনই, ১৯১৪ সালেই এসেছিলেন মহারাষ্ট্র থেকে ভীমরাও হাসুরকর। ত্রিপুরার আগরতলা থেকে এলেন মণিপুরী নৃত্যশিল্পী বুদ্ধিমন্ত সিংহ। শুরু হল সঙ্গীত ও কলার একত্রে পাঠ কলাভবনে।
বাংলার আষাঢ়, ১৩২৬ (ইংরেজি ১৯১৯)। ‘শান্তিনিকেতন’ পত্রিকায় একটি দৃষ্টি আকর্ষক বিজ্ঞাপনী সংবাদ পাওয়া যায়— 
‘যাঁহারা সংগীত শিক্ষাকেই প্রধান লক্ষ্য করিয়াছেন, এ প্রকার ছাত্র আমরা আজও পাই নাই। আমরা জানি, কয়েকটি ব্যবসায় গায়ক... প্রভূত অর্থ উপার্জন করিতেছেন। ...কিন্তু কেবল ঐ কয়েকটি ব্যবসায় গায়কের দ্বারা লোকের অভাব মোচন হইতেছে না। ...কেবল সংগীত শিক্ষার জন্য ছাত্রেরা আশ্রমে আসিলে, দুই বৎসর বা তাহারো অল্প সময়ে রবীন্দ্রনাথের সকল প্রকার সংগীতে তাঁহাদিগকে পারদর্শী করা যাইতে পারে।’ 
ওই ১৩২৬ সালের জ্যৈষ্ঠমাসে ‘শান্তিনিকেতন’ পত্রিকায় সংস্কৃত, বৌদ্ধদর্শন, চিত্রকলা ও সঙ্গীতের জন্যও বিজ্ঞাপন-সংবাদ প্রকাশিত হয়, সঙ্গে উল্লেখ থাকে, ‘আহার, বাস, শিক্ষা, ঔষধ, ডাক্তার, ধোপা, নাপিত প্রভৃতি বাবদ ছাত্রদের মাসে কুড়ি টাকা খরচ লাগিবে।’ 
১৯২১ সালে (৮ পৌষ) আম্রকুঞ্জে মহাসমারোহে রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বসাধারণের উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন দার্শনিক ব্রজেন্দ্রনাথ শীল। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘এই বিশ্বভারতী ভারতবর্ষের জিনিস হলেও একে সমস্ত মানবের তপস্যা ক্ষেত্র করতে হবে।’ ওই দিন গঠিত হয় বিশ্বভারতী পরিষদ এবং ‘বিশ্বভারতী’ পরিচালনার জন্য সংবিধানের খসড়া প্রস্তুতও পেশ হয়। সেই কনস্টিটিউশন কলকাতায় রেজিস্ট্রি হয় ১৯২২ সালের ১৬ মে। 
১৯২২-এ প্রতিষ্ঠা হল শ্রীনিকেতনের। এই সময়ই বিশ্বভারতী আন্তর্জাতিক পণ্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বোলপুরের এই প্রান্তরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্ঞানীগুণীরা এলেন। বিশ্বভারতীতে প্রথম বিদেশি অধ্যাপক আসেন সিলভ্যাঁ লেভি। ১৯২০-তে ফ্রান্সে কবির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তাঁর পাণ্ডিত্য ও ভারতের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা কবিকে মুগ্ধ করে। কবি তাঁকে বিশ্বভারতীর অভ্যাগত অধ্যাপক রূপে নিমন্ত্রণ করেন। তিনি চীনা ও তিব্বতি ভাষায় অধ্যাপনা শুরু করলেন। কলকাতার তরুণ অধ্যাপক প্রবোধচন্দ্র বাগচী এলেন তাঁর কাছে চীনা ভাষা অধ্যয়ন করতে। ভবিষ্যতে এক সময় তিনিই হবেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। নিয়মমাফিক অধ্যাপনা ছাড়াও সিলভ্যাঁ লেভি প্রতি সপ্তাহে পশ্চিম জগতের সঙ্গে প্রাচীন ভারতের সম্বন্ধ বিষয়ে বক্তৃতা দিতেন। এই বক্তৃতা হতো আম্রকুঞ্জে। এই বক্তৃতায় উপস্থিত থাকতেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। ১৯২২ সালের সেপ্টেম্বরে এলেন চেকোশ্লোভাকিয়ার প্রাগের জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতে পণ্ডিত তথা ভারত বিশেষজ্ঞ মরিস উইটারনিটজ ও তাঁর চেক ছাত্র ভিনসেন্ট লেসনি। লেসনি শেখাতেন জার্মান ভাষা কিন্তু বিনা পারিশ্রমিকে। স্থায়ী অধ্যাপক হয়ে আসেন ফার্মা বেনোয়া ও ডঃ মার্ক কলিন্স। ১৯২৩ সালে আসেন দু’জন বিদেশি মহিলা বিখ্যাত আর্ট ক্রিটিক স্টেলা ক্রামরিশ ও মিস স্লোন ফ্লাউম। ১৯২৩-এ আসেন স্টেনকোনো। 
