পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
আকাশে মেঘ ঘনাচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গী দমকা হাওয়া। এই পরিবেশে কাজকর্ম মুলতুবি রেখে দিন কয়েকের জন্য বেড়িয়ে এলে শরীর ও মন দুই-ই চাঙ্গা হবে। কোথায় যাবেন, সে সিদ্ধান্ত আপনার। কিন্তু বেড়াতে গিয়ে প্রতিদিনের ত্বক পরিচর্যার কথা ভুলে গেলে মুশকিল। তাহলে বাড়িতে ফিরে অসুস্থ ত্বককে ফের সুস্থ করার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। তাই বর্ষায় বেড়াতে গেলেও ত্বকের যত্ন জরুরি। তার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ব্যাগে ভরে ফেলতে হবে।
দিন কয়েক আগেই বেড়াতে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী স্নেহা চট্টোপাধ্যায়। ফিরে এসে ফের ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন টেলিভিশনের দুনিয়ায়। নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে স্নেহা বললেন, ‘প্রয়োজন না হলে মেকআপ করতে আমি পছন্দ করি না। কিন্তু এখন ইনস্টাগ্রামে ছবি দিতে হবে, রিলস করতে হবে বলে বেড়াতে গিয়ে একটু কাজল এবং লিপস্টিক লাগিয়েছিলাম। আসলে বাইরে গেলেও খুব সাধারণ ভাবে ছবি শেয়ার করি, তা দেখে বন্ধুরা রেগে যায়। তাই ওদের কথা রাখতেই কাজল, লিপস্টিক ব্যবহার করেছিলাম। তাছাড়া মুখের জন্য সানস্ক্রিন এবং ময়েশ্চারাইজার। বডি ময়েশ্চারাইজার। আর ঠোঁটের জন্য বোরোলিন। এমনিতেই আমার শুষ্ক ত্বক। ক্রিমের উপরই থাকতে হয় বেশিরভাগ সময়। বেড়াতে গেলেও সেগুলো সঙ্গে নিয়ে যাই।’
স্নেহা অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তের কারণে এখন বেড়াতে গিয়েও মেকআপ করে ছবি বা ভিডিও শেয়ার করছেন বেশিরভাগ মানুষ। বরং দিনভর পেশার প্রয়োজনে চড়া মেকআপ, আলোর মধ্যে থাকা অভিনেতারা এ বিষয়ে খানিক আলসে। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে তা করতেও হয়। কিছু কিছু সময় ত্বককে বিশ্রাম দেওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন স্নেহা। রূপ বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশও তেমন মত দেন। তবে নিজস্ব স্কিন কেয়ার বাদ দিলে চলবে না। সেকারণেই আপনার ব্যাগে বর্ষায় বেড়ানোর সঙ্গী কী কী হতে পারে, তার একটা তালিকা এখনই তৈরি করে নিন।
ফেসওয়াশ >>>
দিনভর বেড়ানোর পর হোটেলে ফিরে ভালো করে মুখ ধুয়ে নেওয়া প্রয়োজন। ধুলো বালি, দূষণ ত্বকের ক্ষতি করে। ত্বককে ক্লান্ত করে ফেলে। ত্বক সময়ের আগেই বুড়িয়ে যায়। সেজন্য বেড়ানোর ব্যাগে একটা ফেসওয়াশ রেখে দেবেন সব সময়। হালকা ফেসওয়াশ যেটা আপনি সারা বছর ব্যবহার করেন, সেটাই বেড়াতে গেলেও কাজে লাগবে।
ক্লেনজার >>>
বেড়াতে গেলে অনেকেই মেকআপ এড়িয়ে চলেন। ত্বকের বিশ্রাম হয় কিছুদিন। কিন্তু মেকআপ না করলে ক্লেনজারের প্রয়োজন নেই, তা ভাবার কোনও কারণ নেই। আর মেকআপ করা ত্বকের ক্ষেত্রে ক্লেনজার তো আবশ্যিক। দিনভরের দূষণ ত্বক থেকে তুলে ফেলার সেরা উপায় ক্লেনজার। ক্রিম বেসড ক্লেনজার বর্ষার জন্য আদর্শ। এতে ত্বক আর্দ্রও থাকবে।
টোনার >>>
গোলাপ জল বা শসার রস খুব ভালো টোনারের কাজ করে। বর্ষায় ত্বকে নানা রকম সংক্রমণের হাত থেকেও বাঁচায় এই ধরনের টোনার। ক্লেনজারের পর টোনার এড়িয়ে চলা কোনও কাজের কথা নয়। ফলে বেড়াতে গিয়েও একই রুটিন মেনে চলুন।
ময়েশ্চারাইজার >>>
