কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ
চিল্কিগড়ের সামন্ত রাজা গোপীনাথ মত্তগজ সিংহ এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে রানির হাতের কাঁকন দিয়ে দেবীমূর্তি তৈরি করা হয়। তাই দেবীর নাম ‘কনকদুর্গা’। স্বপ্নে পাওয়া দেবী চতুর্ভুজা, অশ্ববাহিনী। দেবীর উপরের বাম হস্তে খর্পর, নীচের হাতে থাকে অশ্বের লাগাম। উপরের দক্ষিণ হস্তে খড়গ, নীচের হাতে বরাভয় মুদ্রা। ডুলুং নদীর পাশে জঙ্গলের ভিতর মন্দির করে দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সারা বছর ধরে মন্দিরে দেবীর নিত্যপুজো হয়। তাছাড়া অকালবোধনের চারদিন ধুমধাম করে পুজো হয়। বর্তমানে অষ্টধাতুর অশ্ববাহিনী দেবীকে ছাগবলি দেওয়া হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, জাগ্ৰত এই দেবী সব বিপদ থেকে ভক্তদের রক্ষা করেন। শোনা যায়, রাজা গোপীনাথ সিংহ ও তাঁর পাটরানি গোবিন্দমণির একমাত্র কন্যা সুবর্ণমণির সঙ্গে ধলভূম পরগনার সপ্তম জগন্নাথ দেও ধবলদেবের সঙ্গে বিবাহ হয়। তাঁদের জেষ্ঠ্যপুত্র কমলাকান্ত দেও ধবলদেব পরবর্তীতে চিল্কিগড়ের রাজা হন। বংশের নিয়ম মেনে তাঁর বংশধররাই এই পুজো করে আসছেন। পরিবারের উত্তরসুরী তেজসচন্দ্র দেও ধবলদেব বলেন, কয়েক শতাব্দী ধরে দেবী কনকদুর্গার পুজো হয়ে আসছে। ষষ্ঠীর দিন রাজ পরিবারের তরোয়াল রাজ পুরোহিতকে অর্পণ করা হয় এবং পুজো করার অনুমতি দেওয়া হয়। বংশের প্রথা মেনে সেই তরোয়াল মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়ম আচার মেনে পুজোর শুরু হয়। ওড়িশা থেকে আসা রামচন্দ্র ষড়ঙ্গী নামে এক ব্রাহ্মণকে পুজোর ভার দেওয়া হয়েছিল। এখনও তাঁর বংশধররাই দেবীর পুজো করেন। ষষ্ঠী থেকেই এই পুজো শুরু হয়ে যায়। সপ্তমীর দিন সকালে ডুলুং নদীতে পুজোর ঘট ভরা হয়। অষ্টমীর রাতে জঙ্গলে বিশেষ নিশিপুজো হয়। পুজোর চারদিন দেবীকে হাঁসের ডিমের ভোগ দেওয়া হয়। দশমীর দিন পোড়া মাছ, শাক ও পান্তাভাত নিবেদন করা হয়। মন্দিরের পুরোহিত আতঙ্কভঞ্জ ষড়ঙ্গী বলেন, বংশপরম্পরায় আমরা এই পুজো করে আসছি। পাঁচশো বছর ধরে চলা এই পুজোর রীতি ও প্রথার কোনও পরিবর্তন হয়নি। চতুর্ভুজা দেবী ভক্তদের সব বিপদ থেকে রক্ষা করেন। আমাদের বিশ্বাস, জাগ্ৰত এই দেবী অষ্টমীর ভোগ নিজেই রান্না করেন। স্থানীয় বাসিন্দা সত্যেন নারায়ণ দেও বলেন, আমাদের এই দেবী খুবই জাগ্ৰত। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। নবমীর দিন ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়।