শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
জামাইরা এবার শ্বশুরবাড়ি কতটা গিয়ে উঠতে পারবেন, সন্দেহ আছে। কোভিড পরিস্থিতি সামলে উঠতে আমাদের সময় লাগছে অনেকটাই। তবু বছরকার এই রেওয়াজ পালন করা না গেলে শাশুড়ির মন যে খুঁতখুঁত করে। বিশেষ করে গত বছরও এই অনুষ্ঠান ঠিকমতো পালন করা যায়নি। তাই মনের কোণে আফসোস জমেই আছে। এবার শাশুড়িদের সহায় হয়েছে অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। অনেক জায়গাতেই সুবিধা রয়েছে অনলাইনে অর্ডার করার। তাই ঘরে বসে জামাইয়ের জন্য সেরা পাঞ্জাবিটি অর্ডার দিয়ে পাঠিয়ে দিতে পারেন তাঁর কাছে। তারপর ভিডিও কলেই না হয় সেরে নেওয়া যাবে এবারের জামাই আদর। শাশুড়ির জন্য সেজেগুজে ক্যামেরার সামনে বসে জামাইও বুঝিয়ে দেবেন, তিনি আছেন পাশেই।
কিরো চৌধুরী ‘১০০ পার্ক স্ট্রিট’ ব্র্যান্ডের স্রষ্টা। কিরো জানালেন, ‘এই অনুষ্ঠান সবসময়েই গরমের মধ্যে পড়ে। তাই আরামদায়ক পাঞ্জাবি বানানোর দিকেই মন দিই।’ সঙ্গে এবার খেয়াল রেখেছেন বাজেটের দিকেও। কারণ কোভিড পরিস্থিতিতে সেটা মাথায় রাখতে হবে। মূলত কটন এবং কটন সিল্কের উপরেই তিনি জোর দিয়েছেন। তার মধ্যে কোথাও করেছেন সেল্ফ এমব্রয়ডারি, আবার কোথাও নিজের হাতে করেছেন এমব্রয়ডারি। ‘এগুলো একেবারেই হেভি নয়, পরবর্তীকালেও পরা যাবে সহজেই,’ বললেন তিনি। এবার মন ভালো করতে খুব ভাইব্র্যান্ট কালার বেছেছেন কিরো। তার মধ্যে রয়েছে বটল গ্রিন, অফ হোয়াইটের সঙ্গে গোল্ডেন, ব্ল্যাকের সঙ্গে সিলভার— এমন নানা কম্বিনেশনে কাজ করেছেন তিনি। সঙ্গে খেয়াল রেখেছেন গলার কাটের দিকেও। পরিচিত অঙ্গরাখা স্টাইল যেমন আছে, তেমনই আছে সাইড বাটন স্টাইল। বাঙালিয়ানাও রইল আবার স্টাইলও হল। সঙ্গে কিরো দিচ্ছেন প্লেন কোরা কাপড়ের ধুতি যাতে সাধারণ সরু বর্ডার রয়েছে। এর সাধারণত্বই মুগ্ধ করবে ক্রেতাকে। তাঁর সংগ্রহে আছে বন্ধ গলা বা নেহেরু জ্যাকেট। এই ব্র্যান্ডের এই জিনিসটি খুবই জনপ্রিয়, বললেন ডিজাইনার। ধুতি কুর্তার সঙ্গে এই জ্যাকেট এখন ভীষণ স্মার্ট স্টেটমেন্ট।
ফেসবুকের মাধ্যমে একদিকে যেমন অর্ডার নিচ্ছে ১০০ পার্ক স্ট্রিট, তেমনই আবার কলকাতায় তাঁদের দোকানও খোলা রয়েছে নির্ধারিত সময়বিধি মেনে। একবারে একজনকেই সময় দিচ্ছেন তাঁরা। তার বেশি ক্রেতা একসঙ্গে অ্যালাও করছেন না তাঁরা। এভাবেই কোভিড থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখেছেন।
পাঞ্জাবি নিয়ে নতুন ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন ডিজাইনার গ্লোরী ঈশ্বরারী। তাঁর ব্র্যান্ড গ্লোরী আর্ট-এর পাঞ্জাবিতে তাই মোটিফের মধ্যে এসেছে শিউলি ফুল, ঝুমকো বা নুপূর, ফুলের কুঁড়ি ইত্যাদি। গ্লোরী জানালেন, তিনি বাঙালি ঐতিহ্য রক্ষার দিকেও মন দিয়েছেন। তাই মাছ, পাখা, পদ্ম, শিউলি তাঁর কাজে ফিরে ফিরে আসে। নিজে হাতে মোটিফ তৈরি করেন তিনি। মূলত খাদি বেসড কটনের উপরেই কাজ তাঁর। গরমে যা আরামদায়ক। খাদির বিভিন্ন রঙে তাঁর সম্ভার সাজানো।