তান-য়ুন-শানের ঐকান্তিক চেষ্টার ফলে বিশ্বভারতীতে ১৯৩৭ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিনে প্রতিষ্ঠিত হল চীনাভবন। ‘নিপ্পন ভবন’  তৈরি হল জাপানের জনগণের ভালোবাসায়। চীনা, জাপানি ভাষায় চর্চার সঙ্গে সঙ্গে তিব্বতি বৌদ্ধশাস্ত্র পাঠও রবীন্দ্রনাথের উৎসাহে শুরু হয়েছিল। ১৯২৫ সালে ইতালি সরকার পাঠালেন এক তরুণ অধ্যাপককে। তিনি জোসেপ তুচ্চি। তিনি রোম বিদ্যালয়ের ‘প্রফেসর অফ রিলিজিয়ান অ্যান্ড ফিলজফি অব ফার ইস্ট।’ সঙ্গে এলেন কার্ল ফার্মিকি। তুচ্চির বেতন আসত ইতালি সরকারের থেকেই। এই প্রথম কোনও অধ্যাপক কোনও রাষ্ট্র থেকে বেতন পেয়ে এলেন। তুচ্চি যেমন সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত জানতেন, তেমনই চীনা ও তিব্বতি ভাষাবিদ ছিলেন। বৌদ্ধশাস্ত্র অধ্যাপনার চর্চা শুরু হল তুচ্চি ও বিধুশেখর শাস্ত্রীকে নিয়ে। 
ভারতীয় আগন্তুক অধ্যাপকদের মধ্যে আসেন লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়, অর্থনীতির অধ্যাপক রাধাকমল ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জরথুস্ট্র ও আবেস্তার পণ্ডিত ডক্টর তারাপুরওয়ালা। 
‘গবেষণা ও অন্যান্য প্রকাশন বিভাগে’ থাকা কালে একটি বই আমার চোখে পড়ে পুরনো বইয়ের মাঝে। সুখময় ভট্টাচার্যের লেখা ‘মহাভারতের সমাজ’। তিনি ভূমিকায় জানিয়েছেন, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ওই কাজটি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ১৯২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে ‘বিশ্বভারতী কোয়ারটার্লি’ ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ১৯২৩ সালে বিশ্বভারতীতে ইসলামিক সংস্কৃতি চর্চা শুরু হয়। ফারসি ভাষায় সুপণ্ডিত রাশিয়ান বগদানফ এলেন এই বিষয়ের অধ্যাপক হয়ে। ছাত্র হলেন মৌলানা জিয়াউদ্দিন ও সৈয়দ মুজতবা আলি। 
১৯২৭ সালে হায়দরাবাদের নিজাম এক লক্ষ টাকা দিলেন ইসলামীয় বিদ্যাচর্চার জন্য। এই বিষয়ের অধ্যাপক হয়ে এলেন জুলিয়াস গেরমানুশ বুডাপেস্টর প্রাচ্যবিদ্যা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক। ১৯২৯ সালের ৭ এপ্রিল স্ত্রী রোজা হাইনকজিকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। গেরমানুশ পড়াতেন আরবি ভাষা। ১৯২৬ সালে মিশরের রাজা ফুয়াদ উৎকৃষ্ট আরবি বই বিশ্বভারতীর জন্য উপহার পাঠান। এভাবে বিশ্বভারতীর একটি নতুন বিভাগ গড়ে উঠল যা আজও বর্তমান। গেরমানুশ-এর স্ত্রী রোজা দেশে ফিরে গিয়ে ‘Fire of Bengal’ (Bengali Tuz) নামে শান্তিনিকেতনের বিষয়ে তথ্য ও বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে একটি উপন্যাস লেখেন। 
