দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
তবে ময়দানে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, সিএবি’র সভাপতি হওয়ার দৌড়ে সৌরভ গাঙ্গুলির দাদা স্নেহাশিসও রয়েছেন। বিরোধী গোষ্ঠীর কিছু কর্তা নাকি তাঁর সঙ্গেও তলেতলে যোগাযোগ রাখছেন। লোধা কমিটির প্রস্তাবে তৈরি হওয়া নতুন সংবিধান মেনে গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত সিএবি’র নির্বাচনেও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা শোনা গিয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন স্নেহাশিস। এমনও শোনা যায়, একই পরিবারের তিন জনকে সিএবি’র পদাধিকারী হিসাবে চাননি সৌরভ। তাঁর কাকা দেবাশিস গাঙ্গুলি বর্তমানে সিএবি’র কোষাধ্যক্ষ পদ সামলাচ্ছেন। কিন্তু সৌরভ গাঙ্গুলি ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে বসার পর নিয়ম মেনে তাঁকে সিএবি’র সভাপতি পদ ছাড়তে হয়েছে। আইনে বলা আছে, সভাপতির পদত্যাগের পর দু’মাসের মধ্যে নির্বাচন করাতে হবে। তাই সিএবি’র সভাপতি পদে নির্বাচন হবে ডিসেম্বরে।
সৌরভ বিসিসিআই সভাপতি হয়ে যাওয়ায় স্নেহাশিসের বঙ্গীয় ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার বড় পদ পেতে আর কোনও অসুবিধা নেই। অভিষেক ডালমিয়া যদি সভাপতি হন, তাহলে স্নেহাশিসকে সচিব করা হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রবীর চক্রবর্তীরও নাম শোনা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, স্নেহাশিস সচিব নয়, সভাপতি হতে চান। শাসকগোষ্ঠীর এক কর্তার দাবি, বিরোধীরা স্নেহাশিসকে ইন্ধন জোগাচ্ছে। যাতে সিএবি’র সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করাই তাদের উদ্দেশ্য। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে সৌরভ গাঙ্গুলির উপর। সিএবি’র কোনও পদে না থাকলেও বঙ্গীয় ক্রিকেটের রিমোট কন্ট্রোল কিন্তু ব-কলমে এখনও তাঁরই হাতে। সেটা তিনি গোলাপি টেস্ট আয়োজনের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল, দাদা স্নেহাশিসকে কি সভাপতি পদে সমর্থন করবেন সৌরভ?
মহারাজ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ‘কেউ চাইলেই তো হবে না। সভাপতি কে হবে, সেটা ঠিক করবেন সিএবি’র সদস্যরা। যদিও আমি এখন সিএবি’তে নেই। আমার পক্ষে কিছু বলাও সম্ভব নয়।’
ঘণ্টার পর ঘণ্টা শ্যুটিং, বিজনেস মিট, বাংলার ক্রিকেটের উন্নতি নিয়ে পরিকল্পনা রূপায়ণ তো ছিলই। বোর্ড সভাপতি হওয়ার পর সৌরভ গাঙ্গুলির দায়িত্ব যেমন বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে আরও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। আজ মুম্বই তো কাল তিনি বেঙ্গালুরু ছুটছেন মিটিং করতে। হবে নাই বা কেন? আর যাই হোক তিনি যে এখন বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি। বিরাট কোহলিদের ‘অভিভাবক’। তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও পিতার কর্তব্য পালনে একটুও ঢিলেমি দিতে নারাজ মহারাজ। মেয়ে সানার প্রতিটি আবদার তিনি মেটানোর চেষ্টা করেন। বিদেশে পড়তে চায় সৌরভ-কন্যা। অক্সফোর্ড এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনে ইকনমিক্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষাও দিয়েছেন সানা। মেয়ের রেজাল্ট নিয়ে একটু উদ্বিগ্ন সৌরভ বললেন, ‘সানা বিদেশে পড়াশোনা করতে চায়। বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষাও দিয়েছে। রেজাল্ট এখনও বেরোয়নি। দেখা যাক কী হয়।’
বাইশগজের বাইরেও সমান বিচরণ মহারাজের। ক্যুইজ ভিত্তিক টেলিভিশন শো দাদাগিরি’র অ্যাঙ্কর হিসাবে জনপ্রিয়তার শিখর ছুঁয়েছেন সৌরভ। তাই দাদাগিরির শো’য়ের সঙ্গে সম্পর্ক এত সহজে ছিন্ন করতে চান না তিনি। বোর্ড সভাপতি হয়ে শহরে ফেরার পরেই শ্যুটিং সেরেছেন। কতদিন দাদাগিরি শো করবেন? মুচকি হেসে সৌরভের সটান জবাব, ‘বাংলার মানুষ যতদিন চাইবেন।’
এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তার নিরিখে বাংলার সেরা দুই ব্যক্তিত্বের মধ্যে একজন যদি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, তাহলে দ্বিতীয় জন অবশ্যই সৌরভ গাঙ্গুলি। বাংলার মানুষ বিগত কয়েক বছর ধরেই দাদা-দিদির যুগলবন্দি দেখছে। তবে বোর্ড সভাপতি নির্বাচনে বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে মহারাজের সাক্ষাৎকার ঘিরে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নিন্দুকদের জবাব দিতে স্টেপ আউট করে চালিয়ে খেলেন সৌরভ, ‘আমার বোর্ড সভাপতি হওয়ার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও তো আপনার খুব ভালো সম্পর্ক... প্রশ্নটা লুফে নিয়েই মহারাজকীয় স্টাইলে সৌরভ বলেন, ‘উনি তো দিদি। কোনও কাজ নিয়ে গেলে ফিরিয়ে দেন না। ওনার সাহায্য ছাড়া এত সুন্দর ও সফলভাবে কি গোলাপি টেস্ট সম্পন্ন হত?’ অনেকে বলেন, বাংলার তো দু’টো মুখ, দিদি আর দাদা। হাসতে হাসতে সৌরভের জবাব, ‘দাদার দিদি, দিদির দাদা।’