নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সোমবার সকালে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার চলল পিজি হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে। এদিন সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নেফ্রোলজি বিভাগের তিনতলায় মেল ওয়ার্ডে ভর্তি মহম্মদ সাকির (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। সেই সময় ওয়ার্ডে ছিল তাঁর দাদা সাজিদ। সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওয়ার্ডে কাচের কিউবিক্যাল ভাঙতে শুরু করে। হাত কেটে রক্ত বেরতে শুরু করে। সেই অবস্থাতেই উন্মত্তের মতো হাতের কাছে যাকে পেয়েছে, তাকেই মারধর করার চেষ্টা করে। সেই সময় ওয়ার্ডে ডাঃ সৌগত দাশগুপ্ত নামে এক চিকিৎসক কাজ করছিলেন। হাতের সামনে তাঁকে পেয়ে মারতে শুরু করে সাজিদ। এরপর ছুটে যায় কর্তব্যরত নার্সদের দিকে। ততক্ষণে খবর পেয়ে ওয়ার্ডে চলে আসে ভবানীপুর থানার পুলিস। ডিসি কমব্যাট সহ উচ্চপদস্থ পুলিসকর্তারাও আসেন। নেফ্রোলজি’র বিভাগীয় প্রধান ডাঃ রাজেন পাণ্ডে সহ অন্যান্য হাসপাতাল কর্তারা হাজির হন। ক্ষিপ্ত মৃতের দাদাকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। এই ঘটনায় মৃতের বাড়ির লোকজনের তরফ থেকে চিকিৎসায় গাফিলতি বা অন্য কোনও অভিযোগ পুলিসের কাছে দায়ের করা হয়নি। কর্তব্যরত প্রহৃত চিকিৎসক ঘটনাটি লিখিতভাবে জানান পুলিসে। সেই জেনারেল ডায়েরিকেও অভিযোগ হিসেবে গণ্য করে এফআইআর রুজু করে মামলা শুরু করেছে পুলিস।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে গত দু’মাসে এত তোলপাড় হওয়ার পরও ফের চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটল কীভাবে? পিজি’র সুপার তথা এমএসভিপি ডাঃ রঘুনাথ মিশ্র এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভোরের দিকে ঘটনাটি ঘটে। সারাদিন কাজের পর ওই সময় সকলেই একটু ক্লান্ত থাকেন। তাছাড়া যা খবর পেলাম, মৃতের দাদা চূড়ান্ত আবেগতাড়িত হয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। সকলকেই মারধর করার চেষ্টা করেছে। তাতে হাত কাটে। সেই কাটা হাতের চিকিৎসাও করেছি আমরা। রঘুনাথবাবুর দাবি, মৃত মহম্মদ সাকিরকে বাঁচাতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম।
পিজি সূত্রের খবর, ১৫ জুলাই থেকে পিজি’র নেফ্রোলজি বিভাগের ১২ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়েছিল ১৮/৩এ, মোমিনপুরের বাসিন্দা মহম্মদ সাকিরকে। নেফ্রোলজি’র তিনতলায় ১২ নম্বর বেডে তার চিকিৎসা চলছিল। কোনও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত কারণে কিডনির জটিল অসুখে ভুগছিলেন তিনি। অবস্থা ছিল বেশ আশঙ্কাজনক। ভোরের দিকে হদরোগে আক্রান্ত হন সাকির। তারপর শুরু হয় ঘটনা পরম্পরা।