শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
মা: সমাধি মানে সমাধান—
প্রশ্ন: সমাধান কোন প্রশ্নের হয়, সমাধি পৃথক্ বস্তুর।
মা: এ শরীরে শাস্ত্রের ভাষায় কথা হয় না। এ শরীর জল, মাটি, হাওয়া, এসব সাধারণ বস্তু লইয়াই কথা বলে। যে সমঝদার এই টুটী ফুটী ভাষায় বুঝিয়া লয়। সমাধান বলিতে যেখানে রূপ, অরূপ, ভাব, অভাব সব কিছুর সমাধান। এক প্রশ্নের সমাধান আর যেখানে প্রশ্নোত্তরের প্রশ্ন উঠে না ঐ সমাধান—উহাই সমাধি।
প্রশ্ন: হ্যাঁ। সমাধি দুই প্রকার—সবিকল্প আর নির্বিকল্প।
মা: এক হয় বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এক সত্তাতে পরিণত হওয়া, আর হয় সত্তার ও কথা নেই।
প্রশ্ন: সত্তার কথা নাই! তবে উহা কি?
মা: সংকল্প বিকল্প থাকিলে সবিকল্পও নয়। সবিকল্প সত্তাবোধ। যেখানে সত্তারও প্রশ্ন নাই-কি যে আছে, আবার কি যে নাই! ঐ স্থানে ভাষায় ব্যক্ত কতটুকু বল? ঐ নির্বিকল্প। এখানে চমৎকার দাঁড়ায় কোথায়?
প্রশ্ন: চমৎকার অর্থাৎ অলৌকিক বস্তু যাহা সাধারণ বুদ্ধিতে আসে না। মনের অবশ্যই বিষয় আছে। মন মানিলে মনের কল্পনাই মনের বিষয়। মন হইতে পৃথক্ কোন বস্তু ত আছে—চিৎ, পূর্ণ যাহা বল। ঐ বস্তু ছাড়া মনের যাহা অবলম্বন তাহাই চমৎকার।
মা: চমৎকার কে দেখে?
প্রশ্ন: মন।
মা: মন না থাক্লে ত চমৎকার দর্শন হয় না। সুতরাং নির্বিকল্পে দর্শন কিরূপ?
প্রশ্ন: আমার বিচারে আসে দুই প্রকার সমাধিতেই মন থাকে। শাস্ত্রে বলে নির্বিকল্প সমাধিতে মন থাকে না। অবশ্য এই স্থূল মন ত থাকেই না, কিন্তু সূক্ষ্মরূপে লীন থাকে ইহা মানিতেই হইবে। নতুবা ব্যুত্থানে অনুভব হয় কি করিয়া? অর্থাৎ ব্যুত্থানে উহা স্মরণ হয় কি না? যদি হয় তবে সূক্ষ্মরূপে মন থাকে বলিয়াই মানিতে হইবে।
মা: কেহ কেহ বলে লেশ থাকে। লেশ না থাকিলে শরীরের প্রকাশ কি করিয়া? এ শরীরের এত ত কথা—সব জ্বালাইতে পারে আর এই লেশটুকু জ্বালাইতে পারে না? যেখানে অনুভূতি সে ত মনেই। মন যেখানে সেখানে চমৎকার।
প্রশ্ন: যদি লেশ চলিয়া যায় তবে শরীর থাকে কি করিয়া? কি অবস্থায় লেশ চলিয়া যায়? প্রারব্ধ অবস্থায়, কি প্রারদ্ধ অন্তে?
মা: পিতাজীর কি মত? হ্যাঁ কেহ কেহ বলে এই মন নয়। এ শরীরের ত সেই কথা, সব জ্বালায় আর প্রারব্ধ জ্বালাইতে পারে না?
প্রশ্ন: প্রারব্ধ জ্বালাইলে শরীর থাকে কি করিয়া?
মা: তবে কি শরীর যতক্ষণ ততক্ষণ প্রারব্ধ আছে এবং মনও থাকা উচিত? হ্যাঁ এ শরীর যদি মান প্রারব্ধ ত মানতেই হবে। আর মন ও তুমি যেভাবে বল্লে মানা উচিত। শরীর মানে পরিবর্তন যা সরে যায়। যেখানে মৃত্যুর মৃত্যু বলিয়া কথা সেখানে কি আর শরীরের প্রশ্ন দাঁড়ায়?
প্রশ্ন: যখন চমৎকার দেখা যায় তখন মুখ্য স্থান হইতে চ্যুত হওয়া হইল কি না?
মা: আসল স্থানে পৌঁছিলে চমৎকার, চ্যুত হওয়া বা না হওয়ার প্রশ্নই নাই। বিদেহ মুক্তি কাহাকে বলে?
প্রশ্ন: এই শরীর ত্যাগ হইলে আর শরীর ধারণ না করা।
মা: আচ্ছা, শরীরই কি বাধক? পতন হয় কি তা হ’লে?
গোপীনাথ কবিরাজ সংকলিত ‘আমি মা আনন্দময়ী বলছি’ থেকে