নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: একটা সময়ে দেশের চারটি রাজ্যে ফুটবল নিয়ে ছিল আকচাআকচি। এরা হল যথাক্রমে বাংলা, কেরল, গোয়া ও পাঞ্জাব। সেই ১৯৯৬-৯৭ থেকে হচ্ছে জাতীয় লিগ। ২০০৭-০৮ সাল থেকে যা নতুন মোড়কে আই লিগ হিসেবে পরিচিত। গত ২৩ বছরে বাংলা, গোয়ার একাধিক দল জাতীয় লিগ কিংবা আই লিগ জিতেছে। ক্লাব ফুটবলে ‘পাঞ্জাবের মুখ’ জেসিটি যা পারেনি তা কয়েক বছর আগে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মিনার্ভা পাঞ্জাব এফসি। কিন্তু কেরলের কোনও দল আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ১৯৯৭-৯৮ সালে এফসি কোচিন দারুণ প্রত্যাশা জাগালেও শেষ পর্বে বাজিমাত করেছিল চাটুনির প্রশিক্ষণাধীন মোহন বাগান। গত বছর চেন্নাই সিটি এফসি’ও হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। তাই এবার যেন মরশুমের প্রথম থেকেই তেতে আছেন গোকুলাম কেরল এফসি’র কর্তারা। তাঁরা চাইছেন, প্রথমবার আই লিগ আসুক কেরলে। তাই এবার মরশুমের শুরু থেকেই কলকাতার দুই প্রধান আর রিয়াল কাশ্মীরের মতো সাজিয়ে গুছিয়ে দল গড়া হয়েছে। গত বছর মোহন বাগানে খেলা হেনরি কিসেকাকে ফিরিয়ে নিয়েছে তারা। এটিকে যেমন পুরানো কোচ হাবাসকে এই বছর ফিরিয়ে এনেছে, ঠিক সেভাবেই দু’বছর আগে গোকুলাম কেরলে কোচিং করানো ফার্নান্দো সান্তিয়াগো ভালেরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তিনিই দায়িত্ব নিয়েই মার্কাস জোশেফকে তৈরি করেছেন। ত্রিনিদাদ-টোবাগোর স্ট্রাইকারটি গত বছর ফিফার সেকেন্ড উইন্ডোতে আসেন ভারতে। ডুরান্ড ফাইনালে তাঁর আগুনেই পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল মোহন বাগান। সবুজ-মেরুন কর্তাদের আনা ত্রিনিদাদ-টোবাগোর স্টপার ড্যানিয়েল সাইরাস যতটাই ফ্লপ, মার্কাস ততটাই হিট। স্টপারে বড় চেহারার আন্দ্রে ডেনিস ডুরান্ড কাপের ফাইনালে বেইতিয়াকে নড়তে দেননি। এবার গোকুলামে মার্কাস-হেনরি কম্বিনেশন কতটা কার্যকরী হবে তা নির্ভর করছে মাঝমাঠে মহম্মদ রশিদ, জাস্টিন জর্জ, মহম্মদ ইরশাদের উপর।
আগামী শনিবার গোকুলাম এফসি ঘরের মাঠে মুখোমুখি হবে নেরোকার। হংকংয়ের একটি সংস্থাকে স্পনসর হিসাবে পাওয়ার পর শেষ মুহূর্তে নেরোকার শীর্ষ কর্তা অরুণ থঙ্গসই খোঁজাখুঁজি করে ছ’জন ফ্রি থাকা বিদেশিদের সই করিয়েছেন। অরুণের সংস্থা এবার সহকারী স্পনসর। এই ছ’জনের মধ্যে স্যামসন আর দিয়ারা প্র্যাকটিসে চোখ টেনেছেন। মাঝমাঠে আছেন টোগোর কাওয়ামি। তাই প্রথম ম্যাচে গোকুলাম এফসি বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। নেরোকার সুশীল মিতেই এবং সিয়াম হাঙ্গল ভারতীয় ব্রিগেডের প্রধান মুখ।
অনূর্ধ্ব-২২ কোটা তুলে দিল এআইএফএফ: এবারের আই লিগে অনূর্ধ্ব-২২ কোটা উঠে গিয়েছে। উঠতি ফুটবলারদের তুলে আনার জন্য গত তিন বছর একজন অনূর্ধ্ব-২২ ফুটবলারকে সারা ম্যাচেই মাঠে রাখতে হত। কোনও অনূর্ধ্ব-২২ খেলোয়াড়ের পরিবর্তে ওই এজ গ্রুপের ফুটবলারই নামাতে হত। কলকাতার দুই প্রধান এই নিয়মকে মাথায় রেখে দলে চারজনকে করে অনূর্ধ্ব-২২ খেলোয়াড় রেখেছিল। তাই এই কোটা উঠে যাওয়ায় দুই প্রধানের ক্ষতি অন্য দলগুলির তুলনায় অনেক বেশি হল।