দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
প্রায় তিন বছর পরে রবিবার মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত হল বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভা। আর সেই সাধারণ সভায় পাশ হল সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব। সুপ্রিম কোর্ট নি়যুক্ত লোধা কমিটির সুপারিশের সারবত্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছিল। বিশেষ করে ‘কুলিং অফ’ আইন নিয়ে। লোধা কমিটির তৈরি সংবিধান অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা ও বিসিসিআইয়ের আধিকারিক হিসেবে তিন বছর করে পরপর দু’বার (মোট ছ’বছর) নির্বাচিত হন, তবে তাঁকে বাধ্যতামূলক ভাবে তিন বছরের জন্য ‘কুলিং অফে’ যেতে হবে। কিন্তু বোর্ডের বর্তমান কর্তারা চেয়েছিলেন, ‘কুলিং অফ’ শুরু হোক কোনও পদাধিকারী বোর্ড বা রাজ্য সংস্থায় একটানা ছ’বছর (তিন বছর করে দুটি পর্বে) কাজ করার পরে। এ দিনের সভায় সেই সাংবিধানিক পরিবর্তন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আর তা পাশও হয়ে যায় সর্বসম্মতিক্রমেই। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে সৌরভ বলেন, ‘সভায় প্রত্যাশিতভাবেই সংবিধান সংশোধনের বিল পাশ হয়েছে। তবে শেষ কথা বলবে সুপ্রিম কোর্টই। দেখা যাক কী হয়।’
লোধা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গঠিত আইন অনুযায়ী বোর্ডের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি সৌরভকে বিদায় নিতে হবে ৯ মাসের মধ্যে। অর্থাৎ আগামী বছরের জুনে। কারণ বোর্ড সভাপতি হওয়ার আগে তিনি ৫ বছর সিএবি সভাপতির পদে ছিলেন। রবিবারের বৈঠকে সেই নিয়ম পরিবর্তনের দিকে একধাপ এগিয়ে গেল বিসিসিআই। সভায় উপস্থিত প্রত্যেক প্রতিনিধিই এই নিয়ম সংশোধনের দাবিতে সম্মতি জানান। লোধা কমিটির আরোপিত আইন লঘু হলে নতুন দরজা খুলে যাবে সৌরভ গাঙ্গুলি, জয় শাহদের সামনে। এছাড়া ৭০ বছর ও তার বেশি বয়সের কোনও ব্যক্তি বোর্ড কিংবা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কোনও পদে থাকতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও নিয়ম সংশোধনের দাবি তোলা হয়েছে। তবে এই পরিবর্তনের জন্য অ্যাপেক্স কাউন্সিলের সম্মতি প্রয়োজন।
বিসিসিআইয়ের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমাল বলেন, ‘প্রস্তাবিত সমস্ত সংশোধনের বিলই সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছে। বিষয়গুলি সুপ্রিম কোর্ট এবং অ্যাপেক্স কাউন্সিলের কাছে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। প্রস্তাবিত সমস্ত সংশোধনীগুলি বোর্ডের কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তৈরি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদনের পরে এটি কেবলমাত্র অন্তর্ভুক্ত হবে।’ সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘আমরা ৭০ বছরের পুরোনো ধারা স্পর্শ করছি না। কুলিং অফের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, যদি কেউ রাজ্যে সংস্থা চালিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকেন, তবে কেন তাঁকে কুলিং অফ পিরিয়ডে যেতে হবে। ক্রিকেটের স্বার্থেই তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো উচিত। কারণ তিনি তো বিসিসিআইয়ের চেয়ারে বসেও অবদান রাখতে পারেন। আমরা এই সমস্ত যুক্তি সুপ্রিম কোর্টের সামনে তুলে ধরব। সত্যি বলতে কী, বেশ কিছু বিষয়ে আমরা বাস্তব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। আশা করি, আদালত আমাদের মতের সঙ্গে একমত হবে।’
গত অক্টোবরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের (সিওএ) শাসন শেষ হয়। এরপর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সৌরভ। ২৩ অক্টোবর ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ মসনদে বসেন তিনি। দায়িত্বভার গ্রহণ করেই বেশকিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন সৌরভ। ভারতের মাটিতে প্রথম দিন-রাতের টেস্ট নিশ্চিত করার পর তাকে গোলাপি প্রচারের মোড়কে উন্মাদনার এভারেস্টে পৌঁছে দেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। পাশাপাশি প্রমাণ করেন, ক্রিকেট পরিসরে কেন তিনি স্বপ্নের সওদাগর। তাই মূলত তাঁর উপর আস্থা দেখিয়েই লোধা কমিটির সুপারিশকে কুলিং অফে পাঠাল বোর্ডের সর্বভারতীয় প্রতিনিধিরা।
এছাড়া রবিবারের সভায় ঠিক হয়েছে যে, আইসিসি’র আসন্ন চিফ এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন বোর্ড সচিব জয় শাহ। একই সঙ্গে ঠিক হয়েছে যে, বোর্ডে একজন নতুন ওম্বুডসম্যান এবং এথিক্স অফিসার নিয়োগ করা হবে। এতদিন এই দু’টি পদ সামলাচ্ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ডিকে জৈন। তাঁর মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়ে যাবে। পাশাপাশি ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে চুক্তিবৃদ্ধির বিষয়টিও নিশ্চিত হয়েছে এদিনের সভায়।