শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
চল্লিশ বৎসর পূর্ণ হইবার পূর্বেই তিনি দেহত্যাগ করেন। এই বয়সে অনেকেরই জীবনের সূচনা হয় মাত্র! সুধী লর্ড মেকলে এ সম্পর্কে বলিয়াছেন—
“প্রকৃতির নিয়মে মানুষের মন খুব ধীরে ধীরে তাহার পূর্ণ শক্তি অর্জন করে; এই সত্য অতিশয় তেজস্বী মনের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রযোজ্য। অনেক তরুণ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় গ্রন্থ রচনা করিয়াছেন কিন্তু এমন কোন প্রথম শ্রেণীর লেখকের নাম করা প্রায় অসম্ভব যাঁহার যৌবনকালের রচনাগুলিই শ্রেষ্ঠ রচনা বলিয়া চিহ্নিত করা যায়। ইতিহাস, ভাষাতত্ত্ব, পদার্থবিজ্ঞান, দর্শনশাস্ত্র, ধর্মতত্ত্ব বা অর্থনীতির সমস্ত মূল্যবান গ্রন্থই যে পরিণতবয়স্ক পণ্ডিতের কীর্তি ইহাতে বিতর্কের অবকাশ নাই বলিলেই হয়। কল্পনাভিত্তিক রচনার ক্ষেত্রে আমার বক্তব্য স্পষ্টতর না হইতে পারে। তবুও বলি, এমন কোনও যুগের ও দেশের এমন কোনও উচ্চপর্যায়ের কল্পনাপ্রসূত সৃষ্টির কথা আমার জানা নাই যাহা পঁয়ত্রিশ বৎসরের নিম্ন বয়স্ক লেখকের রচনা। একজন যুবককে প্রকৃতি যত শক্তি দিয়াই ধন্য করুন না কেন, তাহার রুচির ও বিচারবুদ্ধির পরিপক্কতা বয়সনির্ভর, তাহার মানস রূপকল্পসমৃদ্ধ হওয়া অসম্ভব। জীবনদর্শন অথবা মনুষ্যচরিত্রের সুন্দরতর দিকগুলির সূক্ষ্ম অনুধাবন তাহার পক্ষে সম্ভব নয়। সমগ্রভাবে বিচার করিয়া বলিতে পারি, জগতের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মের শতকরা পঁচানব্বইটি গ্রন্থ লেখকের চল্লিশোত্তীর্ণ অভিজ্ঞতার ফল। আমার মনে হয়, আমার এই সিদ্ধান্ত প্রতিবাদের ঊর্ধ্বে।”
লর্ড মেকলের এই বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত মূর্ত প্রতিবাদ স্বামীজী। মাত্র ত্রিশ বৎসর বয়সে তাঁহার আধ্যাত্মিক অমিতবিক্রম ও প্রখর প্রতিভার পরিচয় দিয়া পাশ্চাত্য জগতকে তিনি হতবাক্ করিয়া দেন। ১৮৯৩ খৃষ্টাব্দে মোটামুটি ঐ বয়সেই চিকাগোয় অনুষ্ঠিত ধর্ম-মহাসম্মেলনের অবিসম্বাদী শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি বলিয়া তিনি সম্মানিত হইয়াছিলেন। এই অভিনন্দের গুরুত্ব উপলব্ধি করিবার জন্য আমাদের স্মরণ করা প্রয়োজন যে, উক্ত ধর্মমহাসম্মেলনে সহস্রাধিক প্রবন্ধ পঠিত হইয়াছিল এবং এই সম্মানতিলক স্বামীজীকে দিয়াছিল মার্কিন দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পত্রিকা ‘নিউ ইয়র্ক হেরাল্ড’।