মহামারীতে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন সকলেই। ডিজাইনারদের অনেকেই সে কথা মাথায় রেখে বাজেট ফ্রেন্ডলি পোশাক বানানোর চেষ্টা করছেন। সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদেরই একজন। তাঁর ব্র্যান্ড ‘সেরিনিটি বাই সৈকত’ বাজেট এবং গরমে দুইয়ের কথা মাথায় রেখে পসরা সাজিয়েছে। সৈকত বললেন, ‘শুধু জামাইষষ্ঠী নয়, সারা বছরই আমরা জোর দিই কটনের উপরেই। কারণ গরমের দেশে সেটাই সবচেয়ে আরামদায়ক।’ এখানে ছেলেদের পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে জমিদারি ধাঁচে গোল গলা সাইড ওপেন কাট বা অঙ্গরাখা দুই-ই আছে। দু’তিনটে মেটিরিয়াল মিক্স অ্যান্ড ম্যাচও করে দেন তিনি। যেমন একদিকে অফ হোয়াইট খদ্দর, আর একদিকে ইক্কতের কাপড় মিলিয়ে তিনি ইউনিক লুক দিতে চেষ্টা করেন। ভরসা রাখেন দেশজ জিনিসের উপরেই। আর তাই হাতে বোনা পাঞ্জাবি বা অন্য পোশাকেও তারই প্রতিফলন। সাবেকিয়ানা এবং আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটান তিনি। তাঁর ব্র্যান্ডের অন্যতম বিশেষত্ব কাঁথা কাজ। কাঁথার নকশায় একটু বদল এনে লুক পাল্টে দেয় সেরিনিটি। বাংলাদেশের রানের ফোড় যেটা ফাঁস দিয়ে দিয়ে বানানো হয়, তাতেই নতুন ডিজাইন আনছেন তিনি। সামার কালার হিসেবে রেখেছেন অফ হোয়াইট, গ্রিন, লেমন ইয়েলো, ল্যাভেন্ডার ইত্যাদি। যারা একটু বোল্ড কালার চায়, তাদের জন্য সৈকত রাখেন রেড, মেরুন বা ব্রাইট ইয়েলো। একটু পরীক্ষার জন্য হ্যাপি কালার অর্থাৎ ফুশিয়া পিঙ্ক, ফ্লেম অরেঞ্জ এবং ম্যাজেন্টাও ব্যবহার করা হচ্ছে। সৈকত বলেন, ‘এই ধরনের কালার পরতে ছেলেরা এখন যথেষ্ট স্বচ্ছন্দ।’ এমব্রয়ডারি ছাড়া তিনি প্রাধান্য দেন অ্যাসিমেট্রিক কাট ও প্লিটসের উপরে। কখনও গলার সামনে একটু পিনটাক করা ডিজাইন রাখেন, তাতে তাঁর মনে হয় এগুলো একইসঙ্গে ট্রেন্ডি ও ক্যাজুয়াল লুক তৈরি করে। সঙ্গে আছে হ্যান্ড ব্লক প্রিন্টেড কুর্তাও। সেখানে কোয়ার্কি থেকে ট্র্যাডিশনাল— সব মোটিফই থাকে।
জামাইষষ্ঠী এবং আসন্ন ফাদার্স ডে উপলক্ষে নতুন সম্ভারে সেজে উঠেছে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড জয়পুর। অনলাইনে তাদের সাইটে গিয়ে দেখে নিতে পারেন চোখজুড়ানো সংগ্রহ। তার মধ্যে যেমন আছে ক্লাসিক ব্লক প্রিন্ট কুর্তা, ডাবু প্রিন্টেড শার্ট, হ্যান্ডস্পান ও হ্যান্ডউভেন শার্ট ও কুর্তা, লিনেন ব্লেজার্স, হ্যান্ডলুম সিল্ক নেহেরু জ্যাকেটস ইত্যাদি অগুনতি অপশন। এই ব্র্যান্ডের রয়েছে নিজস্ব গিফ্ট কার্ডের ব্যবস্থাও। এমন কার্ড ব্যস্ত জামাইয়ের জন্য হতে পারে আদর্শ উপহার। জামাই তাঁর সুবিধে এবং পছন্দমতো পোশাকটি কিনে নিতে পারবেন এক ক্লিকেই।