শ্রীনিকেতনকে বাদ দিয়ে বিশ্বভারতীর আলোচনা অসম্পূর্ণ থাকে। ২০১৩ থেকে ২০১৮ এই পাঁচ বছর কবির শ্রীনিকেতনকে খুব কাছ থেকে দেখার, কাজ করার সুযোগ ও সৌভাগ্য হয়েছিল। একজন কবির কর্মযোগ যা সিংহভাগ ভারতবাসীর অজানা তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, যা আমি শান্তিনিকেতনে চল্লিশ বছরেও এভাবে জানতে পারিনি। 
শ্রীনিকেতনে অধিকর্তার কার্যালয়টি সুরুল কুঠিবাড়ি। ব্রিটিশ আমলের দোতলা বাড়ি। নীচে অনেক পরিবর্তন, সংস্করণ হয়েছে। ওপরে অনেকটাই অপরিবর্তিত আছে। ওখানে গিয়েই দেখলাম সব বিভাগগুলি মাটির সঙ্গে যোগ রেখে শুরু হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ১৯১২ সালে অক্টোবরে লন্ডনে রায়পুরের সিংহ পরিবারের নরেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহের কাছ থেকে আট হাজার টাকায় ভাঙা কুঠিবাড়ি ও আশপাশের জমি কেনেন। 
মনের মধ্যে তখন পরিকল্পনা চলছে মাটির কাছাকাছি মানুষদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার, তাদের স্বনির্ভর করার। এই বাড়িতে একটি ল্যাবরেটরি স্থাপন করে মাটি সংক্রান্ত গবেষণার স্বপ্নও দেখেছিলেন এক অসাধারণ কবি। ১৯২০ সালে নিউইয়র্কে কৃষি শিক্ষার্থী লিওনার্ড এলমহার্স্টের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের দেখা হল। এই দেখার পরের অংশটি ইতিহাস। কৃষিবিজ্ঞানের পাঠক্রম শেষ করে কোনও অর্থের প্রত্যাশা না রেখে এলমহার্স্ট ১৯২১ সালের ২৭ নভেম্বর শান্তিনিকেতন এসে পৌঁছলেন। সমস্ত কাজের প্রস্তুতি নিতে কয়েকমাস সময় লাগল। শেষে ১৯২২-এর ৬ ফেব্রুয়ারি এলমহার্স্টের পরিকল্পনায়, কালীমোহন ঘোষের সংগঠন শক্তিকে ভিত্তি করে সূচনা হল শ্রীনিকেতনের। শ্রী অর্থাৎ লক্ষ্মী। লক্ষ্মীর নিকেতন। সহযোগী সন্তোষচন্দ্র মজুমদার, নেপাল রায়, গৌরগোপাল ঘোষ, ধীরানন্দ রায়রা এলেন। এলমহার্স্ট শুধু একাই এলেন না তাঁর তৎকালীন বান্ধবী পরবর্তীকালে স্ত্রী বিত্তশালিনী ডরোথি স্ট্রেট-এর অর্থ সাহায্য নিয়ে এলেন, যা শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়েছিল। তাঁদের সকলের লক্ষ্য ছিল শ্রীনিকেতনকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আদর্শগ্রাম রূপে গড়ে তোলা। ম্যালেরিয়া নিবারণ কর্মসূচিতে এলেন বিদেশিনী গ্রেচেন গ্রিন ও ডঃ হ্যারি টিম্বার্স। শ্রীনিকেতনের বার্ষিক উৎসব ‘মাঘমেলা’ একটি কৃষিমেলা, গ্রামীণ মেলা। ৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা দিবসের ভোরের বৈতালিকের গান ‘বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো। /সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারো’ যেন সঙ্গীত হয়ে উঠেছিল। শ্রীনিকেতনে কবি শিক্ষাকে গৌণ স্থান দেননি। এখানে তিনি শিক্ষাসংক্রান্ত কাজের চারটি ধারার পরিকল্পনা করেন। শিক্ষাসত্র— ১৯২৪ সালে শান্তিনিকেতনে শিক্ষাসত্রের সূচনা হয় এবং ১৯২৬ সালে শ্রীনিকেতনে স্থানান্তরিত হয়। শিক্ষাসত্রে কেবলমাত্র গ্রামের দুঃস্থ ছাত্ররাই পড়াশোনা করতে পারত। গ্রামজীবনের সঙ্গে যোগ রেখে কৃষি, পশুপালন, কুটিরশিল্পতেই শিক্ষার্থীদের বেশি উৎসাহ দেওয়া হতো। শিক্ষাসত্রে বিনা বেতনে শিক্ষা দান করা হতো। 
শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্র— গ্রামীণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষাচর্চা স্থাপিত হয়। ১৯৩৭ সালে জানুয়ারি মাসে বোলপুর থেকে ‘গুরু ট্রেনিং বিদ্যালয়’ শ্রীনিকেতনে উঠে আসে, কবি নাম দেন শিক্ষাচর্চা। তৎকালীন বঙ্গীয় সরকার এর ব্যয়ভার বহন করত এবং পরিচালনার দায়িত্ব ছিল বিশ্বভারতীর। আজও সেই ব্যবস্থা চলছে। 
রবীন্দ্রনাথ বোধহয় ভারতবর্ষে প্রথম দূরশিক্ষার সূচনা করেন ‘লোকশিক্ষা সংসদের’ প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে। শিক্ষার সম্পদকে গ্রামের মানুষের কুটিরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। গ্রামের মানুষ যাতে স্কুলের পাঠ থেকে স্নাতকস্তর পর্যন্ত শিক্ষালাভ করতে পারে তার দিকে দৃষ্টি রেখে ১৯৩৭-এ এই প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। গত শতাব্দীর সাতের দশক পর্যন্ত এই লোকশিক্ষা সংসদের কাজ চলেছিল। 
এন্টারপ্রেনার ডেভেলপমেন্ট-এর ভাবনা নিয়ে শিল্পভবন (বর্তমানে শিল্পসদন) গড়ে উঠেছিল। এর দু’টি দিক ছিল একটি প্রশিক্ষণ অপরটি উৎপাদন। শ্রীনিকেতন ও আশপাশের গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের দিকে তাকিয়েই এই বিভাগে পূর্ণশিক্ষা দেওয়া হতো। 
১৯০১-এ যে বীজটি প্রোথিত হয়েছিল ধীরে ধীরে তা একটি পরিপূর্ণ রূপ নিল ‘বিশ্বভারতী’তে। কবি একে বলেছেন তাঁর ‘সোনারতরী’। ১৯৪০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে গান্ধীজি ও কস্তুরবাঈ এলেন কবিকে দেখার জন্য। গান্ধীজির বিদায়বেলায় বৃদ্ধ রবীন্দ্রনাথ তাঁকে একটি বন্ধ খামে চিঠি দেন। তাতে কবি লেখেন যে, তাঁর অবর্তমানে বিশ্বভারতীর ভার যদি গান্ধীজি গ্রহণ করেন, তবে রবীন্দ্রনাথ খুশি হবেন। গান্ধীজি পত্রটি দেখান আবুল কালাম আজাদকে যথাকর্তব্য করার জন্য।
১৯৫১ সালে দিল্লির পার্লামেন্টে স্বীকৃত একটি বিলের মাধ্যমে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ পরিগ্রহ করল। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের আম্রকুঞ্জে অন্তরের বিশ্বাস থেকে, স্বপ্ন থেকে যে বিশ্বভারতী যাত্রা করেছিল ২০২১-এ সেটি শতাব্দী স্পর্শ করল।
(লেখিকা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য)
31st  January, 2021
রাস্তায় পাতা হয়েছে
রাখালদাসের ভাঙা বাড়ির ইট 
বিশ্বজিৎ মাইতি

