সন্তানের কর্ম সাফল্যে মানসিক প্রফুল্লতা ও সাংসারিক সুখ বৃদ্ধি। আয়ের ক্ষেত্রটি শুভ। সামাজিক কর্মে সাফল্য ... বিশদ
স্বামী প্রেমানন্দের সহিত মহাপুরুষজীর সম্বন্ধ কত নিবিড় ও মাধুর্যময় ছিল, তাহা তাঁহার নিম্নের দুইখানি পত্র হইতে বুঝিতে পারা যাইবে।
আলমোড়া হইতে ১৯।৯।১৫ তারিখে লিখিত চিঠিতে মহাপুরুষজী বাবুরাম মহারাজকে লিখিতেছেন—
“প্রিয়তম বাবুরাম মহারাজ (প্রেমানন্দ),
প্রেমের ধারা কি এদিকে এখন বন্ধ হয়ে গেল? এ উচ্চ হিমালয়ে কি প্রেমানন্দের প্রেমধারা উঠতে পাচ্ছে না? তবে গঙ্গা আদি সমস্ত নদী এই কঠিন প্রস্তরময় উচ্চ হিমালয় হইতে নামিতেছেন; সুতরাং আমরা তাঁহাদের ভক্ত হয়ে কি ক’রে এতদিন চুপ ক’রে থাকতে পারি? তাই আজ চিঠি না লিখে থাকতে পারলুম না। মনে করেছিলুম পুরীধাম থেকে তুমি ফিরেছ—এবার চিঠি পাব; তাও তো এতদিন হয়ে গেল! যা হোক, শারীরিক কেমন আছ? তুমি মঠ থেকে চলে যাবার পর আর মঠের কোন চিঠিপত্র পাই নাই। ইতি। দাস—তারক।”
মহাপুরুষজীর চিঠি পাইয়া বাবুরাম মহারাজ যে চিঠি লিখিয়াছিলেন তাহারই উত্তরে তিনি পুনরায় লিখিতেছেন (আলমোড়া, ১২।১০।১৫)—“প্রিয়তম বাবুরাম মহারাজ,
তোমার সুদীর্ঘ পত্রে সবিস্তার সংবাদ পেয়ে বড়ই কৃতার্থ হইয়াছি। ইহাই তোমার দয়া ও প্রেমের পরিচায়ক। অনেকদিন এরূপ পত্র তোমার কাছ থেকে না পেলে মনটা শুকিয়ে যায়। ঠাকুরের কৃপার কাছে গণ্ডি-ফণ্ডি, বেড়া-ট্যাড়া সব ভেঙ্গে যায়। তাঁর কৃপাবারির বেগ অতি প্রবল। নীচের ধারাও উপরে ঠেলে ওঠে। এখন যে pumping system (জলপাম্পের ব্যবস্থা) চলেছে, তাহা স্বাভাবিক নিয়মকে অতিক্রম করেছে। বিজ্ঞান ও স্বভাবের সহিত সংগ্রাম চলেছে। তোমাদের প্রেমবারি এ পাহাড়—অতি দুর্গম দুরূহ অবিদ্যার পর্বতকে উল্লঙ্ঘন ক’রে জীবকে ধন্য করে। ইতি। দাস—তারক।”
স্বামী প্রেমানন্দ মহারাজের অদর্শনের পর মঠে গেলে কে আর তেমন ভালবাসিয়া কথা বলিবে, কে আর আমাদের যত্নাদি করিবে—ইহা ভাবিয়া অনেক ভক্ত মঠে আসা বন্ধ করিয়াছিলেন। মহাপুরুষজীও তাহা বিশেষভাবে লক্ষ্য করিয়া ধীরে ধীরে তাঁহাদিগকে আকর্ষণ করিতে লাগিলেন। একদল যুবকভক্ত—সকলেই কলেজের ছাত্র নিয়মিতভাবে বাবুরাম মহারাজের কাছে আসা-যাওয়া করিত। তিনিও তাহাদিগকে খুব ভালবাসিয়া যাহাতে তাহারা ভবিষ্যৎ জীবনে শ্রীপ্রভুর চরণে জীবনোৎসর্গ করিয়া তাঁহার ত্যাগের পতাকা বহন করিবার যোগ্য হইতে পারে, সেইভাবে তাহাদিগের ধর্মজীবন নিয়ন্ত্রিত করিতেন।