মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
মঙ্গলবার কোশিগ্রামের বাসিন্দা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ইন্দ্রজিৎ মাঝি ক্লাস শেষে জল খেতে যায় স্কুল চত্বরে। সে সময়ে কিছু একটা তার পায়ে কামড়ে দেয়। এরপর তাকে নিয়ে বেশ কয়েকজন সহপাঠী প্রধান শিক্ষকের কাছে যায়। সেখানে নাকি তার পায়ে ডেটল দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয়। তারপর ওই পড়ুয়াকে আবার ক্লাসে যেতে বলা হয়। সেইমতো পড়ুয়া আবার ক্লাসে চলে যায়। এরপর বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া সেরে বিকেলে গ্রামে টিউশন পড়তে যায়। সেখানে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবারের দাবি, বাড়ি ফেরার পরে ইন্দ্রজিৎ কথা বলতে পারছিল না। তারপর সন্ধ্যার দিকে কাটোয়া মহকুমা হাসতাপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বুধবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাসিন্দারা স্কুল ঘেরাও করে। অতঃপর কোশিগ্রাম ইউনিয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক পূর্ণেন্দু বন্দোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিস।
কোশিগ্রামের দিনমজুর পরিবারের ছেলে ইন্দ্রজিৎ মাঝি। বাবা কার্তিক মাঝি, মা টগর মাঝি। এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ভরা সংসার ছিল কার্তিকবাবুর। তাঁদের স্বপ্ন ছিল ছেলেটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করবেন। কিন্তু স্কুলে গিয়ে ছেলেটাকে হারানোর পর তাঁদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। শুক্রবার কার্তিকবাবু চোখে জল নিয়ে ছোট্ট ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করলেন। আর মা টগর দেবী তিনদিন ধরে নাওয়াখাওয়া বন্ধ করে ছেলের জন্য পুজোয় কেনা জামা আঁকড়ে ধরে শুয়ে রয়েছেন। বাড়িতে প্রতিবেশীরা ভিড় করেছেন। পাড়ার বাসিন্দা বাপি মাঝি বলেন, গ্রামে ২২টি ঠাকুর আসে। গ্রামজুড়ে উৎসবের মেজাজ। সব আলো নিভে গেল। আরেক বাসিন্দা মিঠুন মণ্ডল বলেন, মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করছি যাদের গাফিলতিতে ছেলেটার প্রাণ গেল তারা যেন শাস্তি পায়। সায়ন পাল ওই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সে বলে, আমরা সবাই মিলে এবার পরিকল্পনা করেছিলাম ননগরে বড় প্যান্ডেল হয়েছে, সেখানে ঠাকুর দেখতে যাব। কিন্তু এবার আর ঠাকুর দেখতে যাব না। ইন্দ্রজিৎকে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য ডাকতে যেতাম। বলেই সে ডুকরে কেঁদে উঠল। উৎসবের আলোয় যেন আঁধার নামল কাটোয়ার কোশিগ্রামে।