গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
কাঠফাটা প্রবল গরম। সূর্যের চোখরাঙানিতে ঘেমেনেয়ে একশা বাঙালি। শরীর থেকে নুন বেরিয়ে যাওয়ার এই মরশুমে ঘন ঘন ডিহাইড্রেশনের সমস্যা শুরু হয়। গুমোট গরম, প্যাচপ্যাচে ঘাম মিলিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে। তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ৪০ ডিগ্রি পেরিয়েছে। তবু অফিস, বাজারদোকান, এদিক ওদিক যাওয়া তো লেগেই আছে। বেলা বাড়লেই তাপপ্রবাহ শুরু হচ্ছে। এমন গরমে বরাবরই হাল্কা খাওয়াদাওয়া করার নিদান দেন চিকিৎসকরা। মশলা জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে অনেকটাই ঝোল, হাল্কা রান্না বা পানীয়র উপরেই নির্ভর করতে বলেন। তাই বাঙালির ডায়েটে এই সময় এমন নানা পানীয় থাকে যা শুধু শরীর ঠান্ডা রাখে তা-ই নয়, এনার্জি জোগায় ও খাবার হজমে সাহায্য করে।
এই গরমে বাজারচলতি প্যাকেটজাত বা রাসায়নিক মেশানো শরবত এড়িয়ে চলুন। এতে পেটের নানা সমস্যা বাড়ে। তাছাড়া এই সব পানীয়তে প্রিজারভেটিভ মেশানো থাকে, যা পরোক্ষে শরীরের নানা ক্ষতি করে। তাই হাতের কাছে মজুত রাখুন ঘরোয়া কিছু শরবত। অনেক শিশু আবার ফল খেতে চায় না, শরবত বানিয়ে তাদের ফল খাইয়ে দেওয়াও অনেক সহজ হয়। সব মিলিয়ে গরমের দিনে ঠান্ডা পানীয় বাঙালির পছন্দের সারিতে প্রথম দিকেই থাকে। তাই এই সময়ে হাতের কাছে মজুত রাখুন এমন পানীয় যা শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখবে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
আম শরবত: কাঁচা আমের জোগান প্রায় গোটা গরমকাল জুড়েই থাকে। তা থেকে বানিয়ে নিতে পারেন টক-মিষ্টি শরবত। শরীরে নুনের চাহিদা মেটাতে এই শরবত খুব উপকারী। গরমে খাবার হজম করতেও বিশেষ সহযোগিতা করে এটি। কাঁচা আমের শাঁস ভাপিয়ে মিক্সার গ্রাইন্ডারে পিষে নিন। এবার তাতে অল্প চাটমশলা, সামান্য জিরে গুঁড়ো ও বিটনুন দিন। ঠান্ডা জল যোগ করুন। ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে মিশিয়ে নিন। পরিবেশনের সময় উপর থেকে বরফ কুচি দিয়ে নিলেই গরমের অন্যতম সেরা শরবত তৈরি। দোকানের আমপান্না বা স্কোয়াশের চেয়ে এই শরবত অনেক বেশি উপকারী।
কাঁচা লঙ্কা দিয়ে তরমুজের শরবত: গরমে তরমুজ অন্যতম সহজলভ্য ফল। তরমুজের শরবত এই সময় নানা রেস্তরাঁতেও মেলে। তরমুজ ছোট টুকরো করে কেটে মিক্সার গ্রাইন্ডারে দিন। বেটে নেওয়ার পর ভালো করে চেপে চেপে ছেঁকে রস বের করে নিন। এতে লেবুর রস মেশান। ইচ্ছে করলে একটু চিনিও যোগ করতে পারেন। এবার একটি কাঁচালঙ্কা চিরে শরবতে দিয়ে দিন ও ফ্রিজিং করুন। মিনিট দশেক ফ্রিজে রাখুন। ভালো করে ঠান্ডা হলে লঙ্কার ঝাঁজ নষ্ট হয়ে যাবে তবে শরবতে লঙ্কার একটি তাজা গন্ধ তৈরি হবে। এবার ফ্রিজ থেকে বের করে বিটনুন, চাট মশলা যোগ করে পরিবেশন করুন। গার্নিশিংয়ের জন্য পরিবেশনের সময় ছোট টুকরো করা তরমুজের টুকরো যোগ করতে পারেন।
লেবু পুদিনার লেমোনেড: কিছুটা ঠান্ডা জলের সঙ্গে পুদিনা পাতা, লেবুর রস, জিরে গুঁড়ো, চাট মশলা, নুন ও অল্প চিনি (নাও দিতে পারেন) মিশিয়ে নিন। এবার পুরো মিশ্রণ ভালো করে মিক্সার গ্রাইন্ডারে পিষে নিন। এবার তা ছেঁকে নিন। খানিকটা ঠান্ডা জল যোগ করুন। উপর থেকে ফের কিছুটা বিটনুন ও জিরে গুঁড়ো দিয়ে পরিবেশন করুন এই শরবত। শরীর ঠান্ডা হবে। এনার্জির জোগানও দেবে এই পানীয়।
আমলকীর শরবত: এই পানীয় সহজেই বানানো যায়। আধ কাপ আমলকীর রস একটি গ্লাসে ঢালুন। এর সঙ্গে এক চামচ মধু ও অল্প বিটনুন মিশিয়ে নিন। পরিমাণ মতো জল মিশিয়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে গরমে তাজা থাকার আমলকীর শরবত।
আপেল-পুদিনার শরবত: অনেক শিশুই সহজে ফল খেতে চায় না। এদিকে আপেলের মতো ফল রোজ একটি করে খেলে রোগবালাই দূরে থাকে। এই শরবতটি বানিয়ে দিলে গরমেও আরাম পাবে আবার পেটে একটু ফলও ঢুকবে। একটা আপেল চৌকো করে কেটে তার রস বের করে নিন। এবার একটি গ্লাসে গোটা একটি পাতিলেবুর রস, এক চামচ আখের গুড় ও কয়েকটি পুদিনা পাতা যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণে আপেলের রস ও বরফের কুচি ফেলে দিন। উপরে সামান্য বিটনুন ও জিরে গুঁড়ো ছড়িয়ে পরিবশেন করুন। চাইলে এর সঙ্গে লেমন সোডা মিশিয়েও পরিবেশন করতে পারেন।