সিন্ধু নদের শুকনো গর্ভের মাটি ও ভাঙা ইট সরিয়ে ইতিহাসের খোঁজ করছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক ইট সরিয়ে ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন মহেঞ্জোদারো নগরী তিনি পৃথিবীর বুকে তুলে ধরেছিলেন।  
বিশদ

07th  March, 2021
সভ্যতার ঊষাকাল
হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো
কৃষ্ণেন্দু দাস

সালটা ১৯২১। ঠিক একশো বছর আগে অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের হরপ্পা অঞ্চলে শুরু হল প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ। খোঁজ পাওয়া গেল কয়েক হাজার বছর প্রাচীন এক নগর সভ্যতার। পরের বছর খনন কাজ শুরু হয় সিন্ধুপ্রদেশের মহেঞ্জোদারোতে। দেশভাগের পর এ দু’টি অঞ্চল এখন পাকিস্তানের অন্তর্গত।
বিশদ

07th  March, 2021
উপেক্ষিত বিজ্ঞানী 

‘আত্মঘাতী’ বাঙালির ড্রয়িংরুমে তাঁরা কেবলই ছবি। ব্রাত্য। বিস্মৃত। উপেক্ষিত। কেউ নোবেল সিম্পোসিয়ামে বক্তব্য রাখার ডাক পেয়েছেন, আবার কারওর গবেষণার খাতা হাতিয়ে নোবেল পকেটে পুরেছেন অন্য কেউ। গোটা পৃথিবী তাঁদের অবদানে ঋদ্ধ-সমৃদ্ধ, অথচ নিজভূমে তাঁরাই রয়ে গিয়েছেন বিস্মৃতির অন্ধকারে। আজ জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আত্মভরী প্রত্যুষে তেমনই চার বরেণ্য বাঙালি বিজ্ঞানীর বেদনা-বিধুর কাহিনি শোনাচ্ছেন মৃন্ময় চন্দ। 
বিশদ

28th  February, 2021
বাঙালির বিজয় দিবস 
পবিত্র সরকার

যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন, বিংশ শতাব্দীতে এই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সবচেয়ে বড় ঘটনা কী ঘটেছিল, তা হলে অনেকেই হয়তো বলবেন, ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা বা দেশভাগ। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের একটা ভালো (!) দিক এই যে, তা সাম্রাজ্যবাদের মৃত্যুঘণ্টা বাজাল, আর তারই ফলে, ভারতীয় উপমহাদেশ তার বহুবাঞ্ছিত ‘স্বাধীনতা’ লাভ করল।  
বিশদ

21st  February, 2021
কচিকাঁচাদের ভ্যালেন্টাইন
শান্তনু দত্তগুপ্ত

প্রেমের প্রকাশ নানা রকম। বাঙালির কৈশোরের প্রথম প্রেম অবশ্যই নন্টে ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট বা হাঁদা ভোঁদা। এগুলির স্রষ্টা যিনি, তিনিও তো এক অর্থে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনই বটে। বঙ্গের কিশোর-কিশোরীদের প্রথম ভালোবাসাকে আজও তিনি বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজের সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। আজ ভালোবাসার দিবসে পদ্মশ্রী নারায়ণ দেবনাথের অমর সৃষ্টিকে ফিরে দেখার চেষ্টা। বিশদ

14th  February, 2021
নেতাজির গুপ্তবাহিনী
শহিদের অজানা আখ্যান
অমিত মিত্র

উত্তাল বঙ্গোপসাগর। ঢেউয়ের মাথা চিরে এগিয়ে চলেছে টর্পেডোবাহী একটি জাপানি ডুবোজাহাজ।  আচমকা তা ঝাঁপ দিল সমুদ্রের অতলে। জলের নীচে অদৃশ্য হতে না হতেই বন্ধ করা হল ইঞ্জিনও। প্রমাদ গুনলেন ভিতরের কেবিনে বসা আজাদ-হিন্দ-ফৌজের গুপ্তবাহিনীর চার অফিসার— তবে কি কোনও ব্রিটিশ ডেস্ট্রয়ারের নজরে এসেছে সাবমেরিনটি? বিশদ

07th  February, 2021
নেতাজি সুভাষের সেবাশ্রম
জয়ন্ত চৌধুরী

নির্জন দুপুর। বঙ্গভূমি থেকে নির্বাসিত কারারুদ্ধ সুভাষ। বার্মার মান্দালয় জেল তাঁর কাছে তখন জীবন উপলব্ধির একান্ত সাধনপীঠ। বহু ত্যাগ ব্রতী দেশপ্রেমিক কারাজীবন অতিবাহিত করেছেন বার্মার কারাগারে। আর এই জেলে বসেই একদিন পেলেন তাঁর রাজনৈতিক সমর্পণের কাণ্ডারী দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রয়াণবার্তা। বিশদ

24th  January, 2021
অবিলম্বে ওই তথাকথিত চিতাভস্ম
ফেলে দেওয়া হবে না কেন?
 বরুণ সেনগুপ্ত

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী ঘটা করে উদযা঩পিত হল। কিন্তু এই মহান দেশনায়কের অন্তর্ধান রহস্য আজও উদ্ঘাটিত হল না। ২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০০৬ সালের ১১ জানুয়ারি ২৮টি কিস্তিতে প্রকাশিত ‘বর্তমান’ সম্পাদক বরুণ সেনগুপ্তর লেখাটি এ প্রসঙ্গে আজও প্রাসঙ্গিক। তুলে ধরা হল সেই লেখার নির্বাচিত অংশ—
বিশদ

