হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
মারিয়া পেনের বয়স ১৭ বছর। মার্কিন দেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে হাইস্কুলের ছাত্রী সে। হঠাৎই গরমের ছুটিতে তার জীবন বর্ণময় হয়ে ওঠে। সৌজন্যে নাসা। আরে হ্যাঁ, মহাকাশের কারবারি নাসায় এখন স্কুল পড়ুয়ারাও টুকটাক ইন্টার্নের কাজ পাচ্ছে। যেমনটি পেয়েছে মারিয়া পেনে। নাসার আর্মস্ট্রং ফ্লাইট রিসার্চ সেন্টারে তাকে পার্টটাইম ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ করেছে নাসা। নাসার একটি এয়ারক্রাফ্টের পরিকল্পনা তৈরির কাজে যুক্ত হয়েছে মারিয়া। এয়ারক্রাফ্টের ভিতর ও বাইরের গঠন কেমন হবে, তাতে কী ধরনের জায়গা রাখা হবে, কোথায় কেমন মেশিন বসানো হবে এই সবই মারিয়ার কাজের মধ্যে পড়ে। কিন্তু এহেন কাজ মারিয়া জোটাল কীভাবে? নেহাতই ভাগ্যক্রমে, জানিয়েছে এই কিশোরী। ছবি তোলা এবং ছবি আঁকায় বরাবরই পারদর্শী সে। স্কুলের বিভিন্ন প্রোজেক্ট প্ল্যানিংয়ে সে তাই স্টেজ পরিকল্পনা করে। অনেক সময় আবার প্রাকৃতিক পটভূমির সঙ্গে স্টেজের স্ট্রাকচার মিশিয়ে নতুনত্ব তৈরি করে। এইসব গুণই তার নাসা যাওয়া বা সেখানে ইন্টার্নশিপ করার চাবিকাঠি হয়ে ওঠে। প্রথম যখন গবেষকের একটা টিম তাঁদের স্কুলে আসেন তখন মারিয়া ভাবতেই পারেনি নাসায় কাজ করার সুযোগ পাবে সে কোনওদিন। সত্যি বলতে কী, ওই গবেষকের দল যে নাসা থেকে এসেছে তাও জানত না সে। বরং স্কুলের প্রিন্সিপালের আদেশ মান্য করতেই নিজের কিছু স্টেজ প্ল্যান দেখিয়েছিল গবেষকের ওই দলটিকে। তারপর একটি এয়ারক্রাফ্টের ইন্টিরিয়র প্ল্যানিং বিষয়ে মারিয়ার মতামত চান তাঁরা। আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে একটা ছবি এঁকে ফেলে মারিয়া। সেটি মনে ধরে নাসার গবেষকদের। এবং মারিয়া রাতারাতি বনে যান নাসার ইন্টার্ন। নাসার ইন্টার্নশিপের পিছনে নিজের সাহস এবং দূরদৃষ্টির কথাই বারবার বলেছে মারিয়া। তার কথায়, নিজেকে লুকিয়ে রাখলে চলবে না। নিজের কল্পনাকে ডানা মেলতে দিতে হবে। আর যে কোনও সুযোগ দু’হাতে লুফে নিতে হবে। তাহলেই সাফল্য সুনিশ্চিত।
হলিউড সফরে শিবাঙ্গী সিং
একটা চিত্র প্রদর্শনীতে গিয়ে জীবন বদলে গিয়েছিল শিবাঙ্গী সিংয়ের। ফাইন আর্টসের ছাত্রী শিবাঙ্গী পড়াশোনা করেন দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্টেজের নকশা তৈরি করার প্রতি তাঁর বরাবরের আগ্রহ। কিন্তু সেই আগ্রহ থেকে যে তিনি হলিউডের সেট ডিজাইনার হয়ে উঠবেন তা কে জানত! দিল্লিতে একটা আর্ট এগজিবিশনে গিয়েই তাঁর ভাগ্য বদলে যায়। সেখানে তিনি এমন কিছু সেট দেখেছিলেন, যা তাঁকে ফিল্মের সেট বানাতে আগ্রহী করে তোলে। তাঁর প্রথম কাজ ‘মার্গারিটা উইথ আ স্ট্র’ ছবিতে। কাজটাও খুব অদ্ভুত ভাবে জুটেছিল, জানান শিবাঙ্গী। গল্পের লেখিকার সঙ্গে মেসেঞ্জার মারফত কথা বলেছিলেন। তাঁর গল্প অবলম্বনে তৈরি ছবির স্টেজ ডিজাইন করার ইচ্ছার কথাও সেখানে জানান তিনি। দ্রুত দেখা করার জন্য জবাব আসে লেখিকার কাছ থেকে। পরের দিন দিল্লির এক কফিশপে মোলাকাত হয় দু’জনের। সেখানেই নকশার কিছু ছবি তাঁকে দেখান শিবাঙ্গী এবং কাজের প্রাথমিক বরাত পান। পরবর্তীতে ছবির সম্পূর্ণ সেট ও কস্টিউম ডিজাইন করেন শিবাঙ্গী। ২০১৬ সালে পড়াশোনার জন্য লস অ্যাঞ্জেলেসে পাড়ি জমান তিনি। সেখান থেকেই তাঁর হলিউডে যাত্রা। ‘চিলড্রেন অ্যাট ওয়ার’, ‘দ্য স্পিচ’, ‘মেকিং দ্য কাট’ সহ আরও অনেক হলিউডি ছবির সেট ডিজাইনার হিসেবে যখন বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন শিবাঙ্গী সিং, তখনই বলিউডে একটা বড় ব্রেক পান। ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছবির সেট ডিজাইনার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান তিনি। সলমন খানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা নাকি একেবারেই অালাদা, জানিয়েছেন এই সেট ডিজাইনার। অত বড় অভিনেতা! এত নামী ব্যক্তিত্ব অথচ কী অমায়িক তাঁর ব্যবহার। ছবির সেট বানানোর কাজে কতটা নিজস্বতা লাগানোর সুযোগ পান? শিবাঙ্গী জানান, সিনেমা বানানো সম্পূর্ণ টিম ওয়ার্ক। প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতার সঙ্গে আলোচনার মারফত কাজ হয়। তবে কাজটা ভীষণ ক্রিয়েটিভ। নিজের কল্পনার সঙ্গে বাস্তব মিশিয়ে তবেই একটা সেট ডিজাইন করা যায়। তার জন্য প্রচুর গবেষণাও করেন তিনি। কোথাও বেড়াতে গেলেও সেই জায়গার পটভূমি মনে মনে এঁকে নেন। ছবি তুলে আনেন ডকুমেন্টেশনের জন্য। তারপর সিকুয়েন্স অনুযায়ী তা কাজে লাগান। এইভাবে কাজ করার সুযোগ হলিউডে সবচেয়ে বেশি। তাই বোধহয় ওখানকার ছবি এত রিয়ালিস্টিক, বললেন শিবাঙ্গী।