শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
খ্রীষ্টের উক্তিটির অর্থ এই যে—আমরা যদি আমাদের অন্তর থেকে সর্বপ্রকার অন্ধকার দূর ক’রে সত্যজ্ঞানের উদ্দীপন চাই, তাহলে আমাদের খ্রীষ্টের জীবন ও চরিত্র-কে আদর্শ স্বরূপ মেনে চলতে হবে।
তাই যীশুখ্রীষ্টের জীবন অনুধ্যান আমাদের অবশ্যকরণীয়। খ্রীষ্টের উপদেশাবলী শ্রেষ্ঠ গুরুর শ্রেষ্ঠ শিক্ষার চেয়ে কত-না শ্রেয়! উপলব্ধি করার ক্ষমতা যার আছে, সে-ই পাবে তার নিগূঢ় অমৃতের সন্ধান।
কিন্তু হায়...আমরা অনেকেই মঙ্গলসমাচার বার বার পঠন ও শ্রবণে আমাদের মনে বিশেষ নিষ্ঠা জাগে না, কারণ—খ্রীষ্টের আত্মিক অনুপ্রেরণায় আমরা উদ্বুদ্ধ হই না। কেউ যদি খ্রীষ্টবাণীর তাৎপর্যের সম্যক্ উপলব্ধি ও রসাস্বাদনে উৎসুক হয় তাহলে, সে যেন খ্রীষ্টেরই জীবনাদর্শে নিজের জীবন গ’ড়ে তোলার সংকল্প করে। দুর্জ্ঞেয় ত্রিপুরুষ-বাদের যত-ই সূক্ষ্ম পর্যালোচক হও না কেন, বিনয়ের অভাবে তুমি যদি ত্রিপুরুষ-পরমেশ্বরেরই অপ্রীতিভাজন হয়ে পড়—তবে কী লাভ? সত্যি, জ্ঞানগর্ভ বাক্যের উচ্চারণে মানুষ পুণ্যবান হয় না, হয় না ধর্মশীল; সদাচরণেই সে লাভ করে ভগবানের মৈত্রী। আর আমি তো বলি, অনুতাপের লক্ষণোপসর্গ নির্ণয়ের চেয়ে অনুতাপের উপলব্ধি-ই অধিকতর কার্যকরী।
পুণ্যশাস্ত্রের সূত্রাবলী, জ্ঞানীজনের উক্তিসমূহ কণ্ঠস্থ ক’রে থাকলেও, ভগবানের প্রসাদ ও কৃপা-ই তুমি যদি না অর্জন কর—তবে সবই তো নিষ্ফল। সবই অসার—ভগবৎভক্তি ব্যতীত; সবই অনর্থক—ঐশ সেবা ব্যতিরেকে।
সংসার তুচ্ছ জেনে স্বর্গরাজ্য—অভিযানই চূড়ান্ত প্রজ্ঞা-নিদর্শন।
ক্ষয়শীল ঐশ্চর্যের সন্ধান, অল্পায়ু সম্পদে আস্থা—মহা মূর্খতার পরিচয়। সংসারসুলভ সম্মানের অন্বেষণ, উচ্চপদের লিপ্সা—মহা মূর্খতার পরিচয়।
ইন্দ্রিয়লালসার চরিতার্থতা, দণ্ডনীয় সমস্ত বাসনা—মহা মূর্খতার পরিচয়। সৎজীবনযাপনে যত্নবান না হয়ে দীর্ঘায়ুর আকাঙ্ক্ষা—মহা মূর্খতার পরিচয়।
পরলোকের কথা ভুলে ইহলোকেই মনোনিবেশ—মহা মূর্খতার পরিচয়। ক্ষণস্থায়ীর মোহে চিরানন্দের অভিযানে পরাঙ্মুখতা—মহামূর্খতার পরিচয়।
‘‘দর্শনে চোখ লাভ করে না তৃপ্তি, শ্রবণে কান লাভ করে না তুষ্টি’’—প্রবাদটা তুমি সর্বদাই মনে রাখবে। এমনি ভাবে দৃশ্য সব-কিছুরই প্রতি অনুরাগ থেকে নিবৃত্ত হয়ে তুমি অদৃশ্য সত্তার অনুধাবন করবে।
যারা ইন্দ্রিয়পরবশ, আপন বিবেক কলুষিত ক’রে তারা ঐশ প্রসাদে বঞ্চিত হয়।
বিনয়
মানুষমাত্রই স্বভাবত জ্ঞানান্বেষী; কিন্তু ধর্মভীরুতা-বিচ্যুত জ্ঞানে লাভ আছে কী? আত্মাভিমানভরে আকাশমণ্ডল পর্যবেক্ষণে নিরত হয়ে আপন পরিত্রাণ বিষয়ে যে-জ্ঞানী অনবহিত, ধর্মভীরু ঈশ্বরসেবক গ্রামবাসী মানুষ তার চেয়ে অনেক ভালো।
ফাদার দ্যতিয়েন অনুবাদিত ‘খ্রীষ্টানুকরণ’ থেকে