24th  January, 2021
নোবেল, পেনরোজ, 
বং কানেকশন
মৃন্ময় চন্দ

অবিশ্বাস্য, পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারে বং কানেকশন! আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিকতাবাদের সূত্রেই হকিং-পেনরোজ ব্ল্যাকহোলের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহাবিশ্বে অজস্র গ্রহাণুর বর্ণিল ঝিকিমিকির মধ্যে মূর্তিমান বেমানান ‘ব্ল্যাকহোল’, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এমনটাই মনে করতেন আইনস্টাইন। বিশদ

17th  January, 2021
কোট-প্যান্ট 
পরা সন্ন্যাসী

অনেকেই জানতে চান, কার নির্দেশে গৈরিক সন্ন্যাসীরা কোট-প্যান্ট-টাই পরা সন্ন্যাসী হলেন? সহজ উত্তর, এর পিছনে রয়েছে স্বয়ং স্বামীজির সবুজ সঙ্কেত। সন্ন্যাসীদের কেন এই বেশবাস? লিখছেন শংকর। বিশদ

10th  January, 2021
আমার সন্তান যেন থাকে
ভ্যাকসিন  ভাতে
সুন্দর মুখোপাধ্যায়

দু’হাজার কুড়ি বিদায় নিয়েছে, দুর্যোগও যেন শেষ হতে চলল। তবে এ ব্যাপারটা হোল-ওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে আগে বুঝেছে বরানগরের বিল্টু। তার প্রেমিকা মিতা পুরো বছরটা ঝুলিয়ে রেখে একেবারে বছর শেষে বাড়ির অমতে বিয়েতে মত দিয়েছে। এই সুবর্ণসুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়, বিল্টুও করেনি। বিশদ

03rd  January, 2021
 কলকাতার গর্বের চার্চ
 ​​​​​​শান্তনু বসু

১৬৯০ সালের ২৪ আগস্ট। সুতানুটির ঘাটে জাহাজ ভেড়ালেন জোব চার্নক। কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠল ইংরেজদের বাণিজ্যঘাঁটি। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী হিসেবে অবশ্য ইংরেজরাই কলকাতায় প্রথম নয়, তাদের আগে বসতি স্থাপন করেছিল আর্মেনিয়ান ও পর্তুগিজরা। বিশদ

27th  December, 2020
দেশবন্ধু ১৫০
রজত চক্রবর্তী

১৮৯৭। কলকাতা সরগরম। বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজে কিছুদিন ধরেই আলোচনা তুঙ্গে। চারিদিকে ছি ছি পড়ে গিয়েছে! ব্রাহ্ম সমাজের মাথারা আলোচনায় বসেছেন। কারণ, বরদানাথ হালদার ও ভুবনমোহন দাশ সমাজের অগ্রগণ্য দুই মানুষ জড়িয়ে গিয়েছেন এই ঘটনায়। বরদানাথ হালদার বিক্রমপুরের নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা আর ভুবনমোহন দাশ কলকাতার। বরদানাথ হালদারের আর্থিক অবস্থা ভালো হলেও ঋণগ্রস্ত ভুবনমোহন দাশের অর্থনৈতিক অবস্থা জর্জরিত। বিশদ

20th  December, 2020
লৌহপুরুষ
সমৃদ্ধ দত্ত

মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রয়াণদিবস। ৭০ বছর হয়ে গেল তিনি আর নেই। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের অখণ্ডতা রক্ষায় তাঁর অবদান আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি সত্যিই এদেশের এক ও একমাত্র আয়রনম্যান।
বিশদ

13th  December, 2020
একনজরে
শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের দাবি মানতে বাধ্য হল মোদি সরকার। করোনার ভ্যাকসিন প্রাপ্তদের শংসাপত্রে আপাতত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি থাকছে না। ভোটের আদর্শ  নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে কমিশনের নির্দেশ মতোই সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ছবি। ...

বিজেপিকে হারানোর বার্তা নিয়ে আগামী ১৩ মার্চ হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রামে কিষান মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করতে চলেছেন কৃষকরা। উপস্থিত থাকবেন রাকেশ টিকায়েত। বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার ইস্যুতে ভোটের বাংলায় গোটা রাজ্যে সবমিলিয়ে ছ’টি মহাপঞ্চায়েত আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। ...

কয়লা পাচার কাণ্ডে এবার নতুন মোড় নিতে চলেছে। এই কাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআইয়ের নজরে পড়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ন’টি বিশাল প্লট। বহু কোটি মূল্যের ...

ব্রিটিশ রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন যুবরাজ হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেল। তাঁদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তোলপাড় চলছে। যদিও রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে ভাই ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

গ্লুকোমা দিবস
১৭৮৯ : আমেরিকায় পোস্ট অফিস স্থাপিত হয়
১৮৫৪: লেখক মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের জন্ম
১৮৯৪ : যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বোতলজাত কোকাকোলা বিক্রি শুরু হয়
১৯০৪ : ইংল্যান্ডে ইলেকট্রিক ট্রেন চালু হয়
১৯১১: বাঙালি সাহিত্যিক অতুলচন্দ্র গুপ্তের জন্ম
১৯১৮ : ২১৫ বছর পর ফের রাশিয়ার রাজধানী হল মস্কো
১০২৪: সঙ্গীতশিল্পী উৎপলা সেনের জন্ম
১৯৩০ : মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে বৃটেনের বিরুদ্ধে সত্যাগ্রহ বা অসহযোগ আন্দোলন শুরু
১৯৮৪: সঙ্গীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষালের জন্ম
১৯৮৮: সাহিত্যিক সমরেশ বসুর (কালকূট) মৃত্যু
১৯৮৯ : স্যার টিম বার্নার্স লি CERN-এর ল্যাবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) বিশ্বের তথ্য আদানপ্রদানের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমের অবতারণা করেন।
২০১৩: শিল্পী গণেশ পাইনের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭১.৩০ টাকা ৭৪.৫৪ টাকা
পাউন্ড ৯৮.৭৪ টাকা ১০৩.৫৫ টাকা
ইউরো ৮৪.৬০ টাকা ৮৮.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৫,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৩,৪০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৪,০৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৮,০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৮,১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৮ ফাল্গুন ১৪২৭, শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১। চতুর্দ্দশী ২২/৫৭ দিবা ৩/৩। শতভিষা নক্ষত্র ৪২/২৭ রাত্রি ১০/৫১। সূর্যোদয় ৫/৫২/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৪০/৪৩। অমৃতযোগ দিবা ৭/২৫ মধ্যে পুনঃ ৮/১৪ গতে ১০/৩৫ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৭ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/৭ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/১৮ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ৩/২৪ গতে ৪/১৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩৩ গতে ১১/২১ মধ্যে পুনঃ ৪/১৩ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৫০ গতে ১১/৪৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৩ গতে ১০/১৫ মধ্যে। 
২৭ ফাল্গুন ১৪২৭, শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১। চতুর্দ্দশী দিবা ২/৪৩। শতভিষা নক্ষত্র রাত্রি ১০/৪২। সূর্যোদয় ৫/৫৪, সূর্যাস্ত ৫/৪১। অমৃতযোগ দিবা ৭/১৩ মধ্যে ও ৮/১ গতে ১০/২৮ মধ্যে ও ১২/৫৪ গতে ২/৩২ মধ্যে ও ৪/৯ গতে ৫/৪১ মধ্যে। এবং রাত্রি ৭/২১ গতে ৮/৫৬ মধ্যে ও ৩/১৩ গতে ৪/১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩০ গতে ১১/১৭ মধ্যে ও ৪/১ গতে ৫/৫৩ মধ্যে। বারবেলা ৮/৫১ গতে ১১/৪৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৪ গতে ১০/১৬ মধ্যে। 
২৭ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
প্রথম টি২০: ভারতকে ৮ উইকেটে হারাল ইংল্যান্ড 

10:17:20 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ড ৮৯/১ (১১ ওভার) 

09:52:13 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ড ৫০/০ (৬ ওভার) 

09:28:55 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ডকে ১২৫ রানের টার্গেট দিল ভারত

08:49:53 PM

প্রয়াত  রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম সহঅধ্যক্ষ স্বামী বাগীশানন্দ
প্রয়াত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম সহঅধ্যক্ষ স্বামী বাগীশানন্দ। আজ, ...বিশদ

08:40:00 PM

প্রথম টি২০: ভারত ৮৩/৪ (১৫ ওভার)

08:19:34 PM