বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
কেন? আসলে গণবণ্টন ব্যবস্থায় রেশনে যে পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী একজন গ্রাহকের পাওয়ার কথা, অভিযোগ, তা তিনি পান না। রেশনের কম দামের চাল-গম বাইরে বাজারমূল্যে পাচার করে মুনাফা লোটেন একশ্রেণীর অসাধু রেশন ডিলার। এ ধরনের দুর্নীতির ঘটনা হাতেনাতে ধরাও পড়েছে বহুবার। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
অভিযোগ শুধু রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এই খবর পৌঁছে গিয়েছিল কেন্দ্রের কাছেও। তাই তারা মাথা খাটিয়ে এমন একটি ব্যবস্থা দেশব্যাপী চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে, যাতে রাজ্যের রেশন ডিলারদের কার্যত মাথায় হাত পড়েছে। বিগত কয়েক মাসের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, নানা অজুহাতে তাঁরা কোনওভাবেই এটি চালু করতে চাইছেন না। অবশেষে কেন্দ্র মোক্ষম চাল দিয়েছে, এই যন্ত্র চালু না করলে খাদ্যসামগ্রীর ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর এতেই টনক নড়েছে রাজ্যের। তড়িঘড়ি খাদ্য দপ্তর এই যন্ত্র চালু করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিয়েছে। রেশন ডিলারদের প্রথমে বুঝিয়ে সুজিয়ে এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য বলা হবে। কিন্তু তাতেও কাজ না হলে কন্ট্রোল অর্ডার অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেকথাও ফুড কমিশনার মনোজ আগরওয়ালের জারি করা নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে এও বলা হয়েছে, কত সংখ্যক দোকানে ওই ই-পস যন্ত্র চালু হল, তার রিপোর্ট প্রতি সপ্তাহে দপ্তরে পাঠাতে হবে। এমনকী সংশোধিত এবং বিধিবদ্ধ এলাকায় আলাদা করে নজরদারির জন্য নোডাল অফিসার নিয়োগের কথাও বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে মোট রেশন দোকানের সংখ্যা ২০ হাজারের মতো। কিন্তু তার মধ্যে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে মাত্র ৩৬৬টি দোকানে ওই যন্ত্র চালু হয়েছে। প্রশ্ন হল, কী এমন রয়েছে এই যন্ত্রে, যার জন্য ডিলাররা তা বসাতে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। প্রথমত, রাজ্যজুড়ে যে ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু হয়েছে, সেগুলি রেশন দোকানে থাকা ওই যন্ত্রে সোয়াইপ করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের নাম এবং তিনি ওই কার্ডের জন্য কত পরিমাণ চাল ও আটা পেতে পারেন, সেই তথ্য যন্ত্রে ফুটে উঠেবে। তার ফলে সমস্ত তথ্য রাজ্য এবং কেন্দ্র, উভয়েরই মূল সার্ভারে চলে যাবে। এরপর তাঁকে যা যা দেওয়া হল, তার রসিদও ওই যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসবে। একইসঙ্গে একজন দোকানদার কোনও গ্রাহককে ঠিক কী পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী দিলেন, তার তথ্য মাউসের এক ক্লিকেই খাদ্য দপ্তরের অফিসাররা জানতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোথাও বরাদ্দের চেয়ে কম খাদ্যসামগ্রী দিলে সংশ্লিষ্ট ডিলারকে চিহ্নিত করা এবং তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়াও অনেক সহজ হবে। ব্যবস্থাটিকে আরও শক্তপোক্ত করার জন্য কেন্দ্র এর সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণেরও প্রস্তাব দিয়েছে। অর্থাৎ, যাঁর কার্ড, তিনি ছাড়া অন্য কেউ দোকান থেকে রেশনের খাদ্যসামগ্রী তুলতে গেলেই ধরা পড়ে যাবেন।
দেরিতে হলেও রাজ্য যে এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে, তা সাধুবাদযোগ্য। রেশন ডিলাররা এখনও কমিশন বৃদ্ধির দাবি তুলে ওই ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে গড়িমসি চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের স্বার্থে এটি কার্যকর করা এই মুহূর্তে খুবই জরুরি।