শুষ্ক, তৈলাক্ত, সেনসিটিভ এবং কম্বিনেশন ত্বকের জন্য ভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজার বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। আপনি বছরভর যেটা ব্যবহার করেন, সেটাই বেড়াতে যাওয়ার সময়ও সঙ্গে নিন। বর্ষায় ত্বক আর্দ্র রাখা জরুরি। ময়েশ্চারাইজারের মধ্যে যেন সেই উপাদান থাকে, সেটা মাথায় রাখবেন। আসলে দিনভর বেড়ানোর পর ত্বকও বিশ্রাম চায়। সেক্ষেত্রে পারফেক্ট হল বডি ময়েশ্চারাইজার। ক্রিম বেসড বডি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক আর্দ্র থাকবে। বর্ষায় শুষ্ক ত্বকের সমস্যা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে ক্রিম বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
সানস্ক্রিন >>>
প্রবল বৃষ্টিতে বেড়াতে গেলেও সানস্ক্রিন ত্বকে অ্যাপ্লাই করতেই হবে। রোদ্দুর থাক বা না থাক, সানস্ক্রিন ত্বকের সুরক্ষার কাজ করে। ফলে বৃষ্টির জলে সানস্ক্রিন ধুয়ে যেতে পারে, এই ভাবনা থেকে সানস্ক্রিন না লাগালে ক্ষতি আপনার। বরং ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন ব্যবহার করে ত্বককে সুস্থ রাখুন। সম্ভব হলে বাইরে থাকাকালীন তিন ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করুন।
ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ >>>
বর্ষায় সাজ মানেই জল লেগে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেকারণেই ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ সঙ্গে নিন। স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের সব গুলিই অতিরিক্ত ঘাম এবং বৃষ্টি রোধক যাতে হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ত্বককে আর্দ্র রাখাও জরুরি। অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গেলে তা থেকে র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ওয়াইপ>>>
বর্ষায় ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। ফলে ত্বকে ফাংগাল ইনফেকশন হতে পারে। সঙ্গে সফট টাওয়েল বা টিস্যু রাখুন। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ওয়াইপ ব্যাগে রাখুন। যাতে ত্বক পরিচ্ছন্ন থাকে সব সময়।
অ্যান্টিফাংগাল পাউডার >>>
ত্বকের যেসব জায়গায় বেশি ঘাম হয়, সেখানে ফাংগাল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আন্ডারআর্মস, হাঁটুর ভাঁজে জমতে পারে ব্যাকটেরিয়া। এসব জায়গায় অ্যান্টিফাংগাল পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। পাউডার ময়েশ্চার টেনে নিতে সাহায্য করে। যা সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করবে।
ফুট ক্রিম >>>
রূপচর্চায় সবথেকে বেশি অবহেলিত হয় পা। কিন্তু সবথেকে বেশি যত্ন পায়েরই প্রয়োজন। বর্ষার বেড়ানোয় জল, কাদা লেগে পা ফাটার সমস্যা বাড়তে পারে। ফলে ফুট ক্রিম সঙ্গে রাখুন। ভালো করে পা ধুয়ে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ফুট ক্রিম লাগিয়ে নিন।
লিপ বাম >>>
ঠোঁট ফাটার সমস্যায় বছরভর লিপ বাম বন্ধুর মতো কাজ করে। বেড়াতে গেলেও লিপ বাম সঙ্গে রাখুন। ফাটা ঠোঁট আর্দ্র রাখতে দিনভর অল্প অল্প করে ব্যবহার করতে পারেন। একান্তই অসুবিধে হলে রাতে লিপ বাম লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন। সকালে উঠে দেখবেন অনেকটা সফট লাগছে।