কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা চাঁচল: নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছিল চাঁচলের একটি নার্সিংহোম। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে নার্সিংহোম সিল করে দিল প্রশাসন। এনিয়ে মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যাবে না।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি চাঁচলের ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্য সচিব থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে চিঠি পাঠানো হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ওই নার্সিংহোম পরিদর্শনে যায় প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের বিশেষ নজরদারি দল। এতে তাদের চোখে একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ে।
প্রথমত, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও লাইসেন্স নেই। দেখা যায় ছ’মাস আগেই লাইসেন্সের মেয়াদ ফুরিয়েছে। কিন্তু তারা লাইসেন্স রিনিউয়ালের জন্য আবেদন করেনি। এনিয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা লাইসেন্স রিনিউয়ালের সময় পায়নি। এরপর তাদের কাছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমোদন চাওয়া হলে সেটাও দেখাতে পারেনি। তাদের কাছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কোনও ছাড়পত্র নেই। এমনকী নার্সিংহোমের ব্যবহৃত সামগ্রী অপসারণের জন্য যে নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকার কথা সেই নিয়মও এক্ষেত্রে লঙ্ঘন করা হয়েছে। এমনকী রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ, রক্তমাখা তুলো অপারেশন থিয়েটারের এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। অস্ত্রোপচারে একবার ব্যবহৃত সার্জিকাল গ্লাভস ধুয়ে দ্বিতীয়বার ব্যবহারের জন্য শুকোতে দেওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে নার্সিংহোমে কোনও আরএমও (রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার) নেই। শুধু তাই নয়, স্টোর ও অপারেশন থিয়েটারে থাকা সমস্ত ওষুধই মেয়াদ উত্তীর্ণ।
এছাড়াও এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে জন্মের পর সময়মতো শিশুর জন্মের শংসাপত্র না দেওয়া, অপারেশনের আগে শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা না করা এবং ১০টির কথা বলে ১২টি শয্যা ব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেছেন পরিদর্শনে যাওয়া প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। মালদহ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, তারা ভেবেই নিয়েছে যখন ইচ্ছে লাইসেন্স রিনিউ করালেই হবে। এমনকী বায়ো মেডিক্যাল চুক্তিটাও নেই তাদের কাছে। আপাতত নার্সিংহোম বন্ধের নোটিস জারি করা হয়েছে। পুলিস প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, আপাতত নার্সিংহোমটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে শুনানির জন্য জেলা প্রশাসনিক কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে। - নিজস্ব চিত্র