বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
আসলে আমরা এখনও ‘নিরুপমা’দের যুগেই পড়ে আছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন ‘দেনাপাওনা’ লিখেছিলেন, তখন তো ব্রিটিশ শাসিত সমাজ! বহু অন্ধকার দানা বেঁধেছিল ঘরে ঘরে। তাও রবি ঠাকুর দেখিয়েছিলেন এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়ির চিত্র। যেখানে রামসুন্দর ১০ হাজার টাকা পণ না দিতে পারায় তিলে তিলে মরতে হয়েছিল নিরুপমাকে। অসুস্থ হয়ে পড়লে শুনতে হয়েছে, সে নাকি ন্যাকামি। তাও কার থেকে? শাশুড়ি নামক এক নারী-সম্পর্কের থেকে। কথায় বলে, মেয়েরাই নাকি মেয়েদের বেশি শত্রু হয়। তারই উদাহরণ ছিল দেনাপাওনা... আর যার প্রমাণ আজও এই সমাজ দিয়ে চলেছে। যতক্ষণ একজন নারীর থেকে স্বার্থসিদ্ধি হচ্ছে, ততক্ষণ তার দাম আছে—সম্পত্তি হিসেবে। এর বেশি কিছু নয়।
বাংলা, হিন্দি... সর্বত্র নারীসুরক্ষা, নারীদের সম্পর্কে সচেতনতা নিয়ে কতই না সিনেমা হচ্ছে। আমরা দেখতে যাচ্ছি, বাহ বাহ করছি, আর সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে ভুলে যাচ্ছি। বাড়ি ফিরে আমাদের কাছে বেশি চিত্তাকর্ষক মনে হচ্ছে গুগলে সার্চ করা, কীভাবে কাশ্মীরি মেয়ে বিয়ে করা যায়। ৩৭০ ধারা কাশ্মীর থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ায় রাজনৈতিক দিক থেকে যার যতই লাভ হয়ে থাকুক না কেন, অধিকাংশ মানুষের কৌতূহলের জায়গা দু’টি—কাশ্মীরি মেয়ে বিয়ে করা এবং ওই রাজ্যে জমি কেনা। গলদটা যে সচেতনতায় থেকে গিয়েছে! আমরা আমাদের সন্তানদের বড় করার সময় নারীদের সম্মান করার শিক্ষাটাই দিই না! তাই সে যখন বড় হয়ে বা সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্থান পাওয়ার পর মেয়েদের নিয়ে আলপটকা মন্তব্য করে, তাকে পুরোপুরি দোষ দেওয়া যায় না। শিকড়টা যে বড্ড গভীর! তাই নিরুপমারা আজও জন্মায় বহু শ্বশুরবাড়িতে। হারিয়েও যায় আচমকাই। আর আমরা গাড়ির পিছনে স্টিকার সেঁটে বেড়াই, শহরকে নারীসমাজের জন্য নিরাপদ করে তুলতে হবে। গাড়িতে নয়, এই শিক্ষাটা প্রয়োজন বাড়িতে। ওই যে কথাটা আছে না, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম!