পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
বর্ষার উপযুক্ত পোশাক চাই। তা আবার হতে হবে পকেটফ্রেন্ডলি। সুতির পোশাক পরে আরাম। কিন্তু খাঁটি সুতি পেতে গেলে খরচ কম নয়। তাছাড়া সুতির যত্নও প্রচুর। বৃষ্টিতে বা ঘামে ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে না ফেলতে পারলে দাগ বসে যাবে। বর্ষায় কাজের জন্য বাসে-ট্রেনে-রাস্তায় রোজ ছোটাছুটির পরে জলকাদা লেগে জামাকাপড়ের যা হাল হয়, তাতে একদিন পরার পর সেই পোশাক গায়ে তুলতেও মন চায় না। আর সিল্ক বা তসরের মতো ফ্যাব্রিক প্রতিদিনের পোশাক হিসেবে অন্তত বর্ষার দিনগুলোয় অনেকেই পছন্দ করেন না। কারণ সেই একটাই। ভিজে গেলে তার যত্নআত্তি করতে হবে নিয়ম মেনে। বাজেটের কথাও তো ভাবতে হবে। এই দোলাচলে আপনি বেছে নিতে পারেন রেয়ন। স্বল্প মূল্য, কিন্তু কার্যকরী। বর্ষার ফ্যাশন সাজান রেয়ন দিয়েই।
ডিজাইনার শুভশ্রী বসু বলছিলেন, ‘রেয়ন এমন একটা ফ্যাব্রিক যেটা অনেক সময় সুতির পরিবর্তে আমরা ব্যবহার করি। পিওর কটন সবসময়ই ব্যয়সাপেক্ষ। সেক্ষেত্রে রেয়ন ফ্যাব্রিক সকলের পক্ষে কেনা সম্ভব। এটা খুব আরামদায়ক। ব্যবহার করাও সহজ। সুতির পোশাক ইস্ত্রি না করে পরতে পারবেন না। কিন্তু রেয়ন বেশি ইস্ত্রি করতে হয় না। যে কোনওভাবে ব্যবহার করা যায়। যে কোনও জায়গায় পরা যায়। সবথেকে বড় যে সমস্যা, অনেকেই এখন সুতি ছাড়া কিছু পরতে পারেন না। কারণ চুলকানি হয়। ত্বকে নানারকম সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে আমরা রেয়ন ব্যবহার করতে পারি। এটা অনেকটাই নরম ফ্যাব্রিক। বর্ষায় জর্জেট, শিফন আমরা ব্যবহার করতে ভালোবাসি। কিন্তু এসব ফ্যাব্রিকে অনেকের ত্বকে সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে রেয়ন ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার করা সহজ, পরা সহজ। ’
রেয়ন আসলে সেলুলোজ ফাইবার দিয়ে তৈরি একটা কৃত্রিম সিল্ক। অনেকে এটিকে আংশিক সিন্থেটিক ফাইবারও বলেন। রেয়নের মধ্যে যে সিন্থেটিক অংশ থাকে তাকে কৃত্রিম রেশম বলেন বিশেষজ্ঞরা। ১৮৮৪ নাগাদ ফ্রান্সে প্রথম ব্যবহারিক বা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের জন্য রেয়ন তৈরি হয়। ধীরে ধীরে তা নানা প্রকার বস্ত্র তৈরিতে কাজে লাগতে শুরু করে। ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। শুভশ্রীর কথায়, ‘রেয়নকে কুর্তি, প্যান্ট, শার্ট, ক্যাজুয়াল— যে কোনও ফর্মে ব্যবহার করা যায়। এখন রেয়ন দিয়ে শাড়িও তৈরি হচ্ছে। রেয়নের শাড়ির কুঁচি সুতির শাড়ির থেকে ভালো হয়। শাড়ির ‘ফল’ ভালো হয় বলে দেখতে অনেকটাই স্মার্ট লাগে।’
প্রতিদিনের পোশাকের জন্য মধ্যবিত্তের খুব বেশি বাজেট ধরা থাকে না। সেখানেও রেয়ন করবে বাজিমাত। খাঁটি সুতি, সিল্ক, তসরের থেকে অনেকটা কম দামে কিনতে পারবেন রেয়নের পোশাক। এমনকী আপনার সুতি বা সিল্কের বাজেটে একাধিক রেয়নের পোশাক প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য কিনে নিতে পারেন। শুভশ্রী বললেন, ‘বিভিন্ন দামের রেয়ন পাওয়া যায়। দামি রেয়ন হলে মান আরও ভালো হবে। সুতি তো সকলের পছন্দের। কিন্তু রেয়ন অনেক বেশি পকেটফ্রেন্ডলি। এমনকী শিশুদের ক্ষেত্রেও রেয়ন ভালো। ভালো মানের রেয়ন দিন। তা ওদের ক্ষেত্রে আরামদায়ক হবে।’
জলে ভিজে গেলে বাড়ি ফিরে রেয়নের পোশাক সাধারণভাবে ধুয়ে দিন। শুকিয়ে গেলে ওই অবস্থাতেই পরতে পারবেন। যা অন্য ফ্যাব্রিকের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। ডিজাইনার জানালেন, রেয়ন যে কোনওভাবে ওয়াশ করা যায়। সুতির পোশাক অনেক সময় ওয়াশিং মেশিনে দেওয়া যায় না। হাতে ধুতে হয়। রেয়নে সে সমস্যাও নেই। তিনি আরও জানান, রেয়নে এখন প্যাস্টেল শেডস ভীষণ ট্রেন্ডি। ‘হালকা গোলাপি, নীল, সবুজ এই ফ্যাব্রিকে সাধারণত সকলে খুব পছন্দ করে। রেয়নে এখন খুব সুন্দর প্রিন্টও তৈরি হচ্ছে। রেয়নে প্রিন্ট করাও সহজ,’ বললেন শুভশ্রী। প্রতিদিনের পোশাক ঝলমলে করে তুলতে রেয়নকে এবার সুযোগ দিন।
স্বরলিপি ভট্টাচার্য